এক তরুণীর নগ্ন ছবি ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ কেউ ছড়িয়ে দিতে চাইছে নেটদুনিয়ায়। তা নিয়ে ঝড় উঠেছে সমালোচনার। কিন্তু ‘অপরাধী’কে চিহ্নিত করেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। নেপথ্যে কী কারণ? আসুন শুনে নিই।
সুশ্রী এক তরুণীর ছবি ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিশেষ এক প্ল্যাটফর্মে। জানা গিয়েছে তরুণীর বয়স ১৯। পরনে কালো পোশাক। একটি সেলফি তুলে তিনি পোস্ট করেছেন। অপর একটি ছবিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে কেবলমাত্র অন্তর্বাস পরা অবস্থায়। কালো অন্তর্বাস আর সুন্দর মুখশ্রীতে অনেকেরই নজর কেড়েছেন এই তরুণী। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। যে প্রোফাইল থেকে এই ছবি দুটি পোস্ট হয়েছে, সেই প্রোফাইলের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তি জানান দিচ্ছে, চাইলেই এই তরুণীর নগ্ন ছবি পাঠানো হবে নেটিজেনদের মেসেঞ্জারে। কেউ আগ্রহী হয়ে জানালে নিজের প্রোফাইলের মেসেজ-বক্সে পেয়ে যাবেন তরুণীর নগ্ন ছবি। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত ভাবেই তরুণীর নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দিতে চাইছেন কেউ একজন বা কয়েকজন। সে-প্রোফাইল সামনে থাকা সত্ত্বেও ‘অপরাধ’ সাব্যস্ত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
আরও শুনুন: গরিব হলেন ধনকুবের! AI-এর কারসাজিতে ‘বিপ্লব’ নেটদুনিয়ায়
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই মুহূর্তে শাঁখের করাতেই পড়েছে নেটদুনিয়া। আসলে অনেক খুঁজেও ওই তরুণীর কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, তরুণীর নাম ক্লদিয়া। কিন্তু তিনি কোন দেশের বাসিন্দা সে তথ্য কারোর কাছেই নেই। এমনকী তাঁর নগ্ন ছবি যে ছড়াচ্ছে, তাতে তিনি আপত্তিও জানাতে পারেননি। কেননা আপত্তি জানানো সম্ভবই নয়। কারণ, বাস্তবে এই তরুণীর কোনও অস্তিত্বই নেই। আসলে ক্লদিয়া নামের এই তরুণীকে তৈরি করেছেন প্রযুক্তিবিদরা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ক্লদিয়ার ছবি সামনে আসা মাত্র অনেকেই আকৃষ্ট হয়েছেন। আবার নগ্ন ছবির ইশারায় সেই আকর্ষণ বেড়েছে শত গুণ। কিন্তু বাস্তবে এরকম কোনও তরুণী নেই। কোন সংস্থার তরফে এই তরুণীর ছবি তৈরি করা হয়েছে, তা অবশ্য চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে এআই-কে কাজে লাগিয়ে যদি এরকম কোনও কাজ করা হয়, তবে সেক্ষেত্রে কী করণীয় তা নিয়েই জেগেছে ধন্দ। প্রশ্ন উঠেছে নৈতিকতার।
আরও শুনুন: চাই ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন সঙ্গম, দুই বান্ধবীর যৌন-চ্যালেঞ্জে রাজি হয়ে কী হাল যুবকের?
ইতিমধ্যে এআই-এর মাধ্যমে তৈরি নানা ধরনের ছবি ঝড় তুলেছে নেটদুনিয়ায়। পৃথিবীর তাবড় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা সেলফি তুলছেন এরকম কয়েকটি ছবি নিয়ে আলোচনা চলেছিল। পবর্তী সময়ে দেখা যায়, এআই-এর মাধ্যমে ধনকুবেররা গরিব হলে কীরকম হবেন, তা কল্পনা করেছেন কেউ কেউ। সে ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এই তালিকাতেই সাম্প্রতিক সংযোজন হল ক্লদিয়ার ছবি। একদিকে এই তরুণীর মাধ্যমে নেটিজেনদের নগ্ন ছবির প্রতি ঝোঁক চিহ্নিত হচ্ছে। কেননা ইতিমধ্যেই অনেকে ক্লদিয়ার নগ্ন ছবি পেতে অর্থমূল্য দিতেও রাজি হয়েছেন। এই প্রবণতা উদ্বেগের বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা অনেকেরই মত, এই অভ্যাস যদি চলতে থাকে, তবে তা সমাজের পক্ষে হানিকর। অন্য দিকে এআই-এর মাধ্যমে কেউ যদি সত্যিই এরকম ছবি তৈরি করেন এবং তা ছড়িয়ে দেন, সেক্ষেত্রে তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আগামীর পৃথিবীতে কাজকর্মের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটা বড় ভূমিকা নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে তার প্রয়োগ ও নিয়ন্ত্রণে যে আরও সুচিন্তিত ভাবনার প্রয়োজন, ক্লদিয়ার ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছে।