আলো নিভলেই বিপদ। অন্ধকার ঠেলে বেরিয়ে আসবে কান্নার শব্দ। কোথাও আবার নিজে থেকে সরে যাবে আসবাব। আমাদের দেশেই রয়েছে এমন কিছু হোটেল যেখানে রাত বাড়লেই শুরু হয় তেনাদের উপদ্রব। সত্যিই কী তাই ? নাকি লোকমুখে ছড়ানো গুজব মাত্র? আসুন শুনে নিই।
বাইরে থেকে ঝাঁ চকচকে। ভিতরে ঢুকলেও যে অন্যরকম কিছু মনে হবে, তা নয়। কিন্তু রাত বাড়লেই ঘনিয়ে আসতে পারে বিপদ। ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করবে চারপাশের পরিবেশ। ঘুম পাওয়া তখন দূর অস্ত। কোনওমতে পালাতে পারলে প্রাণ বাঁচে। ভাবছেন তো, কোনও সিনেমার কথা বলছি। একেবারেই নয়। দেশের কিছু বিখ্যাত হোটেলে রাত কাটালে আপনারও হতে পারে এমনই অভিজ্ঞতা।
আরও শুনুন: এক রাতের খরচ ৬১ লাখ! কোন দেশে রয়েছে এমন বিলাসবহুল হোটেল?
আমাদের দেশে ঘোরার জায়গার অভাব নেই। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হোটেলের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। পাহাড় হোক বা সমুদ্র, বিলাসবহুল হোটেলের ব্যবস্থা থাকতে বাধ্য। বাড়িতে যা পাওয়া সম্ভব নয়, হোটেলে গেলে অনায়াসে মিলতে পারে সেইসব সুযোগ সুবিধা। একবার ফোন করলেই খাবার হাজির। তাছাড়া ইচ্ছে হলেই পুলে নেমে গা ভেজানো, কিংবা অন্য কিছু, সবই মেলে হোটেলে। কিন্তু এইসব থাকা সত্ত্বেও এমন কিছু হোটেল রয়েছে যেখানে রাত কাটানোর কথা ভুলেও ভাবেন না অনেকেই। কারণ অবশ্য একটা নয়। কেউ বলেন ভূতের উপদ্রব আবার কেউ বলেন অলৌকিক ঘটনা। সবমিলিয়ে এইসব হোটেল যে সাধারণ নয় তা বলাই বাহুল্য।
আরও শুনুন: এক দিনের সুলতান… দেশের এইসব হোটেলে এক রাত কাটানোর খরচ প্রায় ৪ লক্ষ টাকা
তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মর্গান হাউস। কালিপং শহরের কাছে অবস্থিত এই হোটেলটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি। তাই পুরনো স্থাপত্যের বেশ ছোঁয়া মেলে এই হোটেলে। শোনা যায়, এই হোটেলেই নাকি অনেকে ভূতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। স্থানীয় বিশ্বাস, এখানে লেডি মর্গানের অতৃপ্ত আত্মা এখনও ঘুরে বেড়ান। সেই ভয়েই এখানে রাত কাটানোর কথা ভাবতে চান না অনেকেই। অন্যদিকে কেউ কেউ আবার ভূতের খোজেই এই হোটেলে রাত কাটাতে যান। তাঁদের কেউ কেউ সত্যিই ভূতুড়ে কাণ্ড উপলব্ধি করতে পারেন। তবে অনেকেই এই ভূতের ঘটনা স্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দেন। তালিকায় এরপর রয়েছে রাজস্থানের ব্রিজরাজ হোটেল। এই হোটেলও ১৭৮ বছরের পুরনো। কাজেই এখানে ভূত থাকা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। বাস্তবেও তেমনটাই শোনা যায়। এখানে একসময় কোনও ব্রিটিশ কর্তা থাকতেন। কিন্তু সিপাহি বিদ্রোহের সময় তাঁর গোটা পরিবারকে এই বাড়িতেই হত্যা করা হয়। মনে করা হয়, সেই ব্রিটিশের আত্মাই এখনও এখানে ঘুরে বেড়ায়। তাই খুব সাহসী না হলে এখানে রাত কাটানোর কথা কেউই ভাবেন না। এরপর বলতে দক্ষিণের এক হোটেলের কথা। উটি শহরের মনোরম পরিবেশে অবস্থিত হোটেল ফার্ন হিল। এই হোটেলে একাধিক হিন্দি সিনেমার শুটিং হয়েছে। আর সেখানেই নাকি বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনার সম্মুখিন হয়েছেন সিনেমার কলা কুশলীরা। বিখ্যাত সব তারকারা রয়েছেন সেই তালিকায়। তাই বর্তমানে এখানে খুব একটা শুটিং করতে যান না কেউই। স্রেফ এই হোটেল নয়, উটি শহরের হোটেল লেক ভিউ-এর ক্ষেত্রেও একই কথা শোনা যায়। রাত বাড়লেই নাকি সেখানে অজানা কারও কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। যা রীতিমতো ভয়ের কারণ হতে পারে। তালিকায় রয়েছে মুম্বইয়ের কিছু হোটেলও। এমনকি বিখ্যাত হোটেল তাজের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু ভূতুড়ে ঘটনা। তবে এক্ষেত্রে সকলেই যে ভূতের দেখা পেয়েছেন তা নয়। তাই চাইলেই কেউ এইসব হোটেলে রাত কাটাতে পারেন। কিন্তু এইসব হোটেল ঘিরে যেসব ভূতের গল্প ছড়িয়ে রয়েছে, তা অনেকের কাছেই সতর্কবার্তার মতো কাজ করে।