চাকরি খুঁজে দেওয়াই যাদের কাজ, এবার নাকি চাকরি থেকে ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিল তারাই। তাও এক দুজন নয়, ২২০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এক সংস্থা। বলাই বাহুল্য, এহেন নির্দেশের জেরে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কর্মীরা। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সাম্প্রতিক কালে অনেক সংস্থাতেই দেখা গিয়েছে বিপুল পরিমাণে ছাঁটাইয়ের ছবি। চাকরি হারানোর এই ট্রেন্ড ইঙ্গিত দিচ্ছে, কর্মহীনতার মহামারী যেন ক্রমশ গ্রাস করছে গোটা বিশ্বকেই। এই পরিস্থিতিতেই আশঙ্কার খবর শোনাল একটি সংস্থা। শিক্ষিত এবং বেকার তরুণ তরুণীদের চাকরি খুঁজে দেওয়াই কাজ ছিল ওই সংস্থাটির। কিন্তু এবার নিজেদেরই বিপুলসংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিল সেই সংস্থা। যা আরও একবার সামনে আনল কাজ হারানোর ভয়াবহ ছবিটি। পাশাপাশি এ কথাও একভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠল যে, নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও কমছে ক্রমশ। আর সে কারণেই কাজ হারাতে বাধ্য হচ্ছেন ওই সংস্থার কর্মীরা।
আরও শুনুন: ছোট হোক স্তনের আকার, আশায় সার্জারির দ্বারস্থ ১৫ হাজার ভারতীয় মহিলা, কেন এই প্রবণতা?
জানা গিয়েছে, ‘ইনডিড’ নামে ওই সংস্থার কাজ ছিল চাকরির খোঁজখবর দেওয়া। কিন্তু সম্প্রতি সেই কর্মসংস্থানের ওয়েবসাইট থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে, প্রায় ২২০০ কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। যা ওই সংস্থার মোট কর্মীসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ। কোভিড পরবর্তী সময়ে চাকরির বাজারে যে সংকট নেমে এসেছে, তার সঙ্গে সামাল দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও শুনুন: কাজ শেষ করতে অফিসেই কাটাতেন সারা রাত, সেই কর্মীকেও ছাঁটাই করল টুইটার
এই প্রথম নয়, এর আগে বারে বারেই বিশ্বের নামী সংস্থাগুলি থেকে বিপুলসংখ্যক ছাঁটাইয়ের খবর মিলেছে। এমনকি, এমনও অনেক কর্মীর চাকরি গিয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ আগের মাসেই সেরা কর্মীর পুরস্কার অর্জন করেছেন, কেউ আবার কাজ শেষ করার জন্য রাতভর থেকে গিয়েছেন অফিসেই। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই সারা বিশ্বে চাকরি হারিয়েছেন ১৭,৪০০ এরও বেশি প্রযুক্তি-কর্মী। অন্যদিকে এ বছর জানুয়ারি মাসে কাজ হারিয়েছেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বলা যায়, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১.১ লক্ষ মানুষ। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন, ‘দা এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বে নতুন কর্মসংস্থানের হার ছিল ২.৩ শতাংশ। চলতি বছরে তা নেমে এসেছে মাত্র ১ শতাংশে। একদিকে নতুন চাকরির সংখ্যা সেভাবে বৃদ্ধি না পাওয়া, অন্যদিকে অর্থনীতির ওঠানামার সঙ্গে তাল রাখতে সংস্থাগুলির ব্যয় সংকোচ, দুয়ের মাঝে পড়ে আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছেন কর্মী এবং কর্মহীন মানুষেরা। আর সেই ছবিকেই আরও একবার স্পষ্ট করে দিল এই ঘটনা।