পর্যটকদের জ্বালায় ভাঙছে পাহাড়ের শান্তি। তিতিবিরক্ত হয়ে এবার আস্ত পাহাড় ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জাপান। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতার কথা মনে আছে? পৃথিবী ধুলো কাদা ভরা বলে সেখানে চলতে ফিরতে পায়ে ধুলো লাগছে। রাজামশাই তাহলে কী করেন? এ প্রশ্নের জবাবে গোড়াতেই উত্তর এসেছিল, গোটা রাজ্যটাই তাহলে বরং ঢেকে দেওয়া হোক। প্রায় তেমনই এক সিদ্ধান্ত সম্প্রতি নিয়ে বসেছে জাপান। একটা গোটা পাহাড়কেই ঢেকে দিতে চায় সে দেশ। কিন্তু কেন? আসলে পর্যটকদের বাড়াবাড়ি কমাতেই এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান। সরাসরি পর্যটকদের আসায় নিষেধাজ্ঞা না টেনে তাদের আকর্ষণের জায়গাটিকেই আড়াল করতে চায় সূর্যোদয়ের দেশ। ঢেকে দিতে চায় মাউন্ট ফুজিকে।
আরও শুনুন:
‘অন্তঃসত্ত্বা’ কি কেবল মহিলাই হতে পারেন? লিঙ্গবাচক শব্দ মুছে মত জানাল সুপ্রিম কোর্ট
কিন্তু পর্যটকদের প্রতি এহেন বিরাগের কারণ কী! কোনও দেশের অর্থনীতি যে সে দেশের পর্যটন ব্যবসার উপর অনেকটা নির্ভর করে, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি জাপানের টাকার দাম ৩৪ বছরের মধ্যে রেকর্ড পড়ে গিয়েছিল। যার জেরে এ দেশে পর্যটন বেড়েছে আরও। আরেকদিকে এ কথাও সত্যি, যে, বেড়াতে যেতে কে না ভালোবাসে! তবে হ্যাঁ, আপনার সেই ভালোবাসা যাতে অন্যের অস্বস্তির কারণ না হয়, তাও তো দেখতে হবে। সত্যি বলতে, আজকাল সে বিষয়টিরই যেন বড্ড অভাব চোখে পড়ছে সর্বত্রই। দেশ হোক কি বিদেশ, কোনও ট্যুরিস্ট স্পটই এখন আর ফাঁকা থাকে না কোনও সময়ই। সবসময়ই সেখানে পর্যটকের ভিড়। আর শুধু ভিড় নয়, মানুষের ভিড় মানেই তার সঙ্গে জুড়ে যায় আরও অনেক কিছু। ছবি তোলা, রিল বানানোর ভিড়ে এখন পর্যটনস্থানগুলি সরগরম। সঙ্গে হইচই, কোলাহল। আবার কেউ খাবারের প্যাকেট কি টুকিটাকি বর্জ্য দিব্যি ফেলে দেন যেখানে সেখানে। অধিকাংশ শহরের রাস্তা যেমন নোংরা হয়ে থাকে, তেমনটাই অভ্যাস করে ফেলেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন:
ঠিক যেন প্রিয় মানুষ! ভালোবেসে জড়িয়ে ধরেন গাছকে, বিশ্বরেকর্ডও গড়লেন যুবক
কিন্তু এহেন অভ্যাস মেনে নিতে নিতান্তই নারাজ জাপান। জাপানবাসীদের অভিযোগ, বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরা নোংরা আবর্জনা ফেলে রাস্তা তো অপরিচ্ছন্ন করেনই, তার উপরে ট্রাফিকের নিয়মও মানেন না। আসলে ফুজি-কাওয়াগুচিকো শহর থেকে মাউন্ট ফুজির ধাপগুলির দুরন্ত ছবি মেলে। আর সেই ছবির লোভেই এখানে পর্যটকদের লাগাতার আনাগোনা চলতেই থাকে। কিন্তু তাঁদের বেপরোয়া ফুর্তির জেরেই প্রাণ ওষ্ঠাগত এলাকার বাসিন্দাদের। তাই আড়াই মিটার উঁচু পরদা টেনে এবার মাউন্ট ফুজির ওই ফোটো স্পটই ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশ।