একদিন কা সুলতান হতে চান? তাহলে এইসব হোটেলের কোনও একটি হতে পারে আপনার গন্তব্য। আজ্ঞে হ্যাঁ, পাহাড় কিংবা সমুদ্র নয়। এখানে ঘুরতে যাওয়ার মূল আকর্ষণ হল হোটেল। রীতিমতো মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করলেই সেখানে রাজার মতো বিলাসবহুল রাত্রিযাপন করতে পারেন যে কেউ। আসুন শুনে নেওয়া যাক, দেশের সবথেকে ব্যয়বহুল হোটেলগুলির কথা।
সারাদিনের ঘোরাঘুরির পর ক্লান্ত হয়ে হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নেওয়া। বেড়াতে গেলে হোটেলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঠিক অতটুকুই। কিন্তু এমনটা কখনও শুনেছেন, যে, একটি নির্দিষ্ট হোটেলই হল মূল গন্তব্য! শুধুমাত্র সেই হোটেলে রাত্রিবাসের উদ্দেশ্য নিয়েই বেড়াতে যাওয়া হয় সেখানে! তবে কোনও দূরের গন্তব্যে ঘুরতে গেলে সামগ্রিকভাবে যা খরচ হয় এইসব হোটেলে একটি রাত কাটাতে হলেই আপনাকে দিতে হবে সেই অঙ্কের টাকা। কারণ এই হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতাও যে রাজকীয় জীবনযাপনের থেকে কোনও অংশে কম নয়।
আরও শুনুন: ধর্ম সংসদে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলার জের, ঘৃণাভাষণে দাঁড়ি টানতে পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের
এইসব বিলাসবহুল হোটেলের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে জয়পুরের রামবাগ প্যালেস। পিঙ্ক সিটি জয়পুরের কেন্দ্রে অবস্থিত এই হোটেলে দেশ বিদেশের বিভিন্ন মানুষ ঘুরতে আসেন। ১৮৩৫ সালে প্রায় ৪৭ একর জায়গা জুড়ে তৎকালীন রাজা একটি বাগানবাড়ি তৈরি করেছিলেন। তারপর ১৯৭২ সালে সেই বাড়িটিই হোটেলে রূপান্তরিত হয়। ফলত এই হোটেলটিকে রাজমহল বললেও খুব ভুল বলা হবে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই হোটেলে রাত কাটাতে গেলেও রাজকীয় ভাবেই খরচ করতে হয়। বর্তমান হিসেব অনুযায়ী এই হোটেলে এক রাতের সর্বনিম্ন ভাড়া ২৪ হাজার টাকা। আর সর্বোচ্চ ভাড়া প্রতি রাতের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।
ব্যয়বহুল হোটেলের তালিকায় এরপরেই বলতে হয় যোধপুরের উমেইদ ভবনের কথা। রাজস্থানের যোধপুরের উচ্চতম স্থান হল চিত্তর পাহাড়। আর সেই পাহাড়েই অবস্থিত এই হোটেল। শোনা যায় এই হোটেলটি নাকি ১৯২৮ থেকে ১৯৪২ সালের মাঝামাঝি কোনও সময় তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়াও এই হোটেলটিকে সারা বিশ্বের বৃহত্তম ব্যক্তিগত বাসভবনগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে ধরা হয়। এখানেও একরাত কাটানোর দাম ৪ লক্ষ টাকা।
উদয়পুরের তাজ লেক প্যালেসও কম যায় না। মহারাজা জগৎসিংহ ১৭৪৩ সালে উদয়পুরের পিছোলা হ্রদের মাঝেই তৈরি করেছিলেন জগ নিবাস নামের এক সুবিশাল মহল। পরবর্তীকালে এই প্রাসাদোপম মহলটিই রূপান্তরিত হয় একটি পাঁচতারা হোটেলে। চারিদিক জলে ঘেরা অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই এই হোটেলের অন্যতম আকর্ষণ। এই হোটেলের সর্বোচ্চ ভাড়াও প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
আরও শুনুন: ঘরের ছাদ, দেওয়াল নেই… তবু হোটেল ভাড়া ২৬ হাজার টাকা, কেন জানেন?
তালিকায় এর পরেই স্থান পাবে রাজধানী দিল্লির একটি হোটেল। দিল্লির চাণক্যপুরীতে অবস্থিত লীলা প্যালেস নামের এই হোটেলটি ভারতীয় স্থাপত্যের এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন। এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী কোনও রাজমহলের সৌন্দর্যকেও হার মানায়। পাশাপাশি দেশবিদেশের নামীদামি কিছু রেস্তোরাঁও রয়েছে এই হোটেলটির অন্দরে। স্বাভাবিকভাবেই এই রাজকীয় মহলে থাকার খরচ সাধারণের সাধের বেশ খানিকটা বাইরে। ১১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক রাতের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে এই হোটেলে থাকতে গেলে। রাজারাজড়ার যুগ পেরিয়ে গিয়েছে বটে, তবে রাজকীয় জীবনযাপনের আঁচ কিন্তু এখনও পাওয়া যেতেই পারে এইসব হোটেলের দরুন।