কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে অনেকেই দর্শন সেরে আসেন বৈষ্ণোদেবীর। তবে সেই সফরে খরচ হয় ভালোই। তাই ইচ্ছা থাকলেও তীর্থযাত্রার সামর্থ্য থাকে না অনেকেরই। মাতারানি দর্শনে খরচের চিন্তা কমাতেই এবার বিশেষ পদক্ষেপ করল ভারতীয় রেল। কর্তৃপক্ষের দাবি, খুবই খরচে এবার বৈষ্ণোদেবী দর্শনের সুযোগ মিলবে। ঠিক কী ব্যবস্থা আনতে চলেছে ভারতীয় রেল? আসুন শুনে নিই।
দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ হোক বা চারধাম, ভারতীয় রেলের তরফে একাধিক বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। সেই তালিকাতেই এবার যোগ হতে চলেছে বৈষ্ণোদেবী। কাশ্মীরের নিকটবর্তী এই বিশেষ তীর্থে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময় ভিড় জমান ভক্তরা। যাত্রাপত অতীব দুর্গম। তবু ‘জয় মাতাদি’ ধ্বনিতে সারা রাস্তা মুখরিত করে তোলেন সকলে। কিন্তু সমস্যা বলতে খরচের।
আরও শুনুন: G-20 সম্মেলনে ভারতের খরচ ৪১০০ কোটি, অন্যান্য আয়োজক দেশের খরচ ছিল কত?
এমনিতেই কাশ্মীর ভ্রমণ যথেষ্ট ব্যয়বহুল। তার মধ্যে বৈষ্ণোদেবী দর্শনের ক্ষেত্রে আরও কিছু আনুষাঙ্গিক খরচ হয়। তাই ইচ্ছা থাকলেও এই তীর্থে পৌঁছানোর সাধ্য থাকে না অনেকেরই। সেই সমস্যা মেটাতেই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় রেল। সম্প্রতি ‘বৈষ্ণোদেবী ট্রাভেল প্যাকেজ’ নামে এক বিশেষ পরিষেবা চালু করতে চলেছে আইআর সিটিসি। জানা গিয়েছে, বিশেষ এই প্যাকেজে যাত্রীদের বৈষ্ণোদেবী ভ্রমণের সবটাই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। স্রেফ টাকা দিলেই কাজ শেষ। তারপর ট্রেনে করে পৌঁছানো, হোটেলে থাকা, বৈষ্ণোদেবীর দর্শন এবং ফিরে আসা সমস্ত ব্যবস্থাই করবে ভারতীয় রেল। এদিকে সেই খরচও সাধ্যের মধ্যেই হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
ঠিক কত টাকা লাগবে?
আরও শুনুন: রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠায় দেশ জুড়ে জ্বলবে প্রদীপ, ৫৫০ গ্রামে শৌর্য যাত্রার আয়োজন বজরং দলের
এই ধরনের প্যাকেজ ভ্রমণে দল বেঁধে গেলেই খরচের পরিমাণ কমে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, যদি ৪ জনের দল এই প্যাকেজ বুক করেন তবে জনপ্রতি ৬৭৯৫ টাকা করে দিতে হবে। যদি যাত্রী সংখ্যা দুজন হয়, তাহলে খরচ হবে জনপ্রতি ৭৮৫৫। তবে কেউ যদি একার জন্য এই প্যাকেজ বুক করেন, তবে ১০৩৯৫ টাকা দিতে হবে। অনেকেই মনে করছেন, ট্রেনের ভাড়া যোগ করে এই খরচ মোটেও বেশি নয়। তাও আবার স্লিপার কোচ নয়। বৈষ্ণোদেবী প্যাকেজে যাত্রীরা ভ্রমণ করবেন রাজধানী এক্সপ্রেসের থার্ড এসি কামরায়। সুতরাং যাত্রা যে খুব একটা কষ্টের হবে না, সে কথা বলাই বাহুল্য। তবে ট্রেনটি ছাড়বে দিল্লি ষ্টেশন থেকে। রেল সূত্রে খবর, রাত ৮:৪০ নাগাদ জম্মুর উদ্দেশে রওনা দেবে ট্রেন। পরদিন ভোর ৫টায় গন্তব্যে পৌঁছাবে ট্রেন। সেখান থেকে হোটেলে পৌঁছে সকালের জলখাবার। তারপর যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হবে বানগঙ্গায়। সেখান থেকে বৈষ্ণোদেবীর যাত্রা শুরু। তৃতীয় দিনে যাত্রীরা পৌঁছাবেন কাটরা-য়। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে মাতারানির দর্শন সারবেন ভক্তরা। তারপর আবার দিল্লিতে ফিরে আসা। এই কদিন যাত্রীদের থাকা খাওয়ার সব দায়িত্ব ভারতীয় রেলের। তবে ছোটদের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে। ১১ বছরের কমবয়সীদের দিতে হবে মাত্র ৬১৬০ টাকা। তাও তাদের যদি আলাদা বিছানা লাগে তবেই। বিছানার প্রয়োজন না হলে দিতে হবে স্রেফ ৫১৪৫ টাকা। রেলের দাবি আগামী দিনে এই প্যাকেজে উপকৃত হবেন অনেকেই। সাধ্যের মধ্যেই বৈষ্ণোদেবী ভ্রমণের সুযোগ পাবেন তারা। তাই এই বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে আশাবাদী ভারতীয় রেল।