আজেবাজে খরচ করে ফেলেন বলে কি আপনার ভারি বদনাম! টেনশন করবেন না। একই রকম খরচের হাত আপনার আশেপাশে অনেকেই। তবে যাঁরা একটু বুদ্ধি খরচ করেন, তাঁরা এর মধ্যেই কিছু কাজের খরচ করতে পারেন। তার কতকগুলো উপায়ও আছে। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
টাকা মাটি, মাটি টাকা। এ কথা নয় খাঁটি সত্যি। কিন্তু তাই বলে সংসারী মানুষ তো আর টাকাকে মাটিজ্ঞান করতে পারে না। দিনকাল যতই বদলাক, টাকার গুরুত্ব কমে না। কিন্তু ওই যে কথায় বলে, লক্ষ্মী চঞ্চলা। তাই হাতে টাকা এলেও তা আর থাকে কতক্ষণ। এই হয়তো পার্সটা একটু পেটমোটা হল, পরক্ষণেই যেন সে পেটরোগা বাঙালি। কেবল ধুঁকছে আর ধুঁকছে। ব্যাংক থেকে ঘনঘন মেসেজ আসছে। এত টাকা কাটা গেল অমুক খাতে তো অত টাকা তমুক খাতে। কী আর করা যাবে! খরচের হাত যে আপনার – আমার!
তা এমন করে বেশিদিন চলা কিন্তু ভালো নয়। তাতে মাসের শেষে যে রসদে টান পড়ে, সে তো সকলেরই জানা। তার উপর বাজে খরুচে বলে বদনামও কুড়োতে হয়। আমরা তাই উপায় খুঁজি যে, কী উপায়ে এই খরচ কমানো যায়।
আরও শুনুন: ১ আগস্ট থেকে বাড়ছে ATM মারফত লেনদেনের খরচ
সত্যি বলতে, খরচ কমানোর আসল উপায় নিজেকে সংযত করা। তবে হ্যাঁ, দরকারও তো কিছু থাকে। আর তার জন্য খরচ হতেই থাকে। বুদ্ধিমান যাঁরা তাঁরা এই দরকার, মানে, প্রয়োজনটাকেই বদলে ফেলেন। ফলে, খরচ তাঁরাও করেন, কিন্তু তার একটা মূল্য জীবনে থেকে যায়। অর্থাৎ, মনে হয়, খরচ করাটাও সার্থক হল।.
তা কী সে উপায়গুলো?
প্রথমত, তাৎক্ষণিক আনন্দ পাওয়া যাবে, এমন কিছুর জন্য মুড়িমুড়কির মতো খরচ না করাই ভালো। বরং খরচ করুন এমন খাতে, যা আপনার কাছে সারা জীবনের জন্য একটা মনে রাখার স্মৃতি বা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। হয়তো বড় কোনও ট্যুর প্ল্যান করলেন। কিংবা স্কুবা ডাইভিং বা স্কাই ডাইভিং-এর প্ল্যান করলেন। এখন বলবেন, সে তো বিস্তর খরচের ব্যাপার। তা ঠিক। তবে প্রতিদিনের হাবিজাবি খরচ একটু করে কমিয়ে সঞ্চয় করতে পারলেই একদিন ঠিক স্বপ্নপূরণ হবে। খরচ নিশ্চয়ই হবে, তবে যে কারণে খরচ করবেন তা আপনি আজীবন মনেও রাখতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত, যেটা আপনি পছন্দ করেন সেটার জন্য ঘনঘন খরচ করবেন না। ধরুন আপনি ‘ব্রাউনি উইথ আইসক্রিম’ খেতে ভারি ভালোবাসেন। তা ইচ্ছের বশে হয়তো সপ্তাহে দু-তিন দিন খেয়ে বসলেন। তাতে খরচও হল। আবার একরকমের একঘেয়েমিও পেয়ে বসে। এটাই যদি আপনি পনেরো দিনে একদিন করেন, খেয়াল করে দেখবেন, আপনার খরচও কমবে। আর আপনি জিনিসটাকে উপভোগও করবেন আগের থেকে অনেক বেশি।
আরও শুনুন: করোনাকালে সস্তা ভ্রমণ, দিঘা-পুরীর হোটেলে মিলছে বাড়তি ডিসকাউন্ট
তৃতীয়ত, এমন কিছু জিনিসের জন্য খরচ করুন যাতে আপনি পরিবারের সঙ্গে সময়টা বেশি কাটাতে পারেন। হয়তো খরচও হচ্ছে, আবার বাড়ির কাজে সকলে ব্যস্তও থাকছেন। এতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। ফলে, এমন গ্যাজেট কিনুন যা বাড়ির কাজে সহায়ক হবে। তাতে ফ্যামিলি টাইম কাটানোর সুযোগ মিলবে বেশি।
আর শেষ পর্যন্ত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করা উচিত, তা হল ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়। এর কোনও বিকল্প নেই। নানারকম স্কিম আছে, বিমা আছে। বুঝেশুনে সেখানে বিনিয়োগ করুন। কে না জানে, ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকলে কতটা নিশ্চিন্তি আসে!
তাই বাজে খরচ কমাতে খরচের ধরনটাই এবার থেকে বদলে ফেলুন। দেখবেন, তা আর ততটা বাজে বলে মনে হচ্ছে না। তখন আপনি নিজেই বুঝে যাবেন আপনার আরও কী কী করণীয়। দেরি না করে তাই খরচের এই নয়া অভ্যাস শুরু করে ফেলুন, পরীক্ষা প্রার্থিনীয়।