বিশেষ এক উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত দাড়ি কামাবেন না। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে নিজের সেই কথা পালন করে এসেছেন এক ব্যক্তি। অবশেষে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ার পরেই ক্ষৌরকর্মে রাজি হলেন তিনি। কিন্তু কী সেই উদ্দেশ্য, যার জন্য এমন ভয়ানক পণ করেছিলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অদ্ভুত এক দাবি নিয়ে তিনি পণ করেছিলেন, দাড়ি কাটবেন না। আর সেই প্রতিজ্ঞা বজায় রাখতেই দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ক্ষৌরকর্ম করেননি তিনি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এমনই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ছত্তিশগড়ের এই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: তিন সন্তানকে ডিকিতে বসিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন ব্যক্তি, ক্ষোভে উত্তাল নেটদুনিয়া
মহাভারতে পিতামহ ভীষ্মের প্রতিজ্ঞার কথা সকলেরই জানা। ছত্তিশগড়ের রামশঙ্কর গুপ্তা যেন তাঁরই প্রতিরূপ। দীর্ঘদিন আগে তিনি দাবি তুলেছিলেন ছত্তিশগড় রাজ্যে আরও একটি নতুন জেলার সংযোজন করতে হবে। তিনি চেয়েছিলেন মণীন্দ্রগড় চিমিরি এবং ভরতপুর নামের তিনটি জায়গাকে মিলিয়ে নতুন এক জেলা তৈরি হোক। কিন্তু তিনি ভাবলেই তো আর নতুন জেলা তৈরি হওয়া সম্ভব নয়! তাই তাঁর দাবিকে বিশেষ আমল দেয়নি তৎকালীন সরকার। এদিকে রামশঙ্কর কিন্তু তাঁর দাবিতে অনড় ছিলেন। তাই তিনি প্রতিজ্ঞা করে বসেন, যতদিন না তাঁর দাবি পূরণ হচ্ছে, ততদিন তিনি দাড়ি কাটবেন না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে এসেছে সাফল্য। রাজ্যের বর্তমান সরকার তাঁর দাবিকে মান্যতা দিয়ে নতুন জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে ওই তিনটি জায়গাকে। শুধুমাত্র নতুন জেলার নাম ঘোষণা নয়। ইতিমধ্যেই সেই জেলার উন্নতি কল্পে বেশ কিছু অনুদানের কথা জানিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। যার ফলে শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবহন সব ক্ষেত্রেই উন্নতির মুখ দেখবে এই নতুন জেলাটি। আর এই ঘোষণার পরেই, অর্থাৎ দীর্ঘ ২১ বছর পর দাড়ি কেটে প্রতিজ্ঞাভঙ্গ করেছেন ওই ব্যক্তি। এমনকি নিজে হাতে নতুন জেলার কালেক্টরের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দিয়েছেন। যেখানে প্রথমবারের জন্য এই নতুন জেলা তৈরি করার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও শুনুন: লিখতে বা পড়তে পারেন না, স্রেফ আন্দাজে ভর করেই পরীক্ষায় সেরার শিরোপা পেলেন যুবক
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সাফল্যের হাসি নিয়ে বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রামশঙ্কর। পাশাপাশি নিজের মুখেই স্মৃতিচারণ করেছেন এই দীর্ঘ লড়াইয়ের। জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই নতুন জেলার দাবি নিয়ে সরব হয়েছিলেন রামশঙ্কর। সঙ্গে ছিলেন আরও অনেকে। এত বছরের লড়াইয়ে তাঁদের বেশিরভাগই গত হয়েছেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তে সেই সঙ্গীদের আত্মা এবার শান্তি পাবে বলেই মনে করেন রামশঙ্কর।