ভারতকে যতই শ্রীরামচন্দ্রের দেশ বলে তুলে ধরতে চাক গেরুয়া শিবির, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে রামের মতো এক পত্নী নিয়ে খুশি নন অধিকাংশ ভারতীয়ই। এমনটাই জানাল এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা। সমীক্ষার দাবি, ভারতীয়দের মধ্যে রীতিমতো বাড়ছে পরকীয়ার ঝোঁক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
রাধাকৃষ্ণের পরকীয়া প্রেমের কাহিনিকে বরাবরই আপন করে রেখেছে এ দেশ। রামায়ণ নিয়ে এখানে যতই চর্চা চলুক, পত্নীনিষ্ঠ রামের আদর্শ এ দেশের সব মানুষই যে গ্রহণ করেছেন, এমন কথা মোটেও বলা যায় না। আর সম্প্রতি সে কথাই স্পষ্ট হয়ে গেল এক সমীক্ষায়। দেখা গেল, বিয়ের পরে পরকীয়া সম্পর্কের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন অনেক ভারতীয়ই। ভারতীয়দের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ঝোঁক বাড়ছে বলেই দাবি সমীক্ষায়।
আরও শুনুন: প্রেমে প্রত্যাখ্যান, মুসলিম তরুণীকে ৩৫ টুকরো করে কাটার হুমকি হিন্দু যুবকের
আর এই কথাই জানা যাচ্ছে ফ্রান্সের একটি বিশেষ অ্যাপের গ্রাহকতালিকার খতিয়ান দেখে। এই অ্যাপটি কেবল বিবাহিতদের জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। ঘোষিতভাবেই তা পরকীয়া সম্পর্কের সঙ্গী খুঁজতে সাহায্য করে। ‘গ্লিডেন’ নামের ওই অ্যাপটি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তাদের গ্রাহক সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে। আর সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তাদের এক কোটি গ্রাহকের মধ্যে ২০ শতাংশ, অর্থাৎ ২০ লক্ষ গ্রাহকই ভারতীয়। তাঁদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী ইত্যাদি একাধিক পেশার লোক রয়েছেন। এমনকি রয়েছেন গৃহবধূরাও। পুরুষ গ্রাহকদের গড় বয়স ৩০ বছর আর মহিলা গ্রাহকদের গড় বয়স ২৬ বছর। শুধু তাই নয়, সংস্থার ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার সিবিল সিড্ডেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০২২ সালে তাঁদের অ্যাপে ভারতীয় গ্রাহকের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে ছিল ১৭ লক্ষ আর ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ২০ লক্ষ। এমনকি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর সংস্থার ভারতীয় গ্রাহক সংখ্যা ১১ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। যা থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে ভারতীয়দের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্কের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে।
আরও শুনুন: প্রকাশ্যে চলন্ত স্কুটিতেই আদরে মাতলেন যুগল, অশ্লীলতার অভিযোগ লখনউ পুলিশের
সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, তাদের ভারতীয় গ্রাহকদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ মানুষ আমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, হায়দরাবাদ, কলকাতা, মুম্বই ও পুনে শহরের বাসিন্দা। অর্থাৎ বড় শহরগুলিতেই এই ঝোঁক বেশি। গ্রাহকদের মধ্যেও অধিকাংশই উচ্চবিত্ত এবং সামাজিক ভাবে উঁচুতোলার মানুষ। তবে সংখ্যাটা কম হলেও শহরতলি কিংবা মফসসলের একাধিক মানুষও এ ধরনের সম্পর্কে আগ্রহী, সে কথাও বোঝা যাচ্ছে অ্যাপের গ্রাহকতালিকা থেকেই। ভারত সাধারণভাবে এক বিবাহের দেশ বলে পরিচিত হলেও ক্রমশ যে সেই মানসিকতা বদলে যাচ্ছে, এই অ্যাপের গ্রাহকসংখ্যার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ সে কথারই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।