মানতে হবে দাবি। নাহলে ভোট দেবে না কেউ। নির্বাচনের আগে এমন পোস্টার পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও দাবি বেশ গুরুতর, কোথাও আবার একেবারেই সাধারণ। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চেন্নাইয়ের কাছে এক গ্রাম। সেখানে ৬২৩ দিন ধরে চলছে আন্দোলন। দাবি একটাই। চাষের জমি নষ্ট করে বিমানবন্দর তৈরি করা যাবে না। দাবি না মানলে বয়কট করা হবে ভোট। প্রায় একই ছবি উত্তরপ্রদেশেও। সেখানকার এক গ্রামে মোবাইল টাওয়ার নেই বললেই চলে। তাই তাঁদেরও দাবি অবিলম্বে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করুক সরকার। না হলে ভোট দিতে যাবেন না কোনও গ্রামবাসী। এভাবেই কেউ রাস্তা তৈরি, কেউ বা জলের সমস্যায় জেরবার। সকলেই মনে করছেন এসব নিয়ে সরব হওয়ার এটাই মোক্ষম সময়। কারণ সামনে নির্বাচন।
আরও শুনুন: আইন-কানুন নিয়ে সন্তুষ্ট যোগীরাজ্যের মুসলিমরা, ‘বিজেপিকে ভোট দেবেন?’ উত্তরে বললেন…
ভোট বড় বালাই। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে থাকা রাস্তা রাতারাতি ঝাঁ চকচকে নতুন হয়ে যায় ভোট এলে। সরকারি ভাতা একলাফে দ্বিগুণ হয়। যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে একেবারে দুয়ারে হাজির হন নেতা নেত্রীরা। কিন্তু ভোট মিটলেই সব আগের মতো। নতুন করে যতই সমস্যা আসুক, সমাধান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশ বাঁও জলে। তাই নিজেদের সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব নিজেরাই নিয়েছেন অনেকে। সুদূর চেন্নাই থেকে শুরু করে উত্তরপ্রেদশ, ভোটের আগে নিজেদের দাবি মেটানোর চেষ্টা শুরু করেছেন সকলেই।
আরও শুনুন: ভোটের দিনে ধর্মনিরপেক্ষ প্রার্থীকে ভোট দেওয়াই তীর্থযাত্রা? ইঙ্গিত ধর্মগুরুর
চেল্লাইয়ের কাছে এগানাপূরমের কথাই ধরা যাক। সেখানে এয়ারপোর্ট তৈরি পরিকল্পনা করেছে সরকার। কিন্তু এর জেরে গাছ কাটতে হবে বেশ কিছু। একইসঙ্গে চাষের জমিও নষ্ট হবে পাকাপাকিভাবে। এতেই বেজায় আপত্তি গ্রামবাসীর। তাঁরা খেটে খাওয়া মানুষ। এয়ারপোর্ট তৈরি হলে আহামরি কোনও সুবিধা হবে না বলেই মনে করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। বরং চাষের জমি নষ্ট হলে তাঁদের ক্ষতি হবে যথেষ্টই। বিশেষ করে এলাকার বহু ছেলে মেয়ে কোনও চাকরি না পেয়ে কৃষিকাজ পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাঁদের বড়সর ক্ষতি হবে বইকী! তাই তাঁরা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন। গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়ে একটা কালো বোর্ড। সেখানে বড় হরফে লেখা আন্দোলনের কারণ। আর সেইসঙ্গে আন্দলন কততম দিনে পড়ল, সেই হিসাব। কাট টু উত্তপ্রদেশ। দেশ যতই ডিজিটাল হোক, সে রাজ্যের কিছু গ্রামে মোবাইল টাওয়ার পর্যন্ত নেই। গ্রামে পৌঁছতে গেলেও পোহাতে হবে ঝক্কি। নেই কোনও সরাসরি রাস্তাও। তাই আসন্ন নির্বাচনে তাঁদের দাবি, নো নেট ওয়ার্ক, নো ভোট! এদিকে দেশের সব নাগরিক যেন ভোট দেয় সেই চেষ্টায় নানা কাজ করে চলেছে কমিশন। কিন্তু আসলে দেশের সবাই ভোত দেবেন কি না, সেটা নিশ্চিত করা বোধহয় কমিশনের হাতে নেই। তামিল নাড়ুর এরোড এও প্রায় একই অবস্থা। সেখানে ভোট বয়কটের দাবিতে একাধিক পোস্টার পড়েছে। এলাকার এক রাস্তা জবর দখল হয়ে গিয়েছে, সেটা ঠিক করতেই তাঁদের এই আন্দোলন। এভাবে কেউ জলের সমস্যা, কেউ বা রাস্তা তৈরি সমস্যা নিয়ে ভোট বয়কটের দাবি তুলেছে। সবমিলিয়ে দাবি আদায়ে নির্বাচন বয়কট-কেই ব্রহ্মাস্ত্র বানিয়েছেন দেশের জনতা।