এককালে লড়াই করে ছিনিয়ে আনতে হত খাবার। পশুদের থেকেই শিকারের বিদ্যা রপ্ত করেছিল মানুষ। এযুগে সে বালাই নেই। তবে এখনও এমন এক রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেখানে লড়াই না করলে খাবার মিলবে না! কোথায় জানেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
টাকা নয়, খাবার পেতে গেলে প্রয়োজন লড়াইয়ে জেতা! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই নিয়ম। সৌজন্যে বিশেষ এক রেস্তোরাঁ। এদিকে নতুন বছরের আগমনে নতুন ভাবে সেজে উঠছে দেশবিদেশের বিভিন্ন খাবারের দোকান, সেখানে এই রেস্তোরাঁয় বহাল তবিয়তে জারি, এমনই অদ্ভুত নিয়ম।
কোথায় রয়েছে এমন দোকান?
খাবারের জন্য লড়াই পশুদের সহজাত অভ্যাস। মানুষ এসব কিছু করে না। কষ্ট করে উপার্জন করা টাকা দিলেই মেলে পছন্দের খাবার। ব্যতিক্রম চিনের এক রেস্তোরাঁ। এখানে খাবারের জন্য লড়াই করতে হয় এখনও। তবে গ্রাহকদের নয়, লড়াই করার দায়িত্ব দোকানের কর্মীদের। দক্ষিণ চিনের গুয়াংডং প্রদেশের জিয়াংমেনের এই রেস্তোরাঁর ভিতরের পরিবেশ এক্কেবারে অন্যরকম। বোঝার উপায় নেই এটা খাবারের দোকান না যুদ্ধের ময়দান! রেস্তোরাঁর মাঝ বরাবর রয়েছে একটা বড় রেসলিং রিং। আর সেই রেসলিং রিং -এর বাইরে গোল করে চারিধারে সাজানো থাকে সমস্ত টেবিল ও চেয়ার। ঠিক ধরেছেন, এখানেই পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন স্বাদের খাবার। আর ওই রিং-এর ভিতর লড়াইয়ে মত্ত হন দোকানের কর্মীরা। জনপ্রিয় টিভি শো WWE-এর আমেজ মিলবে এই রেস্তোরাঁয় গেলে। আসলে সবটাই গ্রাহকদের বিনোদনের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে। এমনিতে খাবারের দোকানে গান বাজনার ব্যবস্থা থাকে, কোথাও কোথাও টিভিতে সিনেমাও দেখানো হয়। তবে চিনের এই রেস্তোরাঁর মালিক সামনে থেকে কিছু করে দেখাতে বেশি পছন্দ করেন। সেই থেকেই তাঁর মনে আসে এমন অদ্ভুত বিনোদনের কথা। দোকানের কর্মীরা একটু সময় পেলেই রিং-এ ঢুকে লড়াই শুরু করেন। গ্রাহকরা তাদের রীতিমতো উৎসাহ দেন। কেউ কেউ লড়াইয়ে জেতার পুরস্কার হিসাবে মোটা টাকাও বিলি করেন। সবমিলিয়ে রেস্তোরাঁর পরিবেশ একেবারে অন্য মাত্রা নেয়।
রেস্তোরাঁয় অনেকেই নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করেন। তাঁদের জন্য এই রেস্তোরাঁ কখনও সঠিক জায়গা নয়। বরং যাদের উত্তেজনার পরিবেশ পছন্দ, তারা এখানে ঢুকলে বেরোতেই চাইবেন না। অল্প দিনেই এই রেস্তোরাঁর অদ্ভুত বিনোদন চর্চায় উঠে এসেছে। তাতে ভিড়ও মন্দ হচ্ছে না। দোকানের কর্মীরাও লড়াইয়ে উৎসাহ পাচ্ছেন। তাঁদের লড়াইটাও যে খাবারের জন্যই তা বলাই যায়। একটু কষ্ট সহ্য করে যদি অন্যকে বিনোদন দেওয়া যায়, তাতে পকেটে দুটো বাড়তি পয়সা ঢুকবে। সেই টাকায় পেট ভরবে অন্য কারও। তাই এর মধ্যে খারাপ কিছু দেখছেন না তাঁদের কেউই, বরং আনন্দের সঙ্গে লড়াইয়ে নামছেন দোকানের কর্মীরা।