চাঁদ ও মঙ্গল নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। সেখানে প্রাণ আছে কী নেই, ভবিষ্যতে মানুষ সেখানে উপনিবেশ গড়তে পারবে কি না, তা নিয়েও খোঁজ চালিয়েছেন ও চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এবার বুধ নিয়েও একই ধরনের খোঁজ চালাতে চলেছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির নয়া স্পেসক্রাফ্ট। কী খবর দেবে সেই নয়া মহাকাশযান? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মানুষের ‘মিশন মঙ্গল’ এতদিনে সারা। এবারের মিশন বুধে অর্থাৎ বুধ গ্রহে। সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধে পাড়ি দিতে চলেছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। যে স্পেসক্রাফ্টটি পাড়ি দিতে চলেছে বুধে, তার নাম ‘বাপি কলোম্বো’। প্রখ্যাত ইতালিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানী তথা মহাকাশচারীর নামেই এই নামকরণ। ইতিমধ্যে স্পেসক্রাফ্ট তৈরি। কথা আছে, স্পেসক্রাফ্টটি একধিক উড়ান দেবে মহাকাশে। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রথম যাত্রায় মহাকাশযানটি পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে, দুবার শুক্রের পাড়ায় টহল দিয়ে তারপর বুধের চারদিকে পাক খাবে।
এই পর্বে তার মূল কাজ কী হবে?
বুধকে আরও ভাল করে জানা ও বোঝার দায়িত্ব নেবে সে। প্রচুর ছবি তুলবে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির নয়া স্পেসক্রাফ্ট। শুধু ছবিই তুলবে না। সেই ছবি সঙ্গে সঙ্গে চালান করবে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে, বিজ্ঞানীদের কাছে। সব ঠিক থাকলে এই অক্টোবরে বুধের উদ্দেশে রওনা দেবে ইএসএ-র স্পেসক্রাফ্টটি। ২০২৫ সালের মধ্যে বুধের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে সে। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, বুধের ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছে যাবে মহাকাশযানটি। কক্ষপথ থেকেই অজানা গ্রহের অন্দরমহলের ছবি তুলে পাঠাবে সে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সিটি জানিয়েছে, বুধের পৃষ্ঠদেশ ও ভেতরের ছবি তুলবে এই স্পেসক্রাফ্ট।
আরও শুনুন: গন্ধ মাংসের মতো, ওজন অন্তত ৫০ কেজি… কোথায় রয়েছে পৃথিবীর এই প্রাচীন ফুল?
বিজ্ঞানীদের মতে, বুধের জন্ম ৪৬০ কোটি বছর আগে। গ্রহটির আকার নাকি ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। এর আগে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান মেরিনার-১০ ও মেসেঞ্জার গিয়েছিল বুধের কক্ষপথে। সেখানে ঘুরেফিরে ছবি তুলে দুটি মহাকাশযানই জানিয়ে ছিল, গ্রহটি দুই থেকে চার কিলোমিটার ছোট হয়ে গিয়েছে। এবার ইএসএ-র মহাকাশযান কী সংবাদ দেয় সেটাই এখন দেখার। তবে, এবারে শুধু বুধেই পাড়ি দেবে না স্পেসক্রাফ্ট ‘বাপি কলোম্বো’। এইসঙ্গে শুক্রেও নজর রাখবে সে।
আরও শুনুন: নরওয়েতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বীজের ব্যাংক, যা রসদের ভরসা দেয় গোটা দুনিয়াকে
আসলে, একদিকে যত বেশি করে মানুষের বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী, বিশ্ব উষ্ণায়নে তথা জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে, তত বেশি করে ভিনগ্রহ নিয়ে চর্চা বাড়ছে। কদিন আগেই জানা গিয়েছিল, আগামী দেড়-দুই দশকের মধ্যে মহাকাশে উপনিবেশ গড়তে চাইছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। মানুষের ঘাম-রক্ত-মূত্র ও চোখের জল দিয়ে চাঁদে ও মঙ্গলে ইমারত গড়া সম্ভব বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। হয়তো সেই একই কারণে এবার দ্রুত বুধকেও জেনে নিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।