জুয়ার নেশা যে সর্বনাশা, তা না কে জানে! আর সেই নেশার বশেই নিজের সর্বনাশ ডেকে আনলেন এক তরুণ। ভুলবশত তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকে পড়েছিল কোভিড খাতের সরকারি অর্থ। তবে সেসবই তিনি উড়িয়ে ফেললেন জুয়ায়। তারপর…? কী হল তারপর? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বয়সে চব্বিশের কোঠা পেরোলেও রুজিরোজগারের দিকে পা-ও বাড়াননি তিনি। বরং দিনরাত মজে থাকতেন জুয়ার নেশায়। পরিবারের লোকজনের হাজার বারণ, হাজার বকাঝকাতেও কাজের কাজ হয়নি। যা অর্থ মিলত, সবটাই তিনি উড়িয়ে দিতেন ওই জুয়ার নেশায়।
আরও শুনুন: বউ কেনার জন্য এই মেলায় যান যুবকেরা, মেয়েদের দরদাম করতে ডাকা হয় নিলামও
এ হেন নেশাগ্রস্তর অ্যাকাউন্টেই একবার ঢুকে পড়ল বড়সড় অঙ্কের অর্থ। জাপানের আবু এলাকার বাসিন্দা শো তাগুচি তো সেই অর্থ পেতে না পেতেই খরচ করে বসলেন জুয়ার পিছনে। জাপানি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই উড়িয়ে ফেলেছেন তাগুচি। গত দশদিনে অন্তত ৩৪ বার টাকা তুলেছেন তিনি তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে।
তবে শেষরক্ষা হল না। দশ দিন পেরোতে না পেরোতেই বাড়ির দরজায় এসে টোকা দিল পুলিশ। ততক্ষণে সে টাকা প্রায় শেষের পথে। খুব বেশি হলে অ্যাকাউন্টে তখনও বেঁচে রয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৪১ হাজার টাকার মতো। ততক্ষণে তাগুচির পরিবারও জেনে গিয়েছে, এই মোটা অঙ্ক আদৌ তাঁর ছেলের উপার্জন নয়। বরং সরকারি অর্থই ভুলবশত ঢুকে পড়েছিল তাঁর অ্যাকাউন্টে।
আরও শুনুন: সস্তায় দাঁতের ডাক্তার দেখাতে ৬ হাজার মাইল পাড়ি! হিসেবি দম্পতির কীর্তিতে অবাক নেটিজেনরা
ওই টাকা আদতে কোভিড অতিমারি তহবিলের টাকা। যা সেখানকার ৪৬৩টি পরিবারে সাহায্য হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল আবু প্রশাসনের। পরিবার প্রতি এক লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছিল সরকার। আর সেই টাকাই ভুল করে ঢুকে পড়ে তাগুচির অ্যাকাউন্টে। কোথা থেকে এত বড় অর্থ তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকল, সে নিয়ে বিন্দুমাত্র খোঁজখবর করেনি ওই যুবক। বরং আগুপিছু না ভেবে পুরো টাকাটাই সে উড়িয়ে দেয় জুয়ার পিছনে। পুলিশ তাঁর কাছ থেকে সেই অর্থ ফেরৎ চাইতেই স্বভাবতই মহা ফাঁপড়ে পড়ে সে। প্রখমে টাকা পাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পুলিশি জেরার মুখে পরে সে গোটা ব্যাপারটাই স্বীকার করে নিয়েছে। এমনকি অনলাইন একটি জুয়া সাইটে সেই অর্থ সে ব্যয় করেছে বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাগুচিকে গ্রেপ্তার করে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই সেই জুয়া সংস্থার দপ্তরেও হানা দিয়েছে তারা। মানুষের অর্থ মানুষকে ফিরিয়ে দিতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না জাপানের পুলিশ। আর তাগুচি? তার দিন আপাতত কাটছে শ্রীঘরেই।