আত্মনির্ভর। তবে শক্তিশালী নন। ভরা সভায় এমনই দাবি তরুণীর। নেপথ্যে যুক্তিও রয়েছে। অন্যান্যদের মতো আত্মনির্ভর হলেও নিজেকে শক্তিশালী তকমা দিতে নারাজ এই তরুণী। কিন্তু কেন? নিজের মন্তব্যের ঠিক কী ব্যাখ্যা দিলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
নারী মাত্রেই দশভুজা! এমনটাই ধারণা অনেকের। ঘরে-বাইরে সবকিছু সামলানো নারীর সহজাত অভ্যাস। বিশেষ করে যারা আত্মনির্ভর, স্বাবলম্বী, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ধারণা অনেকেই পোষণ করেন। তবে এই ধারণায় বিশ্বাসী নন বিহারের শ্যারন। পেশায় কৌতুক শিল্পী এই তরুণীর দাবি, তিনি স্বাবলম্বী কিংবা আত্মনির্ভর হলেও শক্তিশালী নন। বরং নিজেকে দুর্বল বলে পরিচয় দিতেই তিনি অধিক স্বছন্দ্য।
কৌতুকশিল্প বরাবরই রোমাঞ্চকর এক বিষয়। সিনেমায়, সিরিজে কৌতুক অভিনেতাদের উপস্থিতি আলাদা মাত্রা যোগ করে। গম্ভীর মুহূর্তেও এঁরা অনায়াসে হাসাতে পারেন। কৌতুক শিল্পের আলাদাভাবেও চর্চা হয়। তার জন্য রয়েছে রিয়্যালিটি শো। নেটদুনিয়ায় এইসব ‘স্টান্ড আপ কমেডির’ বেশ চাহিদা। এমনই এক অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী হিসেবে এসেছিলেন শ্যারন। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সকলকে হাসানোর দায় ছিল তাঁর। কে কতটা হাসছে, বিচারকদের কতটা পছন্দ হচ্ছে সেইমতো মিলবে নম্বর। নিজের সেরাটুকু দিয়ে অনুষ্ঠান করেন শ্যারন। হাততালি আর হাসিতে ফেটে পড়ে দর্শকরা। বিচারকরাও যে গোটা বিষয়টা উপভোগ করেছেন তা বোঝা যাচ্ছিল ভালোই। এরপর শুরু হয় পরিচয় পর্ব। একে একে বিচারকরা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। আসলে, নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠানের আগে প্রতিযোগীদের কিছু প্রশ্নের উত্তর লিখতে হত। সেই উত্তর জমা থাকত বিচারকদের কাছে। অনুষ্ঠান শেষ হলে বিচারকরা জানতে চাইতেন কোন উত্তরের কারণ কী? শ্যারনের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু শ্যারন যে উত্তরগুলো দিয়েছিলেন তা বেশ অবাক করে সকলকে। তার পালটা শ্যারন জবাব আরও আকর্ষণ যোগ করে গোটা বিষয়টায়। সেই কারণেই তাঁর ও বিচারকদের প্রশ্নোত্তরের পর্বটি, বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নেটপাড়ায়।
প্রশ্ন হচ্ছে ঠিক কী বলেছিলেন শ্যারন?
নিজের সম্পর্কে লিখতে বলায় শ্যারন লিখেছিলেন, তিনি একজন ‘উইক’ অথচ ‘ইনডিপেনডেন্ট’ মহিলা। অর্থাৎ স্বাবলম্বী হলেও তিনি দুর্বল। এমনটা সচরাচর কাউকে বলতে শোনা যায় না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন মনের জোর। সেই সাহস থাকলে কেউ নিজেকে দুর্বল ভাবেন কি করে! অথচ শ্যারনের দাবি তিনি দুর্বল। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজন ছিল তাই আত্মনির্ভর হয়েছেন। কিন্তু শক্তিশালী হয়ে ওঠার ক্ষমতা তাঁর নেই। তাই তিনি দুর্বল আত্মনির্ভর মহিলা। এমনটা ভাবতে বা বলতে কোনও সমস্যা নেই তাঁর। শুধু তাই নয়, নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে আরও অনেক কথাই শ্যারন বলেন, যা তথাকথিত আত্মনির্ভর, স্বাবলম্বী, শক্তিশালী মহিলারা বলেন না। সবমিলিয়ে শ্যারনের কথায় অবাক হন বিচারকদের একাংশও। তবে তাঁর অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেছেন সকলেই। নেটদুনিয়াতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও শ্যারনে নিজেকে দুর্বল বলে মেনে নেওয়াটা বেশ অন্যরকম মনে হয়েছে নেটিজেনদের। এই নিয়ে অনেকে নিজেদের মন্তব্য পেশ করেছেন। কেউ কেউ শ্যারনের উদ্দেশে পরামর্শও দিয়েছেন। একইসঙ্গে এমন মন্তব্যের জন্য তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন কেউ কেউ। শক্তিশালী হয়ে ওঠা সহজাত বিষয়, কাউকে জোর করে শক্তিশালী করা যায় না। কেউ যদি নিজেকে দুর্বল ভাবেন তাতেও ভুল কোথায়? এই প্রশ্ন নেটদুনিয়ার অনেকের। সবমিলিয়ে শ্যারনের অনুষ্ঠান এবং সেখানে বলা তাঁর মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলেছে নেটপাড়ায়।
View this post on Instagram