প্রেমের সপ্তাহ মানেই গোলাপ। তাই চলতি বছরেও ফুলের ব্যাপক চাহিদা। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও এখন সেই সুবিধা মিলছে। অর্ডার দিলেই গোলাপসুন্দরী এসে হাজির প্রেমের মুহূর্তকে রঙিন করে তুলতে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পালটাচ্ছে গিফট দেওয়ার প্রবণতা। সেটা কী ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের জোয়ারে ভাসাব দোহারে- আর হাতে একটা গোলাপ না থাকলে চলে। সে গোলাপ এসেছে কোথা থেকে? প্রেমিক-প্রেমিকার সে খবর না রাখলেও চলে। স্থানীয় দোকানে ধারবার না মাড়ালেও হাতে গোলাপ আসায় বাধা নেই। একাধিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গোলাপ সরবরাহ করে থাকে। সেখানে অর্ডার দিলেই গোলাপসুন্দরী এসে হাজির প্রেমের মুহূর্তকে রঙিন করে তুলতে। গোলাপের কুষ্ঠিঠিকুজি নিয়ে কারুরই তেমন মাথাব্যথা নেই। তবে যত এমন প্রেমের দৃশ্যের জন্ম, তত যেন খুশি হন কৃষ্ণগিরির কৃষকরা।
:আরও শুনুন:
প্রেমের দিনেও একা! চিন্তা নেই, ভাড়ায় মিলছে প্রেমিক-প্রেমিকা, কীভাবে?
নাম কৃষ্ণগিরি। যদিও গোলাপে লালে লাল পুরো জেলা। তামিলনাড়ুর এই জেলার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে কেবলই গোলাপের চাষ। ১৩০০ থেকে ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে গোলাপ ফোটান কৃষকরা। বিশেষ উৎসবের মুহূর্ত গোলাপের চাহিদা বাড়ে। তার মধ্যে একটি হল এই প্রেমের সপ্তাহ উদযাপন। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে কৃষ্ণগিরির গোলাপ। এ ছাড়া বিদেশেও এই অঞ্চলের গোলাপের চাহিদা আছে। বর্তমানে অনলাইনে বিপণন বেড়েছে। সেখানকার কৃষকরা জানাচ্ছেন, অন্তত ২৫টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কৃষ্ণগিরির গোলাপই সরবরাহ করে থাকে। এই মরশুমে অন্তত ১ কোটি গোলাপ নিয়ে যায় সংস্থাগুলো। এ বছর যদিও সাইক্লোনের কারণে গোলাপের ফলন কম। তা সত্ত্বেও এই মুহূর্তে গোলাপ সরবরাহ করতে হিমসিম খাচ্ছেন কৃষকরা। প্রেমের সপ্তাহে প্রথামাফিক চাহিদা মোটামুটি একইরকম।
:আরও শুনুন:
ভালোবাসার উপহারই ইতি টানবে সম্পর্কে! শাস্ত্রমতে কোন কোন উপহার নিষিদ্ধ জানেন?
শুধু কৃষ্ণগিরি নয়, সারা দেশেই ফুলবাজার যেন এই সময়টায় খানিক বাড়তি অক্সিজেন পায়। একটু বেশি দামেই এখন বিকোয় গোলাপ। ২০টি গোলাপ ৫০০ কি ৬০০ টাকাতে কিনে নিতেও অনেকে কসুর করেন না। ফলত হোলসেলার থেকে রিটেল, সর্বত্রই ফুলের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে। ১২ থেকে ১৪ তারিখ এই চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তার উপর এই সময়টা বিয়ের মরশুমের মোটামুটি শেষের দিকে। দুয়ে মিলেই ফুল-ব্যবসার ‘অচ্ছে দিন’ বলা যায় সময়টাকে। তবে পাশাপাশি আর একটি প্রবণতাও যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তা খেয়াল করেছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। প্রেমের প্রকাশে ফুলের বিকল্প যে নেই, সে কথা সত্যি। চলতি বছরেও ফুলের ব্যাপক চাহিদা। তবে, একই সঙ্গে পারসোনালাইজড গিফটের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। ফুল বেশিদিন টাটকা থাকবে না। যতই পছন্দের উপহার হোক না কেন, এক সময় তা ফেলেই দিতে হয়। সেই জায়গা থেকেই প্রবণতা বদলাচ্ছে। ৫০০ বা ৬০০ টাকা খরচ করলে এমন কোনও উপহারের দিকেই সকলে ঝুঁকছেন, যা দীর্ঘদিন থেকে যাবে। সেই হেতু ফুলের পরিবর্তে উপহার কেনাকাটা অনেকটাই বেড়েছে। তাতে অবশ্য় এখনই গোলাপের বাজারে তেমন একটা কোপ পড়ছে না। তবে এই প্রবণতা বাড়তে থাকলে গোলাপের বাগিচায় খানিক যে প্রভাব পড়বে সে শঙ্কা থেকেই যায়। তবু এখনও পর্যন্ত প্রেমের সপ্তাহে গোলাপই যে অদ্বীতিয় তা নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশই নেই।