আমাদের দেশে মন্দিরের অভাব নেই। সেখানে পুজো দেওয়ার ধরনেও রয়েছে হাজার বৈচিত্র। কোথাও পুজো দেওয়ার চল চকোলেট দিয়ে, কোথাও আবার পুজো দিতে হয় খেলনা দিয়ে। কিন্তু জীবন্ত কাঁকড়া দিয়ে পুজো দেওয়ার কথা শুনেছেন কখনও? এমনটাও হয় দেশের এক মন্দিরে। কোথায় সেই মন্দির জানেন? আসুন শুনে নিই।
যে কোনও মন্দিরের সামনে গেলেই ফুল বা মিষ্টির দোকান চোখে পড়ে। অনেকেই সেখান থেকে জিনিস কিনে পুজো দেন। কিন্তু এমন এক মন্দির রয়েছে যেখানে এই ফুল,ফল বা মিষ্টির বদলে জ্যান্ত কাঁকড়া বিক্রি হতে দেখা যায়। কারণ, ওই মন্দিরের আরাধ্যকে জীবন্ত কাঁকড়া দিয়ে পুজো দেওয়াই চল।
আরও শুনুন: বিদেশযাত্রার স্বপ্ন পূরণে খেলনা বিমান দিয়েই পুজো দেন ভক্তরা, কোথায় জানেন?
কথা বলছি, গুজরাটের এক শিবমন্দির সম্পর্কে। শিবপুজোয় প্রধান উপকরণ গঙ্গাজল। সেইসঙ্গে দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গ স্নানেরও চল রয়েছে। তবে গুজরাটের রুণ্ডনাথ মহাদেব মন্দিরে, সেসবের বদলে জীবন্ত কাঁকড়া দিয়ে পুজো দেওয়াই নিয়ম। মন্দিরের বাইরের দোকানগুলোতেই অবশ্য জীবন্ত কাঁকড়া পাওয়া যায়। সেখান থেকে কিনে কিংবা অন্য কোনও জায়গা থেকে কাঁকড়া নিয়ে এই মন্দিরে ভিড় জমান ভক্তরা। স্থানীয় বিশ্বাস, এই মন্দিরে জীবন্ত কাঁকড়া দিয়ে পুজো দিলে যে কোনও রোগ সারতে পারে। তাই দীর্ঘদিন ধরে সারছে না এমন অসুখে আরোগ্য কামনায় এই মন্দিরে পুজো দেন অনেকেই। অবশ্যই প্রধান উপকরণ হিসেবে দেওয়া হয় কাঁকড়া। মন্দিরটি বেশ পুরনো। তাই এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা লোককাহিনির সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। তবে সব ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, রুণ্ডনাথ মহাদেবের কৃপায় উপকৃত হয়েছেন ভক্তরা। তবে মূলত যারা কানে শুনতে পান না, বা শ্রবণ সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য এই মন্দিরে পুজো দেওয়া বিশেষ লাভজনক। স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, কানে শোনার সমস্যা থাকলে মহাদেবের এই বিশেষ রূপ অবশ্যই আরোগ্যের বরদান করেন। প্রতিবছর বার্ষিক উৎসবে এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। প্রায় সকলের পুজোর ডালাতেই কাঁকড়া থাকে। কেউ কেউ ফুল মালাও নিয়ে আসেন। কিন্তু মূলত কাঁকড়া দিয়েই পুজো দেওয়ার চল। বছরের পর বছর ধরে বিশ্বাসের উপর ভর করে এই প্রথা পালন করে আসছেন অগুনিত ভক্ত।