কেরিয়ারের ছুট থেকে টার্গেট ছোঁয়ার দৌড়, হাজার বছর ধরে পথ হেঁটে যাওয়াই এখন নিয়তি। তার মধ্যে সম্পর্ক গড়তে হলে ভরসা ডেটিং অ্যাপ। কিন্তু তাতেই ক্লান্তি বাড়ছে আরও। সেই কারণেই কি সত্যিই দু-দণ্ড মুখোমুখি বসার অবসর খুঁজছে নতুন প্রজন্ম?
দিনের একটা বড় সময়ই কেটে যায় অফিসের খাঁচায়। বাড়ি ফিরেও ছুটি নেই। অনলাইন মিটিং, আলাপ আলোচনার ভিড়ে নিজের জন্য সময় কোথায়! ফলে ছুটির দিনে এসে ভর করে যত রাজ্যের ক্লান্তি, আর সেদিনই জমে থাকে যত রাজ্যের ব্যক্তিগত কাজ। এর মধ্যে ডেটে যাওয়ার সুযোগ কোথায়! এই ব্যস্ত জীবনে জীবনসঙ্গীর সন্ধান করতে তরুণ প্রজন্মের ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘অনলাইন ডেটিং সাইট’। কিন্তু কথা হল, তাতেই কি মোক্ষলাভ? নাকি রোজকার ফর্মাল যাপনের পর প্রেমের ক্ষেত্রেও এই ভারচুয়াল সম্পর্ক বাড়তি অক্সিজেন দিতে পারছে না?
আরও শুনুন:
প্রেম ভাঙলেই ‘দোষ’! সঙ্গী বদলালেই কি শাস্তি দেবে আদালত?
অনলাইন ডেটিং অ্যাপে প্রেম করা মানেই খানিক বাড়তি সতর্ক থাকা। ভারচুয়াল দুনিয়ায় তথ্য এখন সবচেয়ে দামি জিনিস। নানাভাবে তথ্য চুরি আর তার অপব্যবহার যেভাবে থাবা গেড়ে বসছে, তার ছাপ ভালোমতো পড়েছে ডেটিং সাইটেও। এখানেও ফ্রডের ঘটনা কম নয়। যে কারণে অনলাইন সাইটে আলাপ হওয়া মাত্রই ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি দেওয়া, বেতনের বিষয় নিয়ে কথা বলতে বারণ করছেন ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৪২ শতাংশ। সুতরাং যে ব্যক্তিগত সম্পর্কে মানুষ নিজের গণ্ডিগুলো একটু শিথিল করতে পারে, এখানে তারও সুযোগ কম। তার উপর রয়েছে ভারচুয়ালি কথা বলার ক্লান্তি। সত্যি বলতে, কেবল মুখের কথা দিয়ে তো ভাষা তৈরি হয় না। পাশাপাশি বসে থাকাই হোক, কিংবা আলতো ছোঁয়া, সম্পর্কের ভাষার নানা রকমফের। সেখানে অনলাইন ডেটিং-এ ক্রমাগত টেক্সট কিংবা কলে কথা চালাচালি। চুপ করে থাকা সেখানে কোনও বার্তা পৌঁছে দেয় না। আর এই সবকিছুই একসময় পর ক্লান্ত করছে, বুঝতে পারছেন অনেকেই।
আরও শুনুন:
বাবার পদবি ব্যবহার করতে লাগবে স্বামীর অনুমতি! এ দেশের মেয়েদের বড় হতে নেই?
তাই ক্রমশ অনলাইন ডেটিং অ্যাপের জায়গায় হাতছোঁয়া দূরত্বে দেখা করার কথাই ভাবছেন তরুণ প্রজন্মের অনেকে। তার জন্যই ডেটিং অ্যাপের মতো অফলাইন ব্যবসাও খোলার উদ্যোগ নিচ্ছেন কেউ কেউ। যেখানে একাধিক তরুণ তরুণীকে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, যাতে খানিক ওল্ড ফ্যাশন মেনেই প্রেম খুঁজে পেতে পারেন তাঁরা। আসলে এই ব্যস্ত সময়ও বুঝতে পারছে, হাজার বছর পথ হেঁটে আসার পর মুখোমুখি বসবার অবসরটুকু আসলে বড় প্রয়োজন। সেই মুখোমুখি হতে পারাতেই নীড়ের আশ্রয় থাকে। সেখানে বাইরের দুনিয়ার নিয়মমাফিক ফর্মালিটি থেকে খানিক ছুটি মঞ্জুর হয়ে যায়। সেই চাহিদা মেনেই প্রেমের ভাষাও হয়তো আবার বদলাবে নতুন করেই।