পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম ভারতের তাজমহল। কিন্তু হেরিটেজের তকমা পেলেও তাজমহলের অস্তিত্ব মাঝেমধ্যেই বিপন্ন হয়ে পড়ে। যেমনটা ঘটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও। আশঙ্কা করা গিয়েছিল, হয়তো ভেঙে পড়তে পারে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আমলে তৈরি এই স্থাপত্য। কীভাবে রেহাই পেয়েছিল তাজমহল? শুনে নিন।
প্রিয়তমা পত্নী মমতাজ মহলের মৃত্যুর পর মুঘল সম্রাট শাহজাহান চেয়েছিলেন, বেগমের সমাধিমন্দিরের মধ্যেই অক্ষয় হয়ে থাকবে তাঁদের প্রেম। সেইজন্যই যে কোনও সমাধির মতো নয়, নিখুঁত সুন্দর এক স্থাপত্যের মতো করে নির্মাণ করা হয়েছিল যমুনা নদীর পারে দাঁড়ানো তাজমহলকে। এত শতাব্দী কেটে যাওয়ার পরেও তার সৌন্দর্য অটুট রয়ে গিয়েছে। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের তালিকাতেও সগৌরবে স্থান করে নিয়েছে সে। অথচ, এ-ও কম আশ্চর্যের কথা নয় যে, এই অপূর্ব স্থাপত্যটি ধ্বংস হয়ে যাবে এমন আশঙ্কা দেখা দেয় বারবার। কখনও কোনও ধর্মীয় দলের তরফে দাবি ওঠে, তাজমহলের নিচে নাকি রয়েছে হিন্দু মন্দির। আবার কখনও যুদ্ধের আঁচ রেহাই দিতে চায় না ইতিহাসের এমন নিদর্শনটিকেও।
আরও শুনুন: দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয় ইঁদুরকে, দেশের কোথায় আছে এমন মন্দির?
সেই আশঙ্কাই দেখা দিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলেছিল দুনিয়া কাঁপিয়ে দেওয়া এই যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধের অন্যতম পক্ষ ইংল্যান্ড তখন এ দেশের শাসক। ফলে ভারতও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল অনিবার্যভাবেই। আর সেইজন্য জাপানি বোমা পড়ার ভয়ে একসময় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ। এদিকে নাগরিকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রশাসন চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন, বিশেষত তাজমহলের নিরাপত্তা নিয়েও।
আরও শুনুন: মুখে খাবার তোলেননি টানা ৭৬ বছর! এখনও রহস্যে মোড়া যোগী প্রহ্লাদের কাহিনি
অক্ষশক্তির বিমান থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে যাতে তাজমহলের কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে অভিনব এক উপায় অবলম্বন করেছিল সেকালের ব্রিটিশ শাসক। মনে রাখা ভাল, সেই সময়ে আকাশযুদ্ধে দিশা দেখায় একমাত্র কম্পাস। আধুনিক বিজ্ঞানের মতো ইন্টারনেটের সুবিধা দিয়ে দিকনির্দেশের কথা সেকালে ভাবাও যেত না। ছিল না উপগ্রহের মাধ্যমে কোনও অঞ্চলের ছবি তুলে আনার সুবিধাও। আর সেই সুযোগটাই নিয়েছিল ব্রিটিশরা। তাজমহলকে পুরোপুরি মুড়ে দেওয়া হয়েছিল বাঁশের খাঁচায়। যাতে উপর থেকে দেখলে তাজমহলের আকৃতি কোনোভাবেই বোঝা না যায়, মনে হয় অনেক বাঁশ স্তূপাকারে রাখা আছে।
বাকি অংশ শুনে নিন।