রামজন্মভূমিতে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা ঘিরে দেশে সাজো সাজো রব। স্রেফ মন্দির তৈরিতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর এই টাকার বেশিরভাগটাই অনুদান হিসেবে পাঠিয়েছেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মানুষজন। এমনকি তালিকায় রয়েছেন ভিক্ষুকরাও। রাম মন্দিরে অনুদান হিসেবে কত টাকা দান করলেন তাঁরা? আসুন শুনে নিই।
এঁদের অনেকেরই দিন চলে ভিক্ষার টাকায়। অথচ রাম মন্দির তৈরিতে দু-হাত উজাড় করে অনুদান দিতে দু-বার ভাবেননি। কথা বলছি দেশের কিছু ভিক্ষুক সম্পর্কে, যাঁরা রাম মন্দির নির্মাণে মোটা টাকা অনুদান হিসেবে দিয়েছেন। মন্দির উদ্বোধনের আবহে কে কত অনুদান পাঠাল, সেই তথ্য সামনে এনেছে রাম মন্দির কর্তৃপক্ষ। আর সেখানে ভিক্ষুকদের অবদান দেখে বেশ অবাক হয়েছেন অনেকেই।
আরও শুনুন: বাবা সোমনাথ মন্দিরের রূপকার, ছেলের নকশায় তৈরি হচ্ছে অযোধ্যার রাম মন্দির
দীর্ঘ আন্দোলনের পর মিলেছিল বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির অনুমতি। আর তারপর থেকেই রামজন্মভূমিতে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিকে নজর গোটা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। ২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়ে যায় মন্দির নির্মাণের কাজ। ভক্তদের অনুদানের সুবাদে ইতিমধ্যে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি অর্থ জমা পড়েছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টে। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, অনুদান হিসেবে প্রতি মাসে ১ কোটিরও বেশি টাকা জমা পড়েছে মন্দিরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কইয়েক মাস আগে তাঁরা হিসাব করে দেখেছিলেন, মোট ৩৫০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে স্রেফ অনুদান হিসেবেই। বর্তমানে সেই টাকা আরও বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। তবে এর মধ্যে দেশের ভিক্ষুকদের অবদানও নেহাতই কম নয়। ভিক্ষা করেই তাঁরা রাম মন্দিরের অনুদান বাক্সে জমা করেছেন কয়েক লক্ষ টাকা। কাশী-প্রয়াগরাজ অঞ্চলের প্রায় ৩০০ জন ভিক্ষুক মিলে জমা করেছেন মোটা সাড়ে চার লক্ষ টাকার অনুদান। খোদ আরএসএস এই টাকা সংগ্রহ করেছে তাঁদের থেকে। এই দান মন্দির কমিটিও বিশেষভাবে দেখছে। যাঁদের নিজেদের পেট চলে ভিক্ষার টাকায়, তাঁরাও রামের নামে দান করেছেন দেখে মুগ্ধ প্রায় সকলেই। জানা গিয়েছে, রাম মন্দির উদ্বোধনে ওই ভিক্ষুকরাও নিমন্ত্রিত থাকবেন। স্বচক্ষে রামলালার প্রতিষ্ঠা দর্শণ করবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন রাম মন্দির তৈরির জন্য দু-হাত উজার করে দান করেছেন। তাঁদেরও বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছে রাম মন্দির কমিটি। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, মন্দির তৈরির মোট খরচের হিসাব। প্রায় ১৮ হাজার কোটির বাজেট ঠিক হয়েছে মন্দির নির্মাণে। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও নজরকাড়া আয়োজনের পরিকল্পনা রেখেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
সব ঠিক থাকলে জানুয়ারির ২২ তারিখ রাম মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হবেন রামলালা। তার জন্য পুজো পাঠ অবশ্য শুরু হয়ে যাবে কয়েকদিন আগে থেকেই। কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি কার্যত উৎসবের চেহারা নেবে গোটা অযোধ্যা জুড়ে। মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠার দিন উপস্থিত থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদির। সেইসঙ্গে থাকবেন দেশ বিদেশের গণ্যমান্য অতিথিরাও। আপাতত সেই রাজকীয় অনুষ্ঠানেরই প্রহর গুনছে অযোধ্যাবাসী।