বিশ্বের ধনীতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম তিরুপতি। দেশবিদেশ থেকে আসা ভক্তদের লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান তো আছেই, আরও নানা ভাবে প্রতি বছরই বিপুল আয় হয় এই মন্দিরের। এবার মন্দিরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ করলেন কর্তৃপক্ষ। জানেন কি, মোট কত কোটি টাকার মালিক তিরুপতি? শুনে নিন।
স্রেফ মাথার চুল বিক্রি করেই প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করে তিরুপতি মন্দির। আজ্ঞে হ্যাঁ, শুনতে যতই আশ্চর্য লাগুক না কেন, বিভিন্ন পথে এমনই বিপুল টাকা প্রতি বছর জমা পড়ে মন্দিরের ভাঁড়ারে। সেইসব সম্পদ মিলিয়েই মন্দিরের তহবিলে মোট কত টাকার সম্পত্তি রয়েছে, এবার তার হিসেব প্রকাশ্যে আনলেন তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, বর্তমানে মন্দিরের নগদ সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। সঙ্গে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনাও।
আরও শুনুন: বিয়ে হোক প্রেমিকের সঙ্গেই, দেবীর কাছে আরজি জানিয়ে মন্দিরের প্রণামী বাক্সে জমা পড়ল চিঠি
নগদ টাকা এবং সোনা-সহ মন্দিরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ঘোষণা করেছেন তিরুমালা তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ। যে শ্বেতপত্র তাঁরা প্রকাশ করেছেন সেখানে দাবি করা হয়েছে, দশ টনের বেশি সোনা এবং নগদ ১৫ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা সম্পত্তি রয়েছে মন্দিরের। জানা গিয়েছে, ২০১৯ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাঙ্কে মন্দিরের নগদ সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ২৫ কোটি টাকা। সোনার পরিমাণ ছিল ৭ টনের বেশি। হিসেব বলছে, গত তিন বছরে সম্পত্তির পরিমাণ নিয়মিত বেড়েছে। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিরুপতি মন্দিরের এক শীর্ষ আধিকারিক এ ভি ধর্মা রেড্ডি দাবি করেছেন, মন্দির ট্রাস্টের মোট সম্পত্তির পরিমাণ সওয়া দু’লাখ কোটি টাকার বেশি। করোনাকালে ভক্তদের আনাগোনা বন্ধ হওয়ার দরুন মন্দিরের আয়ে খানিক ভাটা পড়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই মন্দিরের অছি পরিষদের হিসেব জানিয়েছিল, সেই ঘাটতি মিটিয়ে দ্রুত ভরে উঠবে ঈশ্বরের ভাণ্ডার।
আরও শুনুন: হিন্দু রীতিতে পরালেন সিঁদুর, বেনারসের মন্দিরে বিয়ে সারলেন মুসলিম যুগল
কথিত আছে, লক্ষ্মীকে বিয়ে করার জন্য নাকি কুবের ও বিশ্বকর্মার থেকে কয়েক কোটি স্বর্ণমুদ্রা ধার করেছিলেন খোদ নারায়ণ। আর সেই ঋণ শোধ করার জন্যই তিরুপতি মন্দিরে টাকাপয়সা, সোনাদানা দিয়ে যান ভক্তরা। পাশাপাশি লক্ষ্মীকে পাওয়ার পথে এক দুর্ঘটনার জেরে বিষ্ণু তথা শ্রীনিবাসের মাথার কিছুটা চুল ছিঁড়ে পড়ে গিয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই ক্ষতি পূরণের দায়ও নিজেদের উপরেই তুলে নিয়েছেন ভক্তরা। প্রতিদিন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী এই মন্দিরে চুলদান করেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সেই চুল বিক্রি করে চলতি অর্থবর্ষে ১২৬ কোটি টাকা আয় হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি মন্দিরে প্রবেশের জন্য টিকিট বিক্রি করা হয়। তিরুপতির বিশেষ লাড্ডু প্রসাদ, যার জন্য জিআই ট্যাগ পেয়েছে মন্দির, তা বিক্রি করেও বিপুল উপার্জন করে মন্দির। এছাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা রাখা সম্পত্তি থেকে বিশাল অঙ্কের সুদ তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে বিশ্বের ধনীতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম স্থান অধিকার করে নিয়েছে তিরুপতি মন্দির। মাঝে শোনা গিয়েছিল, মন্দিরের অতিরিক্ত সম্পত্তি অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারকে দিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তেমন কোনও ভাবনা যে তাঁদের নেই, মন্দিরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিরুপতি কর্তৃপক্ষ।