দুরন্ত ঘূর্ণির পাকে নাকি রং বদলায় দুনিয়া জুড়ে। কবির মত এমনটাই। কিন্তু বাস্তবেও কি বদলাতে পারে এই দুনিয়ার কোনও জিনিসের রং? গবেষকরা জানাচ্ছেন, প্রকৃতিতে বিভিন্ন পরিবর্তনের ফলে নাকি তেমনই ঘটছে ফুলের দুনিয়ায়। কেন রংবদলের পথে ফুলেরা? শুনে নিন।
বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপজ্জনক ধাপে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। ইতিমধ্যেই গলতে শুরু করেছে মেরুপ্রদেশের বরফও। হিমবাহগুলি গলতে থাকায় বাড়তে শুরু করেছে সমুদ্রের জলস্তর। পরিবেশ দূষণ ও উষ্ণায়নের ফলে ক্রমশ ফুটো হচ্ছে ওজোন স্তর। যার ফলে পৃথিবীতে সরাসরি এসে পড়ছে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। এমন চলতে থাকলে অচিরেই ফুরোবে পৃথিবীর আয়ু। এ নিয়ে বহুদিন ধরেই সতর্ক করে এসেছেন পরিবেশবিদেরা। ইতিমধ্যেই বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে বহু প্রাণী। শুধু প্রাণীজগতের উপরেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে উদ্ভিদজগতেও। কীরকম?
আরও শুনুন: বিশ্ব উষ্ণায়নে উষ্ণতা হারাচ্ছে সম্পর্ক, ডিভোর্সের পথে হাঁটছে সামুদ্রিক আলবাট্রস-রাও
সম্প্রতি একটি বায়োলজিকাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র জানিয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়ন ও ওজোন স্তর ফুটো হয়ে যাওয়ার ফলে ক্রমশ ফ্যাকাশে হচ্ছে ফুলের রং। আর বিজ্ঞানীদের দাবি, তার জন্য দায়ী সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। উদ্ভিদের মধ্যে থাকে এক ধরনের রঞ্জক, যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেওয়ার কাজ করে। দূষণের ফলে ওজোন স্তর ফুটো হওয়ার জেরে পৃথিবীতে সরাসরি এসে পড়ছে ওই অতিবেগুনি রশ্মি। আর তা প্রতিহত করতে গাছেরা নিজেদের শরীরের ওই রঞ্জকের পরিমাণ বাড়িয়েই চলেছে। যার ফলে রং পরিবর্তন হচ্ছে ফুলেরও।
আরও শুনুন: পরিবেশ সংক্রান্ত ভাবনায় গুরুত্ব পাচ্ছে ‘Net Zero Emissions’, এর অর্থ কী?
এই গবেষণার উদ্দেশ্যে ১৯৪১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অন্তত ১২৩৮ রকম হার্বেরিয়াম নমুনা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আলট্রাভায়োলেট পিগমেন্টের পরিবর্তন বোঝার জন্য তাঁরা ব্যবহার করেন বিশেষ ধরনের ক্যামেরা। আর তাতেই ধরা পড়ে বিভিন্ন জায়গা ও সময়ভেদে কীভাবে বদলে বদলে গিয়েছে ফুলের রং। দেখা গিয়েছে প্রতি বছরে গাছেদের শরীরে অন্তত ২ শতাংশ করে বেড়েছে এই বিশেষ অতিবেগুনি রঞ্জক। চেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উদ্ভিদবিদ জানিয়েছেন, এই ধরনের রঞ্জক আদতে খালি চোখে দেখা যায় না। তবে গাছেদের জন্য এটি সানস্ক্রিনের মতোই কাজ করে বলা যায়।
বাকি অংশ শুনে নিন।