ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক। তাই দিয়েই তৈরি হয়েছে আস্ত একটা বাড়ি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এমনই কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক চিকিৎসক। কোথায় গড়েছেন এমন বাড়ি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাড়ি তৈরি কম ঝক্কির কাজ নয়। খরচও তেমন। তার ওপর ঠিকমতো তদারকি না করলে নানা সমস্যা। ঝক্কি কমাতে আজকাল অনেকেই পছন্দের ঠিকানা হিসেবে বেছে নেন ফ্ল্যাট বাড়ি। কিন্তু তাতেও খরচ হয় যথেষ্টই। তারওপর ফ্ল্যাট তৈরির জন্য অনেকসময় বন জঙ্গল কেটে সাফ করে ফেলা হয়। কোথাও আবার পুকুর বুঝিয়ে তৈরি হয় উঁচু ইমারত। তাই পরিবেশের কথা ভাবলে ফ্ল্যাটবাড়ির সমস্যা হাজার। এইসব দেখেই অদ্ভুত এক ফন্দি আঁটেন মহারাষ্ট্রের চিকিৎসক। যাতে খরচও কম হবে, আর পরিবেশেরও উপকার হবে। অনেক ভেবে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করেন আস্ত একটা বাড়ি।
আরও শুনুন: শুধু বিরাট-রোহিতেই বাজিমাত নয়! টিম ইন্ডিয়ার জয়ের নেপথ্যে হাত এই চা-ওয়ালারও?
এভাবে খরচ নাহয় কমেছে, কিন্তু পরিবেশ রক্ষা হল কই?
প্লাস্টিক যে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সেকথা সকলেরই জানা। কারণ প্লাস্টিক কোনওভাবেই মাটির সঙ্গে মেশে না। এমনকি দীর্ঘদিন জলে পড়ে থাকলেও কোনও সমস্যা নেই। তাই চিপস, কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল, প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ সহ বিভিন্ন জিনিস বর্জ্য হিসেবে পরিবেশ দূষণ বাড়িয়ে তোলে। আর সেই প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করেই নিজের সাধের বাড়িটি তৈরি করেছেন ওই চিকিৎসক। অর্থাৎ তাঁর এই কাজের দরুন, পরিবেশ থেকে বেশ খানিকটা প্লাস্টিক বর্জ্য কমেছে। আর সেই পরিমানটা প্রায় ১৩ টন। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বাড়ি তৈরিরে মোট এত পরিমান প্লাস্টিক বর্জ্যই ব্যবহার করেছেন ওই চিকিৎসক।
আরও শুনুন: রাজপথে এগিয়ে চলে জগন্নাথের রথ, ঝাড়ু হাতে রাস্তা সাফ করেন মহম্মদ আখতার
যদিও বাড়িটিতে কেউ থাকেন না। মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর এলাকার একটি বোটানিক্যাল গার্ডেনে বাড়িটি রাখা হয়েছে। যে কেউ চাইলে ভিতরে যেতে পারেন। বসার জায়গা অবধি রয়েছে ভিতরে। বাড়িটি দোতলা। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি প্লাস্টিকের তৈরি। স্রেফ এটাই যে এর বিশেষত্ব তা নয়। বাড়িটির প্রতিটা দেওয়াল, সিঁড়ি, ছাদ চাইলেই আলাদা করা যায়। গোটা বাড়িটা খুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়াও সম্ভব। মনে হতে পারে, এমন বাড়িতে আদৌ থাকা যায়? চিকিৎসকের দাবি, সাধারণ বাড়ির চাইতেও মজবুত এই প্লাস্টিক বাড়ি। একদিনে অবশ্য এত পরিমাণ প্লাস্টিক জমা হয়নি। বছর খানেক সময় লেগেছে স্রেফ বর্জ্য প্লাস্টিক যোগাড় করতে। তারপর সেসব বিশেষ পদ্ধতিতে বদলানো হয়েছে বাড়ি তৈরির সামগ্রীতে। এখানে অবশ্য আলাদা করে ইট, বালির প্রয়োজন হয়নি। আস্ত একটা দেওয়ালই তৈরি করে নেওয়া হয়েছে বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়ে। তারপর স্ক্রু দিয়ে জুড়ে বানিয়ে নেওয়া হয়েছে গোটা বাড়ি। পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বর্জ্য কমানো যে কতটা জরুরি, তা বোঝাতেই এই উদ্যোগ। চিকিৎসকের দাবি, এইভাবে প্রত্যেকে সচেতন হলেই পরিবেশ দূষণ অনেকটা কমবে। প্লাস্টিক ব্যবহারে কোনও সমস্যা নেই, কিন্তু প্রয়োজন তার সঠিক পূনর্নবিকরণ। তাহলেই সমস্যা চিরতে মিটবে।