পাতে লেবু-লঙ্কা তো ভাল। কিন্তু বাড়ির সদর দরজায় কিংবা গাড়িতে বা দোকানের মুখে কেন ঝোলে লেবু-লঙ্কা। কখনও ভেবে দেখেছেন। শুধুই কি সংস্কার নাকি এর পিছনেও রয়েছে কোনও বৈজ্ঞানিক যুক্তি। আসুন, শুনে নিন।
দুপুর বেলা কলাপাতায় ধোঁয়া ওঠা ভাতের পাশে একটু নুন আর লেবু-লঙ্কা। এই সংযোগ তো অনিবার্য! কিন্তু বাড়ির সদর দরজা, সিঁড়ি, গাড়ি বা দোকান, এমনকি রাস্তাতেও বহু সময় ঝোলানো থাকে লেবু-লঙ্কা? নিশ্চয়ই দেখেছেন। যাঁরা জ্যোতিষ মানেন, তাঁদের অনেকেই হয়তো শুধু বিশ্বাসের বশে লেবু-লঙ্কা টাঙান। অবিশ্বাসীরা অবশ্য বলেন নেহাতই কুসংস্কার। কেউ কেউ আবার তুকতাক বলেও ধরে নেন। শুভ-অশুভ-র সঙ্গে একটা যোগ থাকলেও শরীর স্বাস্থ্যের সঙ্গেও টুকটাক সম্পর্ক রয়েছে এর। এমনকি ঘরোয়া টোটকাও একেবারে নেই বলা যায় না।
আরও শুনুন: মন্দিরে খালি পায়ে প্রবেশ করা হয় কেন?
পুরাণ মতে, লক্ষ্মী যেমন সৌন্দর্য, সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কিন্তু লক্ষ্মীর অন্ধকার পিঠে তাঁরই সঙ্গে জন্মেছিলেন অলক্ষ্মী, যিনি কিনা দুর্ভাগ্য ও দারিদ্রের দেবী। বলা হয়, তাঁর ছায়া যেখানে পড়ে সেই জায়গা শ্রীহীন হয়ে যায়। আর এই অলক্ষ্মী দেবী নাকি টক-ঝাল এ সব স্বাদেরই বেশি ভক্ত। তাই অলক্ষ্মী দেবী যদি গৃহস্থের বাড়িতে আসেন, তাহলে যাতে লেবু-লঙ্কার প্রসাদ পেয়ে দরজার বাইরে থেকেই বিদায় নেন, তাই এই ব্যবস্থা। এখানে একটি লোকগল্প কথিত রয়েছে। একবার এক ধনপতির কাছে নাকি পৌঁছে গিয়েছিলেন, লক্ষ্মী-অলক্ষ্মী- দুই বোনই। তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, দুই বোনের কে বেশি সুন্দরী? ধনপতি বুদ্ধিমানের মতো উত্তর দেন, বাড়ির বাইরে থেকে যখন ভিতরে আসেন, তখন সুন্দর দেখায় লক্ষ্মীকে। আর যখন বাড়ির ভিতর থেকে বাইরে যান অলক্ষ্মী, তখন বেশি সুন্দর দেখায় দুর্ভাগ্যের দেবীকে।
আরও শুনুন: শঙ্খধ্বনি কেন মঙ্গলকর? শুভ কাজে শাঁখ কেন বাজানো হয় জানেন?
তবে লোককথা ছাড়াও এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক যুক্তিও। লেবু ও লঙ্কা দুইয়ের কিন্তু আছে দিব্য কীটনাশক গুণ। ফলে বাইরে থেকে আসা পোকামাকড় দূর করতে কাজে আসে এই লেবু-লঙ্কা। আগেকার দিনে জঙ্গলে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই লেবু-লঙ্কা সঙ্গে রাখার রেওয়াজ ছিল, তা সাধারণ ভাবে অশুভ শক্তি তাড়ানোর জন্য হলেও, খুঁটিয়ে দেখলে মিলবে কিছু বৈজ্ঞানিক যুক্তিও।
বাকি অংশ শুনে নিন।