মদের নেশা কেটে যাবে নিমেষে। কাজ হবে ম্যাজিকের মতো। কোনও রিহ্যাব নয়, এই ধারণা প্রচলিত রয়েছে এক মন্দির সম্পর্কে। সেখানে মাথা ঠেকালেই নাকি ছেড়ে যায় মদের নেশা। নতুন করে নেশা করার ইচ্ছাই জাগে না! কোন মন্দিরের কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাতাসা, নকুলদানা নয়, ভোগ হিসেবে মদেই তুষ্ট হন মহাকাল। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে বিগ্রহে মদ ঢেলে যান। প্রসাদি সুরা রমরমিয়ে পানও চলে। তবে এ দেশে রয়েছে এমনও এক মন্দির, যেখানে মাথা ঠেকালেই মদের নেশা ছুটতে বাধ্য।
আরও শুনুন: মহেশ্বরের উগ্র রূপ, মাঘের অষ্টমীতে কালভৈরব আরাধনায় মেলে বিশেষ ফল
কথা বলছি, কর্নাটকের শ্রী শনিশ্বরের মন্দির সম্পর্কে। স্থানীয়দের কাছে এই মন্দির বেশ জনপ্রিয়। সকলেই বিশ্বাস করেন এই মন্দিরে মাথা ঠেকালেই মদের নেশা কেটে যায়। এমনিতে অনেকেই হাজার চেষ্টা করে মদের নেশা কাটাতে পারেন না। রিহ্যাবে গিয়েও কাজ হয় না অনেক সময়। সেক্ষেত্রে এই মন্দির কাউকে হতাশ করে না বলেই স্থানীইয় বিশ্বাস। আসলে, মন্দিরের আরাধ্য বেশ জাগ্রত। সকলেই মনে করেন তাঁর নাম করে কোনও অন্যায় করা যায় না। এই অনুযায়ী শনিশ্বরের নামে মদ না খাওয়ার শপথ করলেই আর মদের বোতল ছুঁয়েও দেখেন না কেউ। এমনটাও শোনা যায়, আলৌকিক ভাবে নেশা করার ইচ্ছাও কেটে যায় তাঁদের। মন্দিরটি আরও কিছু কারণে বিখ্যাত। যেমন, এখানে টাকা পয়সা দেওয়ার কোনও চল নেই। অর্থাৎ এই মন্দিরে কোনও কাজের জন্যই দক্ষিণা দিতে হয় না। এমনকি, বিয়ের মতো অনুষ্ঠানও হয় বিনামূল্যেই। বছরে একবার বিরাট মেলা বসে। দক্ষিণি রীতিতেই সেই মেলায় নানা অনুষ্ঠানের চল রয়েছে। বছরভর মন্দির খোলা থাকে সপ্তাহে তিন দিন। এছাড়া এখানে কোনও জাতপাতের ভেদ নেই। যে কোনও ধর্ম বর্ণের মানুষ এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতে পারেন।
আরও শুনুন: কলিযুগের শূর্পণখা, নিজেকে রাবণের বোন হিসেবে প্রচার করেই পুজো পান যে মহিলা
শোনা যায়, এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। মন্দিরের গঠনশৈলিতে চালুক্য রীতির ব্যবহার ছিল দেখার মতো। এখনও সেই কারুকাজ অটুট রয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এই মন্দিরের সঙ্গে মদের নেশা কাটানোর বিষয়টা জুড়েছে তা নিয়ে সঠিক তথ্য মেলে না। কেউ বলেন, আরাধ্যের প্রতি ভয় থেকেই এমনটা করেন ভক্তরা। কেউ আবার বলেন মন্দিরের সত্যিই অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে। তবে যাই হোক না কেন, এই বিশেষ কারণে মন্দিরটি যে জনপ্রিয় তাতে সন্দেহ নেই।