আগেকার দিনে রাজারাজড়ারা দেশভ্রমণে গেলে তাঁদের সঙ্গে থাকত লোক-লশকরের এক বাহিনী। একেকজনের একেকটা কাজ। এখন রাজা নাই বা থাকুন, রাষ্ট্রনেতাদের সফরেও তেমনভাবেই দেখা যায় বিভিন্ন কর্মী-আধিকারিকদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরে তাঁদের মধ্যেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এক মহিলা। কে তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরের খুঁটিনাটির দিকে চোখ থাকে সকলেরই। এইসব সফরে মোদির সঙ্গে যাঁরা থাকেন, স্বাভাবিকভাবেই নজর থাকে তাঁদের দিকেও। দেখা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সব বিদেশ সফরেই তাঁর সঙ্গে থাকেন একজন মহিলা। বিশেষ করে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলিতে এই মহিলা সবসময়েই হাজির থাকেন। কিন্তু কে ইনি? মোদির বিদেশ সফরে তাঁর উপস্থিতি এমন অপরিহার্যই বা কেন?
আরও শুনুন: ‘সুবক্তা’ মোদির ম্যাজিকে হিন্দুদের থেকেও বেশি মুগ্ধ মুসলিমরা! ইঙ্গিত মিলল সমীক্ষায়
ইনি গুরদীপ কওর চাওলা। জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও, বর্তমানে থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই। একজন সফল অন্ত্রপ্রনর এই মহিলা। কিন্তু শুধু সেটুকুই তাঁর পরিচয় নয়। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট করেছেন তিনি। ভারতের সংসদের পাশাপাশি ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকেও বিশেষ ট্রেনিং নিয়েছেন এই মহিলা। মাত্র ২১ বছর বয়সেই দোভাষী হিসেবে সংসদে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। অনুবাদ এবং ভাষান্তরের কাজে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। আর এই অভিজ্ঞ মহিলাকেই নিজের বক্তব্য অনুবাদের ক্ষেত্রে ভরসা করেন মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমানের জো বাইডেন, সবার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সময়েই তাঁকে দেখা গিয়েছে।
আরও শুনুন: ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে মোক্ষম প্রশ্ন মোদিকে, কে এই সাবরিনা সিদ্দিকি?
শুধু দেশেরই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং কূটনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরগুলি। কিছুদিন আগেই বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর বিশ্লেষণ করেছিলেন যে, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের তুলনায় প্রধানমন্ত্রী মোদির বিদেশ সফর কোথায় কোথায় আলাদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক মার্কিন সফরে একইসঙ্গে বিদেশ নীতি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা এবং মার্কিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক, দুই-ই সেরেছেন মোদি। তাঁর সফরের পরেই ভারতে বড় বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। কিন্তু কথা হল, এই সফরগুলিতে মোদি একা থাকেন না। তাঁর সঙ্গে থাকেন আরও কিছু আধিকারিক এবং কর্মীরা, যাঁরা এইসব কূটনৈতিক সাক্ষাৎকার এবং আলাপ আলোচনায় কিছু না কিছু ভূমিকা পালন করেই থাকেন। তাঁদেরই অন্যতম গুরদীপ, যিনি মোদির বক্তব্য হিন্দি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করে থাকেন। একা মোদিই নন, এই বিষয়টিতে তাঁকে ভরসা করে থাকেন একাধিক রাষ্ট্রনেতাই। ২০১০ সালে বারাক ওবামার প্রথম ভারত সফরে সঙ্গী হয়েছিলেন গুরদীপ। ২০১৫ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসে ওবামার বক্তব্যও অনুবাদ করেছিলেন তিনিই। ভারতের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার কূটনৈতিক মহলে তাই বড় গুরুত্ব রয়েছে গুরদীপ কওর চাওলার।