বসের বকুনি খেতে খেতে নাজেহাল দশা। কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটে থাকা ছাড়া উপায় নেই। সমস্যার সমাধান এবার আপনার হাতের মুঠোয়।
অফিসে বকা খেয়ে হয়রান হয়নি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার। অফিসের কাজে পান থেকে চুন খসলেই বসের রক্তচক্ষু। কথায় কথায় অপমান, হেনস্তা, এমনকী যখন তখন গলাধাক্কা দেওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। অথচ নেই কিচ্ছুটি বলার জো। তবে আর চিন্তা নেই। বকুনি খেয়ে মুখভার করে রাখার দিন কিন্তু এবার শেষ। কারণ বসকেই উলটে ধমক দিতে হাজির হয়েছে একটি সংস্থা। একদম ঠিক শুনেছেন। আপনি বসের কাছে হেনস্তা হয়েছেন, শুধু এটুকু শোনার পালা। অমনি তাঁরা আপনার বসকে তিরস্কার করবেন, কেননা এটাই তাঁদের পেশা।
শুনে আশ্চর্য হলেন তো? ভাবছেন তো, কীভাবেই বা এসব সম্ভব! তবে আসুন, শুনে নিই বসের হাত থেকে বাঁচতে বসকেই জব্দ করার গল্প।
কর্মক্ষেত্রের চাপে পড়ে মানসিক অবসাদে ভোগার ঘটনা নেহাত নতুন নয়। তাই মার্কিন মুলুকের স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান এবং অভিনেতা ক্যালিমার হোয়াইট শুরু করেছেন এক অভিনব উদ্যোগ। বসকে বকুনি দেওয়ার সংস্থা খুলেছেন তিনি। তার নাম হল ও.সি.ডি.এ। বসের কাছে যত কথাই শুনতে হোক না কেন, পালটা উত্তর দেওয়ার সুযোগ তো সবসময় থাকে না। ক্ষমতাবানের কথা অমান্য করা বা তাঁর অন্যায় কথার প্রতিবাদ করার যে অনেক ঝুঁকি। তাই কিল খেয়ে কিল হজম করতে বাধ্য হন অধিকাংশ কর্মীই। তাঁদের কথা ভেবেই এই সংস্থা খুলেছেন হোয়াইট। আপনি সংস্থার দ্বারস্থ হলেই, আপনার না-বলা কথা বলে দেবে সে-ই। শুধু তাই নয়, বসদের ভর্ৎসনা করার প্রতিটি ভিডিও আবার সংস্থার তরফে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করা হয়। তবে ও.সি.ডি.এ-এর কাজের কিছু নির্দিষ্ট ধরন আছে। তারা শুরুতেই নিজেদের মতো করে একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করে নেয়, যাতে বসের সঙ্গে কথোপকথনের সময় কোনোমতেই কর্মীর সুরক্ষা বিঘ্নিত না হয়।
আরও শুনুন: অফিসে বড্ড কাজের চাপ! পুরুষের তুলনায় বেশি অভিযোগ মেয়েদের, কিন্তু কেন?
কর্মক্ষেত্রের পরিবেশকে কর্মীদের কাছে আরেকটু স্বাস্থ্যকর করে তুলতেই যে এই উদ্যোগ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আপনাদের আনা সেবাস্তিয়ান পেরাইলের কথা মনে আছে? পুনের বিখ্যাত আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ শুরু করেছিলেন তরতাজা ছাব্বিশ বছরের সেই তরুণী। শুধুমাত্র অফিসের কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু হয় তাঁর, অভিযোগ করেছিলেন আনা-র মা। সেই ঘটনা আজও আমাদের চুপ করিয়ে দেয়। তাই কোথাও যদি হেনস্তার প্রতিবাদ করার পথ খুলে যায়, সে খবর খানিক স্বস্তিই জোগায় আমাদের।