বুড়ো হয় মুড়ো গাছ… ফেলুদার গল্পের সেই ধাঁধাটির কথা নিশ্চয় ভোলেননি। তা আশপাশে তো এমন অনেক বুড়ো গাছই আমরা দেখি। বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে চৌহদ্দিতে ছড়িয়ে থাকা সেসব গাছেদেরকে কেন্দ্র করে ঘুরে বেড়ায় নানান গল্প, উপকথা। তা কয়েকশো বছরের পুরনো গাছেদের এমন গল্প তো অনেক শুনেছি আমরা। তবে এ গাছের বয়স তার চেয়েও ঢের বেশি। কম করে হলেও অন্তত হাজার পাঁচেক বছর ধরে পৃথিবীতে রয়েছে সেই গাছ। কোথায় রয়েছে এই বৃদ্ধতর গাছ? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কবে থেকে যে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই গাছখানা, তার আর হিসেব রাখতে পারেননি স্থানীয়রা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বড় হয়েছে সেই গাছ। আকাশ ছুঁয়েছে তার ডালপালা। আরও মোটা হতে হতে গিয়েছে গুঁড়ি। সেই বয়সের ছাপ পড়েছে গাছের শরীরেও। সেসব বয়সের দাগ সারা শরীরে বহন করেছে সাইপ্রাস গাছটি।
হবে নাই বা কেন! কম করে হলেও পাঁচ হাজার শীত বসন্ত দেখেছে সে। সেই গাছের গুঁড়ির দৈত্যাকার আয়তন অবশ্য তেমন কথাই বলছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা খোঁজ পেয়েছে এমনই একটি সুপ্রাচীন গাছের। কোথায় রয়েছে সে গাছ?
আরও শুনুন: পৃথিবীর শুষ্কতম মরুভূমিতে আঙুর ফলিয়ে তাক লাগালেন বৃদ্ধ
জলবায়ু ও পরিবেশবিজ্ঞানী জোনাথন ব্যারিকভিচ ও তাঁর দল সম্প্রতি দক্ষিণ চিলির একটি অরণ্য এলাকায় খোঁজ পান গাছটির। ক্যালিফর্নিয়ার একটি পাইন গাছকেই এতদিন পৃথিবীর প্রাচীনতম গাছ বলে মনে করা হত। সেই গাছটির বয়স ছিল ৪ হাজার ৮৫৩ বছর। তবে সেই বৃদ্ধ গাছকে অবলীলায় পিছনে ফেলে দিয়েছে এই সুপ্রাচীন সাইপ্রাস গাছটি। সেই পাইন গাছটির তুলনায় বয়সে প্রায় এক হাজার বড় চিলির এই গাছটি।
আরও শুনুন: ভুলে যেতে চান প্রাক্তনের স্মৃতি? অব্যর্থ দাওয়াই মিলবে এই সম্পর্ক ভাঙার মিউজিয়ামে
কম করে হলেও ৫ হাজার ৪৮৪ বছর বয়স তো হবেই সেটির। গাছের গুঁড়ির ছাল পরীক্ষা করার পরে তেমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ওই গুঁড়ির ব্যাসার্ধটিই নাকি চার মিটার চওড়া। এত বছর বেঁচে থাকার পিছনের রহস্যটা আসলে কী, তা অবশ্য খুঁজে বের করতে পারেননি তাঁরা। তবে এই সহস্রাব্দ প্রাচীন গাছটিকে কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় তা নিয়ে বেজায় চিন্তায় বিজ্ঞানীমহল। কারণ অনেক সময়ই গাছের শিকড়গুলি মানুষের পায়ের চাপে আলগা হতে শুরু করে। তার উপর বৃক্ষছেদনের ভয়ও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না তাঁরা। ফলে গাছটি বাঁচাতে সরকারি তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন বিজ্ঞানীমহল।