বই লিখেছে চ্যাট-জিপিটি। সঙ্গে জুড়েছে ছবিও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আশ্চর্য ক্ষমতা দেখে হতবাক নেটদুনিয়া। কোন বিষয়ে বই লিখল চ্যাটজিপিটি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বিজ্ঞানের এই আধুনিকতম আবিষ্কার যে বিভিন্ন জীবিকার বিকল্প হয়ে উঠেছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু বই লেখার মতো সৃজনশীল কাজ? সেটা কি আর মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভব! আধুনিক বিজ্ঞান বলছে সেটাও সম্ভব। সম্প্রতি এমনটাই করে ফেলেছে এআই বেসড প্ল্যাটফর্ম ‘চ্যাটজিপিটি’।
আরও শুনুন: ‘নির্বোধদের জন্য চাকরি নেই’ শুনে ক্ষুব্ধ সকলে, মজার বিজ্ঞপ্তি দিতে গিয়ে বেকায়দায় সংস্থা
এই মুহূর্তে চ্যাট-জিপিটি নিয়ে হইচই সর্বত্র। নানা কাজে এর পারদর্শিতা নিয়ে চলছে চর্চা। এবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আস্ত একটা বই লেখা সম্ভব হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে। আর শুধু লেখাই নয়। বইয়ের ভিতরে অলংকরণের কাজটিও এর মাধ্যমে করা সম্ভব হচ্ছে। ‘চ্যাটজিপিটি’ ব্যবহার করে এই কাজ করেছেন ব্রেট শিকলার নামে এক ব্যক্তি। তাঁর মতে, এই ব্যবস্থা না থাকলে কোনওদিন বই প্রকাশের কথা ভাবতেও পারতেন না তিনি। আসলে চিঠি পাঠানো হোক কিংবা গবেষণাপত্রের লেখা, যে কোনও কাজেই চ্যাটজিপিটির জুড়ি মেলা ভার। ব্রেট অবশ্য চ্যাট-জিপিটির মাধ্যমে কাজে অভ্যস্তই ছিলেন। তবে তা নেহাত ছোটখাটো কাজ। আস্ত একটা বই লেখার কথা অবশ্য ভাবেননি। আচমকাই ভাবনা আসে, আর ভাবামাত্র শুরু হয়ে যায় কাজ। একটা বই লেখার জন্য যা যা জরুরি, সেই নির্দেশ তিনি দিয়ে দেন চ্যট-জিপিটিকে। ছোটদের বই যেহেতু, সেখানে অলংকরণ থাকলেও ভাল হয়। অতএব দেওয়া হয় সে নির্দেশও। দেখা যায়, ঘণ্টা জকয়েকের মধ্যেই অলংকরণ সমেত একটি ৩০ পাতার বই লিখে ফেলতে পারছে চ্যাট-জিপিটি। বইটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দ্য ওয়াইজ লিটল স্কুইরেল: আ টেল অব সেভিং অ্যান্ড ইনভেস্টিং’। ইতিমধ্যেই সেটির বিক্রি শুরু করেছে এক অনলাইন বিপনন সংস্থা। ব্রেটের মতে, একটি শিক্ষামূলক গল্প লেখা হয়েছে এই বইয়ে।
আরও শুনুন: ছেড়েছেন বড় চাকরি, জীবনযাপন সন্ন্যাসীর মতোই, ‘অঙ্ক স্যার’কে দেখে অবাক নেটদুনিয়া
তবে ব্রেটের এই কাজে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। এই কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে যে কেউ বই লিখে ফেলতে পারবেন। ফলত ‘চ্যাটজিপিটি’-র লেখা এমন কতশত বই যে আমাদের আশপাশে ছড়িয়ে পড়বে তা আঁচ করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে একসময়। আর সে দিন সম্ভবত খুব দূরেও নয়। কেননা এ বিষয়ে প্রযুক্তি আরও উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লেখা জিনিসও যাতে মৌলিক হয়, এমন ব্যবস্থা করারই চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে লেখক-কবিদেরও বিকল্প হয়ে উঠছে এআই, এমনটা বলাই যায়। আর তার ফলে যে মানুষের সৃজনশীল ভাবনাচিন্তা আরও কমে যাবে, ক্রমশ জোরদার হচ্ছে সেই আশঙ্কাই।