বাঘের দুধ পাওয়া তো দুর্লভ। কিন্তু বাঘের মূত্র পাওয়া তো সুলভ। আর সেই মূত্র নিয়ে রমরমিয়ে ব্যবসা করছেন দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের একটি চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ। জানা যাচ্ছে এই মূত্রতেই আছে নাকি মোক্ষম দাওয়াই। কিন্তু কী সেই দাওয়াই? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাঘের দুধ দুর্লভ। বাঘের মূত্র তো সুলভ। তাহলে তা দিয়ে ব্যবসা হবে না কেন? অতএব বাঘের মূত্রের সূত্রেই নয়া ব্যবসার সূত্র খুঁজে পেয়েছে চিন। একেবারে চিড়িয়াখানা থেকে বোতলবন্দি বাঘের মূত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছেন আগত পর্যটকরা। দাম ভারতীয় মুদ্রায় মোটামুটি ৬০০ টাকা। আর এই চিনে দাওয়াই নাকি একেবারে ব্যথার মোক্ষম ওষুধ।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ সংবাদমাধ্যমের সূত্রে এই খবর প্রথম বিশ্ব জানতে পারে। জানা যাচ্ছে, এক বিশেষ প্রজাতির সাইবেরিয়ান বাঘের মূত্রে আছে ব্যথা সারানোর বিরল গুণ। ফলত, আর্থারাইটিস, মাসল পেন বা অন্যান্য ব্যথার ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা যেতে পারে এমনটাই মনে করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের একটি চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানাটির বেশ সুনাম। সারা পৃথিবীর পর্যটকদের ঘুরে দেখার জায়গা। একজন পর্যটকই প্রথম এর সন্ধান পান। তাঁর সূত্রেই খবর প্রকাশ্যে আসে। বাঘের মূত্রের ব্যথা দূর করার গুণ কাজে লাগিয়ে যে রীতিমতো ব্যবসা শুরু হয়েছে চিনে, তা জেনে অনেকে তাজ্জব হন। অনেকে অবিশ্বাসও করেন। তবে চক্ষু-কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করে সামনে আসে সেই বোতলবন্দি বাঘের মূত্রের ছবি। দেখতে ঠিক ওষুধের বোতলের মতোই। লেবেলে আছে ব্যথা দূর করার প্রতিশ্রুতি। এমনকী তা প্রয়োগের সময় সামান্য হোয়াইট ওয়াইন আর আদা কুচি মিশিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। পান করাও নাকি যেতে পারে, আবার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে যে, তা কখনও সখনও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। অর্থাৎ ওষুধের ক্ষেত্রে যা যা থাকে সব রকম নির্দেশিকাই আছে। এমনটাও জানা যাচ্ছে, চিড়িয়াখানায় গিয়ে অনেকেই এই ব্যথাহরা চিনে দাওয়াই-এর খোঁজ করছেন। কেননা প্রচারের দরুন তা এখন সর্বজনবিদিত।
:আরও শুনুন:
মাটির তলায় রয়েছে গোটা একটা জনপদ! জেনে নিন চিনের এই আশ্চর্য গ্রামের কথা
স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনায় বাঘ সংরক্ষণ বং বন্যপ্রাণের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর আগে নাকি এই চিড়িয়াখান কর্তৃপক্ষ একটি রিয়ালিটি শোয়ে সেলেবদের পুরস্কার হিসাবে দিত বাঘের মূত্র। বক্তব্য সেই একই যে, বাঘের মূত্র ব্যথা দূর করতে পারে। অনেকেই একে টোটকা বা প্রাচীন কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি ভাবছেন। চিনের মতো দেশে এমন প্রাচীন পদ্ধতিতে রোগ সারানোর নানা উপায় আছে। আর সেখানেই বেধেছে গণ্ডগোল। সে-দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষার আগেই বাঘের মূত্রের বিপণন কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এতে বরং চিরায়ত চিকিৎসাপদ্ধতিগুলোকেই খাটো করা হচ্ছে। তা ছাড়া একটি চিড়িয়াখান কর্তৃপক্ষ কোন লাইসেন্সে ওষুধ বিক্রি করছে, সে প্রশ্নও উঠেছে। যদিও চিড়িয়াখানার বক্তব্য, সে অধিকার তাদের আছে। এ ছাড়া মূত্র বিক্রির দরুন বাঘেদের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই তা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এই এতকিছুর পর জনগণের কৌতূহল বেশ তুঙ্গে। কেউ বলছেন, তিনি কিনেছেন তবে ফল কিছু পাননি। এদিকে বাড়িতে বয়স্কদের অনেকের ব্যথার সমস্যা। তাই অনেকেই বলছেন, ট্রাই করে দেখতে অসুবিধা কোথায়? শুধু মূত্র নয় এই কৌতূহলই যেন ব্যবসার পুঁজি। অতএব বাঘের মূত্রের চিনে দাওয়াই বিকোচ্ছে বেশ রমরমিয়েই।