দেশের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশই মুসলিম। তবুও সেখানে না আছে হিজাব পরার সুযোগ, না রাখা যায় লম্বা দাড়ি। কিন্তু কেন? কোথায়ই বা চালু রয়েছে এহেন নিয়ম? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মুসলিমপ্রধান দেশ মানেই সেখানে পথে ঘাটে দেখা যাবে মুসলিমদের ধর্মীয় চিহ্ন। ধর্মের বিধান মেনেই পোশাকে পরিচ্ছদ পরেন মুসলিম সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। আর কিছু না হোক, নিয়ম মেনে দাড়ি রাখেন বহু মুসলিম পুরুষই। একইভাবে ইসলামের নির্দেশ মাফিকই পর্দা করেন বহু মুসলিম মহিলা। বোরখা হিজাব তাঁদের নিত্যসঙ্গী। বিশ্বের যে কোনও দেশেই এই প্রথা মেনে চলেন অনেকে। আর যে দেশগুলিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যাধিক্য, সেখানে তো কথাই নেই। সামাজিকভাবেও সেখানে অনেকসময়ই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপ থাকে ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলার জন্য। কিন্তু সেখানেই জলজ্যান্ত ব্যতিক্রম এই দেশটি। এ দেশের মোট জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ মানুষই ধর্মে মুসলিম। তবুও দাড়ি আর হিজাব দুয়েরই প্রায় দেখা মিলবে না এ দেশে। কেন-না দুটি বিষয়ের উপরেই নিষেধাজ্ঞা টেনে রেখেছে সে দেশের সরকার।
কোন দেশে চালু রয়েছে এহেন নিয়ম? আর সরকারিভাবে এমন নিয়ম জারি রাখার কারণই বা কী?
আরও শুনুন:
ভোটের প্রচারে যত হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব! মন্দিরের রাস্তার জন্য জমি দিলেন মুসলিমরাই
দেশটি তাজিকিস্তান। আশ্চর্যের কথা হল, আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষেই তার অবস্থান। কিন্তু তালিবান শাসনের আফগানভূমে যেখানে মেয়েদের মুখ দেখানোই মানা, সেখানে তার পড়শি দেশ হেঁটেছে সম্পূর্ণ উলটো পথে। ১৮ বছরের নিচে কোনও মেয়ের সেখানে হিজাব পরা নিষেধ। এমনকি, শেষকৃত্য ছাড়া অন্য কোনও ধর্মীয় জমায়েত বা অনুষ্ঠানেও ১৮ বছরের কমবয়েসিরা যোগ দিতে পারে না। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলির নিয়ন্ত্রণও থাকে সরকারের হাতেই। আসলে ছোট থেকেই পরিবার বা সমাজ যাতে কোনও ধর্মবিশ্বাসকে শিশুর উপর চাপিয়ে দিতে না পারে, সে বিষয়েই সতর্ক থাকতে চায় এ দেশ। কোনও বাধ্যবাধকতায় নয়, কোনও মানুষ যাতে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নিজের জ্ঞান বুদ্ধি মতো ধর্মাচরণ করতে পারেন, তেমনই পরিসর খোলা রাখার চেষ্টা করে সরকার। সে কারণেই, দেশে একটি ধর্মের মানুষের সংখ্যাধিক্য থাকার পরেও, এ দেশ খাতায় কলমে নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ বলেই পরিচয় দেয়। যদিও এই বিষয়টি নিয়েও বিতর্ক নেই তা নয়। ধর্মাচরণের স্বাধীনতা নিয়ে চলতি বছরের মার্কিন রিপোর্ট এই প্রবণতাকে ধর্মাচরণে হস্তক্ষেপ বলে মনে করেছে। কিন্তু তাজাকিস্তান সরকারের দাবি, কারও ধর্মবিশ্বাসে হাত দেওয়ার জন্য নয়, একজনের ধর্ম যাতে অন্যের ধর্মকে পীড়ন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্যই এই নিয়মনীতি জারি রেখেছে এ দেশ।