অঝোরে কাঁদছেন এক মহিলা। পাশে দাঁড়িয়ে সমানে তাঁর চোখের মুছিয়ে দিচ্ছেন এক সুদর্শণ যুবক। এমন দৃশ্য দেখলে অনেকেই ভাববেন, ওঁরা প্রেমিক-প্রেমিকা। কিন্তু না, মহিলা ওই যুবককে ভালো করে চেনেনই না। তাহলে তাঁর চোখের জল মুছিয়ে দিচ্ছেন কেন ওই যুবক? আসুন শুনে নিই।
কাঁদলে মন হালকা হয়। এই পরামর্শ অনেকেই দিয়ে থাকেন। আর কাঁদার পর কেউ যদি যত্ন করে চোখের জল মুছিয়ে দেয়, তাহলে তো কথাই নেই। মন হালকা তো হবেই, সেইসঙ্গে খুশির জোয়ারও আসতে পারে।
কিন্তু যাঁদের সে সুযোগ নেই, তাঁরা কী করবেন? চিন্তা নেই, পয়সা দিলে এও মেলে।
আরও শুনুন: ম্যাচ দেখতে ভালো লাগছে না! স্টেডিয়ামের বাইরেই উদ্দাম যৌনতায় মাতলেন যুগল
ভাবছেন তো কীসের কথা বলছি?
এক কথায় বলতে গেলে চোখের জল মুছিয়ে দেওয়ার লোক। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। জাপানের এক সংস্থায় সম্প্রতি চালু করেছে এমনই পরিষেবা। আসলে কান্নার অনেক বিজ্ঞানসম্মত গুণ রয়েছে। মনোবিদরাও দুঃখের সময় কাঁদার পরামর্শ দেন। এতে মন হালকা হয়। তবে কান্নার সঙ্গে প্রেমেরও বিশেষ যোগ রয়েছে। রাধা-কৃষ্ণ প্রসঙ্গ টানলেও দেখা যাবে অভিমানী রাধার চোখের জল মুছিয়ে দিচ্ছেন কৃষ্ণ। সেই থেকে শুরু করে হালের তরুণ প্রেমিক-প্রেমিকার দল, সকলের কাছেই কান্নার আলাদা গুরুত্ব। সিনেমা সিরিয়ালেও এমনটা হামেশাই দেখা যায়। প্রেমিকা কষ্টে কাঁদছেন দেখে, তখনই তা মুছিয়ে দিতে ছুটলেন প্রেমিক। এর এতেই যেন আরও গভীর হল প্রেম। এসব কি আর টাকা দিয়ে মেলে?
অবশ্যই মেলে। জাপানের ওই সংস্থা তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। গোটা বিষয়টি জাপানি উদ্যোগপতি হিরোকি তেরাইয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। মূলত মেয়েরাই এক্ষেত্রে উপভোক্তা। অর্থাৎ মেয়েরা কাঁদলেই চোখের জল মোছাতে হাজির হবেন ঝকঝকে চেহারার পুরুষ। তিনি যে শুধু চোখের জল মুছিয়ে দেবেন তাই নয়, নিজেও খানিকক্ষণ কাঁদবেন। কাঁদতে কাঁদতে মহিলা যা বলবেন সব মন দিয়ে শুনবেন। কিচ্ছু না জেনে না বুঝেও তিনি এমন ভান করবেন, যেন ওই একইরকম দুঃখ তাঁরও হয়েছে। নিশ্চয়ই হিন্দি সিনেমার রুদালিদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ঠিক ধরেছেন, চোখের জল মোছাতে আসা এই যুবকরাও খানিকটা তেমনই। শুধু রুদালি-দেরডাকা হত কেউ মারা গেলে বা বিশেষ কোনও শোকে। এঁদের ডাকার জন্য তেমন কোনও কারণ নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ আপনার যেন কোনও মনখারাপের সঙ্গী হতেই এঁরা সদা প্রস্তুত।
আরও শুনুন: বড় পরিবার সুখী পরিবার! ১৯৯ জনের বাস একই বাড়িতে, অভিনব রেকর্ড গড়ল পরিবার
কিন্তু কোথায় মিলবে এই পরিষেবা?
গোটাটাই হবে অনলাইনে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও চোখের জল মোছানোর লোক পেতে এতটুকু ঝক্কি পোহাতেই হবে। প্রথমে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নাম ও ঠিকানা রেজিস্টার করতে হবে। তারপর সেখানে উল্লেখ করতে হবে কাঁদার সময়। তারপর টাকা দিলেই কাজ শেষ। ঠিক যে সময় আপনি কাঁদার জন্য বেছেছেন, তার খানিক আগেই বাড়িতে হাজির হবেন এক সুদর্শন যুবক। তবে এর জন্য খরচও হবে ভালোই। ভারতীয় মুদ্রায় অন্তত ১০-১৫ হাজার টাকা। তবু সংস্থার বিশ্বাস, এই টাকা খরচ করেও অনেকেই এই পরিষেবা নিতে চাইবেন। কারণ ব্যস্ততার এই যুগে মানুষের টাকা থাকলেও নেই মনখারাপের সঙ্গী। তাই অনেকেই এইভাবে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সঙ্গীর পূরণ করবেন বলেই ধারণা ওই সংস্থার।