অর্ধেক মৎস্য, অর্ধেক মানুষ! এ কোন বিচিত্র জীব। দেখে চমকে উঠেছে নেটদুনিয়া। তবে কি কখনও অস্তিত্ব ছিল মৎস্যমানবদের। সম্প্রতি সেই প্রশ্নেরই উত্তর মিলেছে। কী বলছেন গবেষকেরা? শুনে নিন।
ছোটবেলায় রূপকথার বইয়ে মৎস্যকন্যার কথা তো হামেশাই শুনেছি। এও যেন অবিকল তেমনই মৎস্যমানব। তবে রূপকথার বইয়ের পাতায় নয়, এর গল্প শোনাবে ইতিহাস।
মুখটা অবিকল মানুষের মতো। রয়েছে দুটো হাতও। তবে পায়ের দিকে তাকালে অবাক হতে হবে। না, পা বলে বস্তুটাই যে নেই শরীরে। বরং কোমরের পর থেকে পুরোটাই মাছের মতো। সম্প্রতি এমনই একটা মমি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। যা তিনশো বছর আগেকারর বলেই দাবি তাঁদের।
আরও শুনুন: সাপেরও নাকি ছিল চারখানা পা! জীবাশ্ম দেখে তাজ্জব গবেষকরা
জাপানের হোনশু আইল্যান্ডের কাছে ওকায়ামা শহরের একটি মন্দিরে সংরক্ষিত ছিল ওই মমিটি। প্রায় ১২ ইঞ্চি লম্বা ওই মমিটির শরীরে নাক, কান, দাঁত, নখ সবই আছে। তবে শরীরে নিচে রয়েছে আঁশ, অবিকল মাছের মতোই একটি লেজ।
গত কয়েকদিন ধরেই নেটদুনিয়ায় ঘুরছে বিষয়টি। বাক্সবন্দি ওই মমির সঙ্গে মিলেছে একটি নোটও। আর সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, ১৭৩৬ থেকে ১৭৪১ সালের মাঝামাঝি কোনও এক সময়ে সমুদ্র থেকে ওই অদ্ভুতদর্শন প্রাণীটিকে উদ্ধার করেছিল একটি পরিবার। তারপর বেশ কয়েকবছর তাঁদের কাছেই ছিল প্রাণীটি। পরে নাকি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রাণীটিকে। সেখানেই বহু বছর ধরে ছিল সে। তবে সেটি কবে মারা যায়, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছে সেই প্রাণীর মমিটিই। যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। প্রাণীটি কী ধরনের তা জানতে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। জাপানের কুরাশিকি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এবং আর্ট’স ভেটেনারি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে মমিটির। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রাণীটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতে পারেননি গবেষকেরা। তবে মমিটি যে ৩০০ বছরের পুরনো, এ বিষয়ে নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা।
আরও শুনুন: এককালে লম্বা নাকের ডায়নোসর বেড়াত ঘুরে, সম্প্রতি তার খোঁজ পেল মানুষ
স্থানীয়রা কিন্তু এই প্রাণীটিকে মিব়্যাকল বলেই মনে করেন। জাপানের ওই শহরে প্রাণীটিকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে একটি বিশ্বাসও। ব্যাপারটা অবাক করার মতো হলেও স্থানীয়র নাকি মনে করেন, ওই প্রাণীটি অমর। শুধু তাই নয়, অমরত্ব দেওয়ার ক্ষমতাও ছিল ওই প্রাণীটির। তাঁদের বিশ্বাস, কেউ যদি ওই প্রাণীটির মাংস খেতে পারে, তাহলে সেও নাকি অমরত্ব লাভের সুযোগ করবে। তা এ কথাটা কতটা সত্যি আর কতটা লোকমুখে শোনা কথা, তা বলা কঠিন। ওই মৎস্যমানবের মাংস খেয়ে কারওর আয়ু বেড়েছে কিনা তা-ও অবশ্য জানা নেই।
অনেকে আবার মনে করছেন, গোটা ব্যাপারটাই আসলে সাজানো। সে নিন্দুকেরা যাই বলুক, আগামী বছর জাপানের একটি গবেষণাপত্রে প্রাণীটির বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করবেন বিজ্ঞানীরা। আর মৎস্যমানবের বিষয়ে সবিস্তার জানতে ততদিন তো অপেক্ষা করতেই হবে।