অসুখের সময় পাশে ছিলেন মোদি। দায়িত্ব নিয়ে ব্যবস্থাও করেছিলেন চিকিৎসার। স্মৃতিচারণায় প্রধানমন্ত্রীর উপকারের প্রসঙ্গ তুলে আবেগে ভেসেছেন গুজরাটের আমলা। ঠিক কী হয়েছিল তাঁর? মোদির সাহায্যই বা পেয়েছিলেন কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সেই নিয়ে বিজেপি সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের অন্ত নেই। একইভাবে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সরকারি আমলাদের একাংশও। এঁরা সকলেই কর্মজীবনে মোদির সাহায্য পেয়েছেন। সম্প্রতি এমনই এক আমলার জীবনের ঘটনা সামনে এসেছে। যিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে চিরকৃতজ্ঞ বলেই দাবি করেছেন।
আরও শুনুন: গোমাংস খান, অথচ সংসদে শিবের ছবি দেখাচ্ছেন! রাহুলকে তোপ বিজেপি নেতার
কথা বলছি, অনিতা কারওয়াল সম্পর্কে। সরকারি আমলার দাবি, একসময় মোদির সাহায্য না পেলে তাঁর জীবন অন্যরকম হতো। তাই নিজের জীবনের স্মৃতিচারণায় মোদিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনিতা। ঘটনাটি বেশ কয়েক বছর আগেকার। মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আর সেইসময় অনিতা ছিলেন আহমেদাবাদের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর। স্বাভাবিক ভাবেই শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর ভালোমতো যোগাযোগ ছিল। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একজন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টররের সরাসরি যোগাযোগ না থাকাটাই স্বাভাবিক। কাজের মাঝে একদিন ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিতা। পরীক্ষা করে জানা যায় প্যানক্রিয়াটাইটিসের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। এবং তা এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে, যে কোনও মুহূর্তে বড়সর বিপদ ঘটতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি করলে সরাসরি আইসিইউ-তে পাঠানো হয় অনিতাকে। সেখানে প্রায় একমাস থাকতে হয় তাঁকে। চিকিৎসকের কড়া পর্যবেক্ষণে কাটিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হন অনিতা। স্বাভাবিক ভাবেই এতদিন কাজে আসতে পারেননি। সুস্থ হয়ে যেদিন অফিস ফেরেন সেদিনই অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটে। কাজ শুরু করেছেন কী করেননি, সিএম অফিসের ফোন। খানিক ঘাবড়ে গিয়েই ফোন ধরেন অনিতা। এতদিন ছুটি নেওয়ায় বুঝি মুখ্যমন্ত্রী রাগ করেছেন, এই ভাবনাই চলছিল তাঁর মনে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে ঠিক উলটোটা। আসলে, অনিতার অসুস্থতার খবর গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদির কানে পৌঁছয়। আর এতেই রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে অনিতাকে ফোন করে বসেন তিনি। শুধু খোঁজ নেওয়া নয়, অনিতার জন্য কেরলের এক চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্টও ঠিক করে দেন মোদি।
আরও শুনুন: মালিকের নাম লিখতেই হবে, কানওয়ার যাত্রীদের ‘মুসলিম’ দোকান চেনাতে পদক্ষেপ প্রশাসনের
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে সেই ডাক্তারের কাছে আরও একবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান অনিতা। তখনই জানতে পারেন, কেরলের ওই চিকিৎসক পেটের রোগ বিশেষজ্ঞ। এবং দেশের প্রথম সারির চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম। কয়েকমাস অপেক্ষা করে তাঁর অ্যাপয়েন্টমেন্ট মেলে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মোদির সাহায্যে এত কম সময়ে তাঁর কাছে পৌঁছতে পারেন অনিতা। ভবিষ্যতে তাঁকে যেন শরীর নিয়ে আর কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়, সেই ভেবে কেরলের ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে শুরু করেন অনিতা। আর সেভাবেই এতদিন সুস্থ রয়েছেন তিনি। তাই মুখ্যমন্ত্রী মোদির উপকার এখনও ভোলেননি তিনি। একজন আমলাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকে ফোন করছেন, এটাই তাঁর কাছে অনেক। তার ওপর মোদি দায়িত্ব নিয়ে অনিতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। যদিও মোদির প্রশংসায় এই ধরনের মন্তব্য আরও অনেকেই করে থাকেন। স্রেফ মোদি ভক্ত নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও অনেকে মোদির গুণগান করেন। কেউ কেউ এই দাবিও করেন, মোদি নিজ দায়িত্বে তাঁদের সাহায্য করেছেন। এবার সেই তালিকায় যোগ হল গুজরাটের এই আমলার নাম।