অফিসে কাজের বড্ড চাপ। চাই সপ্তাহ খানেক ছুটি। পরিবারের সঙ্গে নিজের মতো সময় কাটাতে চাই। সংস্থার কাছে এইটুকুই দাবি। সংস্থারও তাতে নেই কোনও আপত্তি। শুধু বেতনটাই কাটা যাবে এই যা! ঠিক কী বলছে এই সংস্থা? আসুন শুনে নেওয়া কাজ।
বড্ড কাজের চাপ। পরিবারের জন্য সময় চাই। দাবি স্রেফ এটুকুই। সংস্থার কানে পৌঁছেছে সেই খবর। সেইমতো করা হয়েছে পদক্ষেপ। আপত্তি নেই, জানিয়েছে সংস্থা। পরিবারের জন্য, নিজের জন্য, চাইলেই সময় নিতে পারেন কোনও কর্মী। তবে এমনি এমনি নয়, বদলে কাটা যাবে তাঁর মাইনে।
সম্প্রতি এক সংস্থার এমন নিয়ম ঘিরে জোর শোরগোল শুরু হয়েছে। এমনিতে বেসরকারি সংস্থায় কাজের চাপ নিয়ে অনেকেই অভিযোগ তোলেন। কিছুদিন আগে, সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের দাবি জানিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন শিল্পপতি। তারও আগে উঠেছিল সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের দাবি। মূলত যে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তা হল সময়। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য সময় থাকবে কতটুকু, যদি এতটা সময় অফিসে কাটে! এই আবহে উলটো সুরে গাইল এক সংস্থা। চাইলেই, ওই সংস্থার কর্মীরা ফ্যামিলি টাইমের দাবিতে অতিরিক্ত ছুটি কাটাতে পারেন। দিনের মধ্যে যেটুকু সময় ওই সংস্থার তরফে নির্দিষ্ট করা হয়েছে কাজের জন্য, চাইলে কেউ তার থেকে কম কাজও করতে পারেন। কোনও কিছুতেই আপত্তি নেই সংস্থার। তবে একটা শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যতটুকু কাজ, ততটুকুই বেতন মিলবে। অর্থাৎ কাজ কম হলে, সেই মতো কাটা যাবে মাইনে।
‘নো ওয়ার্ক নো পে’, কথাটি কর্পোরেট জগতে বেশ প্রচলিত। তবে সবাইকে যে এমন নিয়ম মানতে হয় তা নয়। উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের তো নয়ই। তবে এই সংস্থা যেন সেই নিয়মই ফেরাচ্ছে, বরং আরও কড়াভাবে। নিয়ম বলে, যে কটা দিন কাজ, সেই কটা দিনের মাইনে মিলবে। তবে ওই সংস্থা যা দাবি করেছে, তার মানেটা দাঁড়াচ্ছে, যেটুকু সময় কাজ, মাইনেও সেইটুকুই। কিভাবে কাজের ভিত্তিতে বেতনের অঙ্ক নির্দিষ্ট হবে, তাও জানানো হয়েছে কর্মীদের। তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ প্রায় সকলেরই। একথা অস্বীকারের উপায় নেই, পরিবারের জন্য সময় সকলেরই দরকার হয়, তাই বলে বেতন কম হলে তো আরও বড় সমস্যা! মাসের শেষে ঠিকমতো টাকা না থাকলে, সংসার চালানো দায় হবে। তাই সংস্থার নয়া নিয়ম দেখে বেজায় ঘাবড়ে গিয়েছেন কর্মীরা। সোশাল দুনিয়ায় এই নিয়ে রীতিমতো সমালচনার ঝড় বয়েছে। সকলেই একযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাতে সংস্থার প্রতিক্রিয়া মেলেনি।কথায় বলে, সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না। এক্ষেত্রে যেন সেই বুদ্ধিই ফেঁদেছে ওই সংস্থা। তবে তা কর্মীদের জন্য ইতিবাচক নয়, তা বলাই বাহুল্য।