বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ড। বছরভর বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠান থাকে। এবার ভারতেও হতে চলেছে কোল্ডপ্লের কনসার্ট। তবে টিকিট নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ বেঁধেছে। সোশাল মিডিয়া তোলপাড় এই একটা ইস্যুতেই। কী এমন রয়েছে এই কোল্ডপ্লের ঝুলিতে? এত জনপ্রিয়তার কারণটাই বা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রকব্যান্ডের দুনিয়ায় প্রথম সারির সদস্য। ব্রিটিশ ব্যান্ড হলেও কোল্ডপ্লের জগতজোড়া খ্যাতি। তার কারণও রয়েছে যথেষ্ট। প্রথমেই গানের জনপ্রিয়তা। রক মিউজিক পছন্দ করেন এমন সকলেই কোল্ডপ্লের ভক্ত। দ্বিতীয় কারণ এদের লাইভ অনুষ্ঠান। সামনে থেকে একবার তা দেখলে অবাক হতেই হয়। শুধু গান নয়, শ্রোতাদের কীভাবে মাতিয়ে রাখতে হয় তা ভালমতো জানেন ব্যান্ডের সদস্যরা। আর সেই টানেই কনসার্টের জন্য মুখিয়ে থাকেন ভক্তরা। সাধারণত ইউরোপ বা আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে ঘুরে অনুষ্ঠান করে কোল্ডপ্লে। তবে এবার এই গানের দল আসছে ভারতে। আর সেই কনসার্ট নিয়েই শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়ায়।
বিদেশি ব্যান্ডের অনুষ্ঠান এদেশে হামেশাই হয়। কিছুদিন আগে মুকেশ আম্বানির ছেলের বিয়েতে, রিহানা থেকে জাস্টিন বিবার সকলেই গান শুনিয়ে গিয়েছেন। তবে কোল্ডপ্লে এর আগে ভারতে এসেছিল ৯ বছর আগে। ২০১৬-র সেই অনুষ্ঠানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এবার অবশ্য সেই ভিড়ও ছাপিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। কারণ অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি শুরু হতে না হতেই শেষ হয়েছে। এমনকি টিকিট নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগও উঠেছে। কয়েক হাজার টাকার টিকিট লাখ টাকায় বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তাতেও আপত্তি তোলেননি ভক্তরা। যে কোনও মূল্যেই হাজির থাকতে হবে কনসার্টে। এমনটাই চাইছেন জনপ্রিয় ব্যান্ডের অধিকাংশ শ্রোতা। কিন্তু এই জনপ্রিয়তা একদিনে আসেনি। এমনকি প্রথমে এইভাবে ব্যান্ড তৈরি করে গান গাওয়ার কথাও ভাবেননি কোল্ডপ্লের নির্মাতারা।
নব্বইয়ের দশকে শুরু। তবে শুরুতেই নাম, ‘কোল্ডপ্লে’ ছিল না। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বন্ধু মিলে ঠিক করেন তাঁরা গান গাইবেন। সেই ক্রিস মার্টিন ও জনি বকল্যান্ডের হাত ধরেই কোল্ডপ্লের যাত্রা শুরু। ক্রিস ব্যান্ডের প্রধান গায়ক। জনি গিটার বাজান। প্রথমদিকে দুজনে মিলে গান লিখতেন ও সুর করতেন। নিজেরাই সেই গান সকলকে শোনাতেন। ইতিমধ্যে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বেরিম্যান। তিনজনে মিলে দলের নাম রাখেন ‘স্টারফিস’। মূলত কলেজের অনুষ্ঠানে গান শোনাতেন এঁরা। সবটাই রক মিউজিক। তবে এক্ষেত্রে ড্রামস একান্ত প্রয়োজন। এদিকে ক্রিস ও তাঁর দুই বন্ধুর কেউই ড্রামস বাজাতে জানতেন না। শুরু হয় ড্রামারের খোঁজ। কিছুদিনের মধ্যেই দলে যুক্ত হন উইল চ্যাম্পিয়ন। ড্রামসের দায়িত্ব নেন তিনিই। এই চারজনের দল স্টারফিস নাম নিয়েই মঞ্চ কাঁপাত। প্রথমবার ১৯৯৮ সালে লন্ডনের কামডেন শহরে তাঁরা অনুষ্ঠান করেন। এরপরই অবশ্য নাম বদলে কোল্ডপ্লে রাখা হয়। ধীরে ধীরে অনুষ্ঠানের ডাক আসা শুরু হয়। ব্রিটেনের বাইরেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কোল্ডপ্লে। তবে স্রেফ অনুষ্ঠান করে গোটা দুনিয়ায় পরিচিত হওয়া সম্ভব ছিল না। কের পর এক জনপ্রিয় অ্যালবাম সেই কাজ করে। গোটা বিশ্বে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় কোল্ডপ্লে। শুধু তাই নয়, গ্রামির মতো পুরস্কারও রয়েছে এঁদের ঝুলিতে। এবার সামনে থেকে প্রিয় ব্যান্ডের অনুষ্ঠান দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন এ দেশের ভক্তরাও।