বাড়িতে পোষ্যকে একা রেখে এসে নিশ্চই সারাটা দিন দুশ্চিন্তা হয় খুব। বিড়ালেরা একা থাকতে নাকি খুব একটা অপছন্দ করে না। তবে কুকুরদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা। মালিককে ছেড়ে থাকতে নাকি তাদের ঘোরতর মনখারাপ হয়। তবে তাদের একা বোকা থাকার দিন এ বার শেষ। কুকুরদের একাকিত্ব ঘোচাতে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এক আশ্চর্য ফোনের। শুনবেন নাকি সেই ডগফোনের গল্প?
কুকুর বলে কি তাদের শখ আহ্লাদ থাকতে নেই। তাদের কি ইচ্ছা হয় না ফোন কানে গুঁজে বন্ধুকে দুটো মনের কথা বলতে। আলবাত হয়। আর তাদের কথা ভেবেই বিশেষ একধরনের ডগ-ফোন আবিষ্কার করে ফেলেছেন স্কটল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডের কয়েক জন বিজ্ঞানী। প্রিয় পোষ্যের ফোন একটু বিশেষ তো হবেই। তাই তাদের জন্য বানানো হয়েছে বিশেষ ধরনের বেসবল ফোন।
দেখতে অবিকল বেসবলের মতোই। সুন্দর, রঙচঙে। যা দেখলেই আকৃষ্ট হবে পোষ্যদের দল। যখনই সেটাকে মুখে নিয়ে নাড়াচাড়া করবে কুকুরটি, ওমনি সরাসরি ভিডিয়ো কল চলে যাবে মালিকের ফোনে। চাইলে পোষ্যের খোঁজ নিতে পারবেন মালিকও।
আরও শুনুন: মায়ের খুনের বদলা, ছোট্ট প্রাণীটি কী করেছিল জানেন?
ড. ইলিয়ানা হিরস্কিজ ডগলাস। ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো-তে অ্যানিম্যাল কম্পিউটার ইন্টারাকশন বিষয়টি পড়ান ইলিয়ানা। তাঁরই মাথা থেকে বেড়িয়েছে অভিনব এই ভাবনা। ফিনল্যান্ডের অল্টো ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক তাঁর এই কাজে সাহায্য করেছেন।
শুনুন, কীভাবে কাজ করে এই ডগফোন?
ইলিয়ানা জানিয়েছেন, এই ডগফোনের ভিতরে রয়েছে উত্তেজনা মাপার একধরনের সেন্সর, যাকে তাঁরা বলছেন অ্যাকসিলেরোমিটার। যখনই পোষ্য ওই বিশেষ বলটি মুখে নিয়ে নাড়াচাড়া করবে, তা ধরা পড়বে ওই সেন্সরে। আর তাতেই সরাসরি ফোন চলে যাবে সোজা মালিকের কাছে। উল্টোদিকে মালিক পাল্টা ফোন করলে বলটি নড়াচড়া করতে শুরু করবে। যা কুকুরকে আকৃষ্ট করবে। এই যোগাযোগ তৈরি হওয়ার ফলে পোষ্যদের একা থাকার চাপ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন ইলিয়ানা ও তাঁর বন্ধুরা। আদতে একটি বেসবলের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে সব যন্ত্রপাতি, তার পর সেটিকে রাখা হয়েছে বেসবলের মতোই দেখতে অন্য একটি বল আকৃতির ব্যাগের ভিতরে, যা দেখতে নতুন একটি বলের মতোই।
আরও শুনুন: এই ব্রিজে উঠলেই আত্মহত্যা করে বসে পোষা কুকুরেরা, কেন জানেন?
নিজের বছর দশেকের পোষ্য লাব্রাডর জ্যাকের উপরে ইতিমধ্যেই পরীক্ষানিরিক্ষা করে দেখেছেন ইলিয়ানা। তিনি জানিয়েছেন, আট ঘণ্টারও বেশি সময় জ্যাককে ওই ফোনের সঙ্গে ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। প্রায় ১৬ দিন ওই ডগফোন নিয়ে খেলেছে জ্যাক। ওই বলের উপর ঘুমোতে গিয়ে বেশ কয়েকবার ভুলভাল ফোনও করে ফেলেছে। তবে স্ক্রিনে দেখে ইলিয়ানাকে দিব্যি চিনতে পেরেছে জ্যাক। ছুটে এসেছে। ফলে ডগফোন যে কাজ করছে তা বুঝতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ভবিষ্যতে এই ডগফোন যে পোষ্যদের জন্য স্মার্টটয়েজ হয়ে উঠতে চলেছে, এ ব্যাপারেও সন্দেহ নেই তাদের।
বাকি অংশ শুনে নিন।