জলে নামার পর মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়েছে কুমির, এমনটা শোনাই যায়। কিন্তু জলে ডুবে যাওয়া কাউকে ফিরিয়ে দিয়েছে কুমির, এমনটা শুনেছেন কখনও? সম্প্রতি সামনে এল তেমনই এক আশ্চর্য ঘটনা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যেসব নদীতে কুমিরের দেখা মেলে, সেখানে জলে নামা যে বিপজ্জনক তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। জলে নামার পর কাকে যে কখন কুমির টেনে নিয়ে যাবে, সেই ভয়েই কাঁটা হয়ে থাকেন সকলে। কিন্তু সম্প্রতি একটি ঘটনায় সেই ধারণাই যেন বদলে গেল। দেখা গেল, কোনও মানুষকে টেনে নিয়ে যাওয়ার বদলে জলে ডুবে যাওয়া একটি শিশুকেই ফিরিয়ে দিল একটি কুমির। শিশুটি অবশ্য তখন আর বেঁচে ছিল না। জলে ডুবে আগেই মৃত্যু হয়েছিল তার। কিন্তু তার মৃতদেহও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তার পরিবারের পক্ষে। আর সেই কাজটিই করে দিয়েছে কুমিরটি। যে পশুটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে হিংস্র খুনিদের অন্যতম বলে চিহ্নিত করে থাকি আমরা, তার এমন আচরণে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। যেখানে কোনও নৃশংস কাজকে পাশবিকতা বলে চিহ্নিত করা হয়, সেখানে একটি পশুই উলটে গড়ে দিয়েছে মানবিকতার নজির, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এমনটাই মনে করছেন সকলে।
আরও শুনুন: অয্যোধ্যায় তৈরি হচ্ছে রামলালার মূর্তি, সীতার ‘জন্মভূমি’ নেপাল থেকে এল বিশেষ শিলা
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
জানা গিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ায় ঘটেছে এই আশ্চর্য ঘটনাটি। সে দেশের পূর্ব কালিমান্তান এলাকার একটি চার বছরের ছেলে দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। মহম্মদ জিয়াদ উইজায়া নামের ওই খুদেকে উদ্ধার করতে পথে নেমেছিলেন স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের সদস্যরাও। শেষ পর্যন্ত জানা যায় একা একা খেলতে খেলতে বাড়ির কাছেই মাহাকাম নদীতে নেমে গিয়েছিল ওই খুদে। জলে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে এমনটাই ধরে নেন সকলে। তারপরেও যাতে তার দেহটুকু ফিরে পাওয়া যায়, সেই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু তাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে ওই নদীতে একটি জেলে নৌকোয় থাকা মাঝিরা দেখতে পান, একটি বিশাল আকারের কুমির সাঁতার কেটে আসছে তাদের দিকেই। আর তার পিঠে রয়েছে ওই খুদের দেহ। নৌকার পাশে তার মৃতদেহ ফেলে দিয়ে ফের গভীর জলে ফিরে যায় কুমিরটি। শিশুটির শরীরে কুমিরের দাঁত বসানোর কোনোরকম চিহ্ন ছিল না বলেই জানা গিয়েছে।
আরও শুনুন: ‘বয়কট গ্যাং’-এর সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে জয়, কোন মন্ত্রে হাসিল শাহরুখের?
প্রতি বছরে বিশ্ব জুড়ে প্রায় এক হাজার মানুষ কুমিরের পেটে যায়, এমনটাই জানায় সমীক্ষা। আর সেই কারণেই এই প্রাণীটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে হিংস্র খুনিদের অন্যতম বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই ঘটনার পর সেই ধারণা হয়তো খানিক বদলেই যাবে, এমনটাই মনে করছেন সকলে।