কাজ ফুরোলো নিশ্চিন্তে বন্ধ করা যাবে ইন্টারনেট। অফিসের যাবতীয় প্রয়োজন থেকে চাইলেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে। কিছু দেশের নাগরিকরা আইনের পথেই এমন অধিকার ভোগ করেন। অফিস ছুটির পর জোর করে কাজ করানোর নিয়ম নেই এইসব দেশে। তালিকায় কোন কোন দেশ রয়েছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কাজ শেষ। খাতায় কলমে ছুটি। তবু বিরাম নেই। একের পর এক কাজের বরাত আসছে। কখনও ফোন, কখনও মেসেজ…রেহাই নেই এতটুকু। এদিকে কিছু বলতে গেলেই বিপদ। নিয়ম যাই বলুক, ছুটির পর কাজ করাটাই এখানে স্বাভাবিক। তাই প্রতিবাদে লাভ নেই। তবে বিশ্বের সর্বত্র ছবিটা এক নয়। অফিসে কাজ ফুরোলে নেট বন্ধ রাখাটাও কিছু দেশে নাগরিকদের আইনি অধিকার।
পোশাকি নাম, ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট’। অর্থাৎ নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার অধিকার। বলার অপেক্ষা রাখে না, অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত রাখার অধিকারই দেয় এই বিশেষ আইন। এতে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট চালু না রাখেন তাহলে তা অপরাধ নয়। প্রথমবার এই আইন চালু হয়েছিল ফ্রান্সে। অন্তত ৫০ জন কর্মী রয়েছেন এরকম সংস্থায় যারা কাজ করেন তাঁরাই এই অধিকার ভোগ করতে পারবেন। ২০১৭ সালে ফ্রান্সে চালু হওয়া এই আইন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পরে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। তালিকায় জোড়ে ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড-এর মতো দেশের নাম। কর্মীরা যেন নিজেদের জন্য সময় কাটাতে কাটাতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতেই এমন আইনের ভাবনা। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি সংস্থাকেও কর্মীদের এমন সুযোগ দিতেই হয়। সম্প্রতি এই আইন চালু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এখানে কাজের জন্য আসেন। তাঁদের সকলের সুবিধার্থে এই নতুন আইন চালু করেছে অস্ট্রেলিয়া প্রশাসন।
আসলে, যে কোনও কাজের নির্দিষ্ট একটা সময় থাকে। সেই সময়টুকু কাজ করতেই হয়। কিন্তু সময় ফুরোলে? নিয়ম মতো তখন আর কাজ করার দরকার নেই। কিন্তু না! এমন বহু সংস্থা রয়েছে যেখানে সময় পেরোলেও অতিরিক্ত কাজ করতে হয় কর্মীদের। কোথাও কোথাও এই অতিরিক্ত কাজের বিনিময়ে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক মেলে। সবজায়গায় সেই সুবিধাও নেই। এদিকে কিছু বলার উপায় নেই। ‘সবাই করছে, তাই করতেই হবে’ এমন যুক্তি শুনতে হতে পারে। বাধ্য হয়ে সবকিছু মুখ সহ্য করেন অনেকেই। কোথাও আবার ছবিটা একটু অন্যরকম। নির্দিষ্ট সময় পেরোলে অফিস থেকে ছুটি মেলে ঠিকই, কিন্তু কাজ থেকে রেহাই মেলে না। ইন্টারনেটের যুগে এমন অনেক কাজই রয়েছে যা বাড়িতে বসে করা যায়। কিছু সংস্থা কর্মীদের পাকাপাকি ভাবে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা দেয়। এইসব কাজে সময়ের হিসাব মানা হয় না বললেই চলে। দীর্ঘক্ষণ ফোনে অনকল থাকা, কিংবা অন্য কিছু। কাজ থেকে বিরতি নেই। এসবের মাঝে নিজের জন্য সময় পান না কর্মীরা। তাই আইনি পথে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ।