কথায় বলে, লাখ কথা না হলে নাকি বিয়ে হয় না। কিন্তু সব কথার শেষে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছে গেলেও বিয়েটা শেষমেশ হয়ে উঠবে কি না, বলা মুশকিল। কারণে বা অকারণে নয়, উদ্ভট কারণে বিয়ে ভাঙার নজিরও কিন্তু কম নেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক তেমনই কিছু ঘটনার কথা।
বিয়ে তো কত কারণেই ভাঙে! দুর্ভাগ্যজনক হলেও তা সত্যি। এমনকী আমাদের সিনেমাতেও পড়েছে সেই ছাপ। এই যেমন ‘বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া’ ছবির কথাই ভাবুন। সেখানেও নায়ক বদ্রীর বিয়ে ভেস্তে গিয়েছিল, কেননা বিয়েটা সেরে ফেলার আগের মুহূর্তে তার ‘দুলহন’-এর ‘দিল’ অন্য কথা বলেছিল। বলেছিল, এক্ষুনি সংসারের সাত পাকে ঢুকে পড়ার আগে নিজের স্বপ্নের পথটায় হেঁটে দেখা উচিত তার। আর সেই কারণেই তখন চলে গিয়েছিল নায়িকা অর্থাৎ বৈদেহী। ‘হাসি তো ফাসি’ সিনেমার গল্পটা আবার উলটো। নিজের স্বপ্নকে খ্যাপার মতো তাড়া করে চলেছে যে মেয়েটি, তাকে ভালবেসে বিয়ের পিঁড়ি থেকে উঠে এসেছিল নিখিল।
এখন, এ সবই তো যুক্তিসঙ্গত কারণ। রুপোলি দুনিয়া সবসময় ‘লার্জার দ্যান লাইফ’-এর গল্প বোনে, তবে এই ক্ষেত্রে অন্তত সে একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো যুক্তি সাজায়নি। উওলটোদিকে বরং বাস্তব দুনিয়াতেই এমন একাধিক বিয়ে ভাঙার ঘটনা দেখা গিয়েছে, যার পিছনে কোনও যুক্তি আপনি মাথা খুঁড়েও বের করতে পারবেন না। আবার কোনও কোনও কারণ বিশ্বাস করতেই রীতিমতো কষ্ট হবে আপনার।
আরও শুনুন: জেসিবি চড়ে বিয়ের আসরে বর, আশ্চর্য বাহনে সামিল বরযাত্রীরাও
যেমন ধরুন, পূর্ণিয়ার একটি বিয়েবাড়িতে বরযাত্রীদের খাবার দিতে দেরি হয়েছিল বলে খেপে ওঠেন পাত্রের বাবা। আর বাবার রাগ দেখেই বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পিতৃভক্ত ছেলে।
খাবারের কারণে বিয়ে ভেঙে দিয়েছিল ২৭ বছরের রমাকান্ত পাত্রও। বউয়ের চেয়ে পাঁঠার মাংস তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলাই বাহুল্য। কারণ বিয়ের সব নিয়মকানুন মিটে যাওয়ার পরেও কেবল ভোজে পাঁঠার মাংস নেই বলেই রেগে আগুন হয়ে যায় বরপক্ষ। তুমুল তর্কবিতর্কের পরে বিয়েটাকেই নাকচ করে দেয় বর।
বরপক্ষের তরফ থেকে তুচ্ছ কারণে বিয়ে ভাঙার ঘটনা যদিও নতুন কিছু নয়। তবে কনেরাও এখন পিছিয়ে নেই। বেশ অদ্ভুত অদ্ভুত কারণে বিয়ে ভেঙেছেন তাঁরাও। যেমন মনে করা যাক উত্তরপ্রদেশের সেই ঘটনাটির কথা। মালাবদলের সময় বর সাদরে মালাটি কনের গলায় পরিয়ে দেননি, বরং প্রায় ছুঁড়েই দিয়েছেন, এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন কনে। রেগেমেগে বিয়েই ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশেরই আরেক কনে বিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন, কারণ দেখা গিয়েছিল বর দুয়ের ঘরের নামতা অব্দি ঠিকমতো জানেন না। উত্তরপ্রদেশেরই আরেক বরের ভাগ্য আবার অন্যরকম। তিনি রীতিমতো শিক্ষিত, কিন্তু চশমা ছাড়া খবরের কাগজ পড়তে গিয়েই কেলেংকারিটি করে বসলেন তিনি। দেখা গেল, তাঁর দৃষ্টিশক্তি এতই কম যে তিনি চশমা ছাড়া কোনও কিছু পড়তে পারেন না। ব্যস, এই কারণেই বিয়ে ভেঙে দিলেন কনে।
আরও শুনুন: ছিল গাড়ি, হয়ে গেল হেলিকপ্টার! বিয়ের বাজারে সুপারহিট তরুণের অভিনব আবিষ্কার
তিন কনের বিয়ে ভাঙার ঘটনাগুলি আপাতদৃষ্টিতে বেশ উদ্ভট দেখায় বটে। তবে সবগুলিই যে অকারণে, তা কিন্তু বলা যায় না। কিন্তু নিছক খাবারের ছুতোয় বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনা দেখে হাসি পাবে নাকি কান্না, সে কথা ঠিক করাও মুশকিল। তবে আজকের সময়ে দাঁড়িয়েও যে এরকম ঘটনা ঘটছে, তারই ফলশ্রুতিতে হয়তো বিয়ে নামক ব্যাপারটিকেই অনেকখানি খেলো হয়ে যাচ্ছে, অন্তত আধুনিক প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে তো বটেই।