প্রবল যানজটে রাস্তায় আটকে পড়েছেন ডাক্তার। এদিকে অপারেশন থিয়েটারে কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন রোগিণী। আর এই খবর জানতে পেরেই নজিরবিহীন কর্তব্যবোধের পরিচয় দিলেন ওই চিকিৎসক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বাহ্যিক অসুবিধা কম ছিল না। কিন্তু সেসব কিছুকে কার্যত উপেক্ষা করে চিকিৎসক হিসেবে নিজের কর্তব্যকেই সবার আগে ঠাঁই দিলেন বেঙ্গালুরু শহরের এই চিকিৎসক। হাসপাতালে তাঁর অপেক্ষায় থাকা রোগীদের কথা ভেবে একটানা ৪৫ মিনিট দৌড়ে হাসপাতালে পৌঁছলেন তিনি। আর সেইসঙ্গেই বেনজির কর্তব্যপরায়ণতার পরিচয় দিলেন তিনি।
আরও শুনুন: স্কুলের শৌচাগারে সন্তানের জন্ম, পেন দিয়ে নাড়ি কাটল ১৬ বছরের কিশোরী
কী ঘটেছে ঠিক? আসছি সে কথাতেই।
এমনিতেই ট্রাফিক জ্যামের জন্য কুখ্যাত বেঙ্গালুরু শহর। তার উপরে প্রচণ্ড বৃষ্টি আর জমা জলের জেরে শহর জুড়ে তৈরি হয়েছিল যানজট। আর সেই ভিড়েই আটকে গিয়েছিল চিকিৎসক গোবিন্দ নন্দকুমারের গাড়িটিও। সরজাপুর-মারাঠাহাল্লি রাস্তায় যানজটে আটকে পড়ে তাঁর গাড়ি। কার্যত গাড়িতে বসে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না, কিন্তু সেই পথ বেছে নিতে চাননি ওই চিকিৎসক। মণিপাল হাসপাতালের ওই গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি সার্জন আসলে একটি জটিল সার্জারি করতেই তখন হাসপাতালের পথে চলেছিলেন। তাঁর এক রোগিণীর ল্যাপারোস্কোপিক গলব্লাডার সার্জারি হওয়ার কথা ছিল সেই দিনে। অস্ত্রোপচারের জন্য না খেয়ে অপেক্ষা করছিলেন ওই রোগিণী। আর চিকিৎসক হিসেবে নন্দকুমার বুঝতে পেরেছিলেন, অতিরিক্ত দেরি করলে রোগিণীর বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাস্তার মাঝখানেই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন ওই চিকিৎসক। তারপর শুরু করেন দৌড়। প্রায় ৪৫ মিনিট দৌড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন তিনি। নিয়মিত জিম করেন বলেই এতখানি রাস্তা তিনি দৌড়ে পেরোতে পেরেছেন বলে দাবি ওই চিকিৎসকের।
আরও শুনুন: মুণ্ডচ্ছেদ করতে হবে হজরত মহম্মদের অসম্মানকারীর, তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পাকিস্তান
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, গত ১৮ বছর ধরে একাধিক জটিল অস্ত্রোপচার করেছেন নন্দকুমার। চিকিৎসক হিসাবে তাঁর সুখ্যাতিও রয়েছে। রোগীদের কথা ভেবে যে অভিনব কাজ করেছেন ওই চিকিৎসক, তাতে চমকে গিয়েছেন সকলেই। কিন্তু তার পাশাপাশিই শহরের এহেন অব্যবস্থার দিকেও আঙুল তুলেছেন অনেকেই। ডঃ নন্দকুমার নিজেই জানিয়েছেন, ওই বিপুল যানজট পেরিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সেরও যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেক্ষেত্রে কোনও রোগী ওই ভিড়ে আটকে পড়লে তাঁর কী অবস্থা হত, তা অনুমান করাই যায়। আর সেই আশঙ্কার দিকেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন ওই চিকিৎসক।
@BPACofficial @BSBommai @sarjapurblr @WFRising @blrcitytraffic sometimes better to run to work ! pic.twitter.com/6mdbLdUdi5
— Govind Nandakumar MD (@docgovind) September 10, 2022