রুজির তাগিদে মেয়েকে ছেড়ে দূর শহরে এসেছিল কাবুলিওয়ালা। তেমনই পরিবার ছেড়ে কাজ খুঁজতে এসেছিলেন এই ব্যক্তি। ১১ বছর ধরে জীবন কেটে গিয়েছে একলাই। কিন্তু তাঁর সেই গল্পটাই এবার বদলে দিলেন কিছু পড়ুয়া। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পেটের দায় বড় দায়। তার তাগিদে প্রিয় সবকিছুকেই ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় মানুষ। হয়তো প্রিয়জনদের ভালো রাখার তাগিদেই তাঁদের ছেড়ে আসতে হয়। যেমনটা হয়েছিল সেই কাবুলিওয়ালাকে। মেয়ের একটুখানি স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে কাবুল থেকে কলকাতায় পাড়ি দিয়েছিল সে। কিন্তু পাকেচক্রে দীর্ঘ কয়েকটা বছর আর ফেরাই হয়নি তার। এই মানুষটির জীবন হয়তো ঠিক একইরকম নয়, তবে ছেড়ে আসা আর না-ফেরার গল্প হয়তো এমন সব মানুষের জীবনেই এক হয়ে যায়। রুজির তাগিদে ঘর ছাড়তে হয়েছিল এই ব্যক্তিকেও। জন্মস্থান নাইজেরিয়া ছেড়ে দূরের দেশে এসে কোনোরকমে একটি কাজও মিলেছে বটে। কিন্তু সে কাজে খাওয়া পরা জুটলেও বাড়ি ফেরার খরচ তাতে কুলোয় না। বিমানের ভাড়া জোগানো তাঁর সাধ্যের বাইরে। তাই ১১ বছর কেটে গেলেও আর বাড়ি ফেরা হয়নি এই ব্যক্তির। পরিবারের থেকে দূরে একা একাই জীবন কেটে গিয়েছে তাঁর।
আরও শুনুন:
মায়ের কবরের পাশে বসে রমজান শুরু গাজার যুবকের
কিন্তু আকস্মিকভাবেই এবার বদলে গিয়েছে এতদিনের গল্পটা। সৌজন্যে কিছু পড়ুয়া। যে কলেজে ওই ব্যক্তি নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন, সেই কলেজেরই পড়ুয়া তাঁরা। ওই রক্ষীর কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁরা দেখেছেন, দেখেছেন কলেজের প্রতি তাঁর মমতাও। আর এই যোগাযোগের মধ্যেই তাঁর জীবনের গল্পটাও জানা হয়ে গিয়েছিল পড়ুয়াদের। আর সে কথা জানার পরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ওই রক্ষীর পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা। সেইমতোই নিজেদের যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে তাঁরা একটি ফান্ড গড়ে ফেলেন। আর সেখানে সংগ্রহ করা টাকাতেই ওই ব্যক্তির যাওয়া আসার টিকিট কিনে দিতে পেরেছেন পড়ুয়ারা। সেই টিকিট হাতে তুলে দিতেই বিস্ময়ে চমকে গিয়েছেন ওই রক্ষীও। পড়ুয়াদের প্রাণ ভরে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমান সময়ে মানুষ ক্রমশই নিজের বৃত্তকে সংকীর্ণ করে তুলছে, এমন কথা বলা হয় প্রায়শই। সেই আত্মকেন্দ্রিক সময়ে দাঁড়িয়েই মানবিকতার এক আশ্চর্য নজির গড়ল এই ঘটনা।