১৫ বছর ধরে অসুস্থ। এতগুলো বছর সিক লিভেই রয়েছেন। তবু নির্দিষ্ট সময় বেতন পাঠিয়েছে তাঁর অফিস। কিন্তু তাতে কি! এতগুলো বছর কেন বেতন বাড়ানো হয়নি? সম্প্রতি, সেই অভিযোগেই সরব হয়েছেন এক ব্যক্তি। এমনকি এই নিয়ে সংস্থার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন তিনি। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন শুনে নিই।
‘অল্পেতে খুশি হবে দামোদর শেঠ কি/ মুড়কির মোয়া চাই, চাই ভাজা ভেটকি।’ এই ঘটনা যেন রবি ঠাকুরের সেই কবিতার কথাই মনে করিয়ে দেয়। যদিও রবি ঠাকুরের দামোদর শেঠ খাবার পেয়েই খুশি ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে, তিনি খাবারের দাবি করেননি। বরং অদ্ভুত এক আবদার করেছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সিক লিভে থেকেও যিনি বেতন পেয়েছেন, তিনিই এবার সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কারণ, এই বছরগুলোতে তাঁর এতটুকু বেতন বাড়েনি।
আরও শুনুন: ক্লাসেই পড়ুয়াদের সঙ্গে ‘চটুল’ নাচে মাতোয়ারা শিক্ষিকা, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিতর্ক
যেখানে, রোজ অফিস গিয়েও অনেক কর্মীর বেতনবৃদ্ধি অনিশ্চিত, সেখানে এই ছুটি-তে থাকা ব্যক্তির আবদার অবশ্যই অদ্ভুত বলা চলে। তবে এমনটা একেবারেই মনে করেন না ব্রিটেনের এই সিনিয়র আইটি কর্মী। ২০০৮ সালে অসুস্থতার কারণে তিনি ছুটি নিয়েছিলেন। তারপর কেটে গিয়েছে ১৫টা বছর। এতদিন ধরে সিক লিভেই রয়েছেন তিনি। প্রথম কয়েক বছর, তাও অন্তত ২০১৩ সাল অবধি অন্যান্য কর্মীদের মতোই স্বাভাবিক হারে বেতনবৃদ্ধি হতো তাঁর। কিন্তু একজন কর্মী যিনি দীর্ঘদিন অফিস আসতে পারছেন না, তাঁকে আর কাঁহাতক এত সুবিধা দেওয়া যায়। তাই ১৩ সালের শেষের দিকে ওই ব্যক্তিকে ‘ডিজএবিলিটি প্ল্যান’-এর আওতায় ফেলে দেয় সংস্থা। যে সমস্ত কর্মীরা শারীরিক অসুস্থতার জেরে কাজ করতে অক্ষম তাঁদের এই বিভাগে রাখা হয়। এঁদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয় সংস্থা। কাজ না করলেও এঁরা চাকরি থেকে বরখাস্ত হন না। একইসঙ্গে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় বেতনও পান। এই ব্যক্তিও সেইমতো বিগত ১০ বছর ধরে কোনও কাজ না করেই বেতন পেয়েছেন। কিন্তু সেই বেতন নতুন করে আর বাড়েনি। এতদিন ধরে একই টাকা বেতন হিসেবে পেয়ে আসছেন তিনি। যদিও সেই টাকাও সামান্য নয়। তিনি এক বছরে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা বেতন পান। কিন্তু তাতে কি! অন্যান্য কর্মীদের মতো তাঁর বেতন কেন বাড়ানো হয়নি, তাই নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: হরিয়ানায় আজব নিয়ম! কর্মক্ষেত্রেও মিলবে বিয়ার, তবে মানতে হবে শর্ত
তাঁর দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছুরই দাম বেড়েছে। তাই ২০১৩ সালে যা বেতন পেতেন এখনও যদি তাই পান, তাহলে কী করে চলবে! তাঁর মনে হয়েছে ‘ডিজএবিলিটি প্ল্যান’-র জেরে আসলে তাঁকে ঠকানো হচ্ছে। তাই সংস্থার বিরুদ্ধে একটি মামলাই করে ফেলেছেন তিনি। যদিও তাঁর এই দাবি কার্যত খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। তিনি এমনিতেই ছুটিতে থাকার সুবিধা ভোগ করেন। তাই বেতন বৃদ্ধির দাবি জানানো একেবারেই অনুচিৎ বলে মনে করেছেন বিচারপতি। উলটে বিচারকের দাবি, ওই ব্যক্তি যতটুকু বেতন পান তা যথেষ্ট। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন ভবিষ্যতে যেন ওই ব্যক্তির বেতন একই রাখা হয়। তাই যতই আপত্তি থাকুক অবসর পর্যন্ত সংস্থার দেওয়া বেতনই এবার খুশি থাকতে বাধ্য রইলেন ওই ব্যক্তি।