মূল্যবান জিনিস? নাহ, টাকাপয়সা নেই বিশেষ। নেই সোনাদানা, কিংবা বাড়িও। কেবল বই আছে অনেক। মনোনয়ন দাখিল করার সময় নিজের সম্পত্তির হিসেব দিয়ে জানালেন বাম প্রার্থী। কে ইনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সর্বহারাদের কথা বলাই আদর্শ ছিল বাম রাজনীতির। অন্তত যে আদর্শ নিয়ে এই রাজনীতি পথ চলা শুরু করেছিল, সেখানে জুড়ে ছিল সাম্যবাদের স্বপ্ন। মুষ্টিমেয় মানুষ বা একটি শ্রেণির হাতে কুক্ষিগত থাকবে সম্পদ, আর এক বিপুল অংশের মানুষ ভুখা থাকবে, বিশ্বজুড়ে জারি থাকা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই জোর সওয়াল করেছিল বামেরা। সেই কারণেই, নিজেদের জীবনযাপনেও কোনোরকম বিলাসিতার ছোঁয়া রাখার বিপক্ষেই ছিল তারা। যদিও সময় বদলেছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে গিয়েছে আদর্শের ধরনধারণও। বাম রাজনীতি করলেও সকলেই যে এখন তেমন সাদাসিধে জীবনে চলেন, তাও নয়। তবে কপিবুক মেনে সেই আদর্শের কথাই যেন মনে করালেন এক বাম নেতা।
আরও শুনুন:
রংচঙে ছবি নয়, আঁকার খাতা জুড়ে নেমে এসেছে বিধ্বস্ত পৃথিবী! মন ভালো নেই শিশুদেরও
তিনি ডঃ টমাস আইজাক। কেরলের এই বাম নেতা আসন্ন লোকসভা ভোটেও প্রার্থী। এর আগেও দুবার কেরল সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি, চারবার বিধায়ক হয়েছেন। তবে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকলেও জীবনযাত্রায় বিশেষ বদল ঘটেনি তাঁর। এখনও তাঁর নিজের না আছে কোনও বাড়ি, না আছে জমিজমা। এমনকি সোনাদানা বা টাকাপয়সাও যে বিশেষ আছে তাও বলা যাবে না। কেবল একটিমাত্র মূল্যবান জিনিসই সযত্নে আগলে রেখেছেন তিনি। সেখানে কোনও আদর্শ বা দলীয় নীতির পরোয়া করতে তিনি নারাজ। আর তা হল বই। বিপুল এক বইয়ের ভাণ্ডারই তাঁর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি, অন্য কিছুই নয়। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় নিজের সম্পত্তির যে হিসেব দাখিল করেছেন টমাস, সেখান থেকেই সামনে এসেছে এই তথ্য।
আরও শুনুন:
বেতন কমলে আপত্তি নেই ৬৪ শতাংশ ভারতীয়ের! নেপথ্যে কী কারণ?
এমনিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় একেকজন নেতানেত্রীর সম্পত্তির হিসেব চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। একাধিক বাড়ি গাড়ি, সোনা গয়না, নগদ টাকা, সবকিছুই উঠে আসে সে হিসেবে। বিশেষ করে মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর এমনিতেও আয় বাড়ে। কিন্তু আইজাক এখনও থাকেন তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে। আর সে বাড়িতেই থাকে তাঁর ২০ হাজারের বেশি বই, যাদের আর্থিক মূল্য প্রায় দশ লাখ টাকার কাছাকাছি। টাকার হিসেবে মোটামুটি লাখ চারেক টাকার সঞ্চয় আছে তাঁর। কিন্তু তা নিয়ে তিনি বিশেষ ভাবিত নন। বরং আক্ষরিক অর্থেই বইয়ের সংগ্রহই বেশি দামি এই বাম নেতার কাছে।