লাড্ডু খেতে কে না পছন্দ করে! সোনার বরণ গোলাকার এই মিষ্টির চাহিদা কিন্তু ভুবনজোড়া। উৎসব হোক বা পার্বন, বাঙালি হোক বা অবাঙালি- যুগ যুগ ধরে স্বাদে,বর্ণে মাত করে এসেছে এই মিষ্টিটি। শুধু একটি মাত্র স্বাদে নয়, বাহারি স্বাদে বাহারি উপকরণে মেলে এই লাড্ডু। তা এই লাড্ডুর শুরুর কথা জানেন? কীভাবে তৈরি হল এই সুস্বাদু মোদক? লাড্ডুর ইতিহাস কিন্তু চমকে দেওয়ার মতোই। শুনে নিন।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতা বলে নয়, লাড্ডুর খ্যাতি কিন্তু গোটা ভারত জোড়া। কোথাও বোঁদের লাড্ডুর চাহিদা বেশি, তো কোথাও মুগের ডালের। কোথাও আবার ময়দা-চিনি আর ঘি সহযোগে বানানো লাড্ডুর কাটতি আকাশ-ছোঁয়া। উৎসব-পাব্বন থেকে শুরু করে যে কোনও অনুষ্ঠানে এই মিষ্টিটি কিন্তু পাত আলো করে থাকবেই থাকবে।
তবে এই মিষ্টিটির শুরু কী ভাবে জানলে চমকে উঠবেন আপনিও। তবে আর দেরি কেন, শুনে নেওয়া যাক সেই গল্প।
আরও শুনুন: প্রতি মিনিটে অর্ডার ১১৫ প্লেটের, চলতি বছরে দেশে রেকর্ড চাহিদা বিরিয়ানির
জানেন কি আয়ুর্বেদাচার্য সুশ্রুত তাঁর সময়ে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করতেন এই মিষ্টিটিকেই। লাড্ডু আবার ওষুধ হবে কী করে! ভাবছেন নিশ্চয়ই। হ্যাঁ, ব্যাপারটা অবাক করার মতো হলেও খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে অ্যান্টিসেপ্টিক ওষুধ হিসেবেই ব্যবহার করা হত লাড্ডুকে। মধু, তিল ও গুড় দিয়ে বানানো হত সেই লাড্ডু। এই প্রত্যেকটি উপাদানেরই রয়েছে বিশেষ আযুর্বেদিক গুণ। বিশেষ জীবাণুনাশক ক্ষমতা রয়েছে মধুর। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, বদহজম থেকে শুরু করে ঠান্ডা লাগার সমস্যা, অনেক কিছু নিরাময়ের ক্ষমতাই রয়েছে গুড় ও তিলের। এখনও পর্যন্ত বহু প্রত্যন্ত এলাকাতেই গর্ভবতী ও সদ্য মা হওয়া মহিলাদের ইমিউনিটি বাড়াতে লাড্ডু খেতে দেওয়ার রেওয়াজ আছে।
জানা গিয়েছে, মধু,তিল আর গুড় দিয়ে তৈরি লাড্ডুর মধ্যে নাকি আরও নানাবিধ গাছগাছড়া ও নানা রকম আয়ুর্বেদিক গুণ সম্পন্ন বীজ থেকে তৈরি ওষুধ মিশিয়ে দিতেন সুশ্রুত। যা নাকি কাজ করত অব্যর্থ ভাবে।
আরও শুনুন: Hilsa: ইলিশ মাছকে নাকি সেকালে ভাবা হত ‘নিরামিষ’! কেন জানেন?
পূর্ব ভারতের একটি উপকথা অনুসারে, এক আয়ুর্বেদিক বৈদ্যর এক চ্যালা নাকি একবার ভুল করে ওষুধের ফর্মুলাতে কয়েক ফোঁটা ঘি ঢেলে ফেলেছিলেন। পরে সেই মিশ্রনই ছোট ছোট গোলাকার আকারে পরিবেশন করেন ওষুধ হিসেবে। সেখান থেকেই লাড্ডুর প্রবর্তন।
চোল সাম্রাজ্যে সৌভাগ্যের চিহ্নস্বরূপ ছিল এই লাড্ডু। তাই যুদ্ধে যাওয়ার আগে সৈনিকদের সঙ্গে গুছিয়ে দেওয়া হত এই লাড্ডু। লাড্ডু অনেকদিন পর্যন্ত নষ্ট হয় না, সেটাও আরেকটা কারণ হতে পারে অবশ্য ।
কন্নড় সাহিত্যেও উল্লেখ রয়েছে এই মিষ্টিটির। বহু মন্দিরেও প্রসাদ হিসেবে মেলে এই লাড্ডু। এই বিশেষ মিষ্টিটি আবার পার্বতীপুত্র গণেশের বিশেষ পছন্দের। সে নিয়েও বহু গল্প প্রচলিত রয়েছে। ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে বিতড়ণ করা হয় এই মিষ্টিটিই।
বাকি অংশ শুনে নিন।