দাম্পত্য মানেই সব কাজে দুজনের পার্টনারশিপ। কিন্তু তা বলে দুজনে মিলে মানুষের মাংস খাওয়ায় হাত পাকিয়েছেন, এমন দম্পতির কথা শুনেছেন কি? তাহলে শুনে নেওয়া যাক একাধিক নরহত্যায় অভিযুক্ত এই দম্পতির কাহিনি।
অন্তত ৩০ জনকে খুন করেছিল এই দম্পতি। আর তারপর নাকি খেয়েও ছিল সেই মাংস। না, কোনও আদিম যুগের কথা নয়। মাত্র কয়েক বছর আগেই এমন ঘটনা ঘটায় এক ‘নরখাদক দম্পতি’। যে কাণ্ডের জেরে ২০১৯ সালে কাঠগড়ায় তোলা হয় তাদের। তদন্তকারীদের অনুমান, ১৯৯৯ সাল থেকেই এহেন ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল এই দম্পতি। সকলের চোখে ধুলো দিয়ে এই দীর্ঘ সময় ধরেই নিজেদের পৈশাচিক কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছে ওই দম্পতি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সামান্য একটি মোবাইল ফোনই শেষমেশ ধরিয়ে দেয় অপরাধীদের।
আরও শুনুন: বিয়ে করলেই থাকতে হবে ঘরজামাই! অদ্ভুত শর্তের জেরে বর জুটছে না গ্রামের ৩০০ তরুণীর
রাশিয়ার ক্রাসনোদার এলাকার বাসিন্দা ওই যুগলের নাম দিমিত্রি বকশিভা এবং নাতালিয়া বকশিভা। ডাকাতি এবং গাড়ি চুরির জন্য এমনিতেও পুলিশের খাতায় নাম ছিল দিমিত্রির। এদিকে নাতালিয়া একটি স্থানীয় সেনা স্কুলে কাজ করলেও মদ্যপানের জেরে সেই চাকরি টেকেনি। তবে কবে এবং কীভাবে এই দম্পতি এমন নারকীয় অপরাধের পথে হাঁটতে শুরু করে, সে রহস্য রহস্যই থেকে গিয়েছে। আর এই রহস্যের কোনও আঁচ হয়তো প্রকাশ্যে আসতই না, যদি না নিজের মোবাইল ফোনটিকে হারিয়ে ফেলত দিমিত্রি। ওই ফোনটি হাতে আসে একদল শ্রমিকের। ফোন খুলে তাঁরা দেখেন, এক মহিলার মৃতদেহের সঙ্গে দিমিত্রির ছবি। এর মধ্যে একটি ছবিতে দিমিত্রিকে মৃতদেহের পা মুখে করে ধরে থাকতেও দেখা যায়। আর এই ছবি দেখেই সোজা পুলিশের কাছে ফোনটি জমা করেন তাঁরা। ফোনের সূত্র ধরেই দিমিত্রিরও খোঁজ পায় পুলিশ। যদিও জেরায় প্রাথমিকভাবে খুনের কথা অস্বীকার করে দিমিত্রি। কিন্তু ততদিনে তার ফোন থেকে আরও একাধিক ভয়ংকর ছবি খুঁজে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। যার মধ্যে ১৯৯৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, দিমিত্রি মানবদেহের কাটা মুণ্ড একটি থালায় রেখে ছবি তুলেছে। এইসব ছবির ভিত্তিতেই জোর তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
আরও শুনুন: ৩০০ পুরুষের সঙ্গে ৩০০ ভঙ্গিতে যৌনতার রেকর্ড! পর্ন তারকার যুগ শেষ বলে দাবি করলেন সেই অভিনেত্রীই
ওই দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে পাওয়া যায় নুনজলে হিমায়িত করে রাখা মানবদেহের আলাদা আলাদা টুকরো। পরীক্ষা করে দেখা যায় হিমায়িত করে রাখা এই টুকরোগুলি আলাদা আলাদা মানুষের। অবশেষে পুলিশি জেরার মুখে এই দম্পতি মোট ৩০ জনকে খুন করার কথা স্বীকার করে নেয়। খুনের দায় তো ছিলই, পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, খুনের পর মৃতদেহগুলি রান্না করে খেত ওই দম্পতি। এমনকি নাতালিয়া যে সেনা স্কুলে কাজ করত, সেখানেও সংরক্ষণ করা মানুষের মাংস সরবরাহ করা হত বলে অভিযোগ ওঠে। না জেনেই এই মাংস কিনতেন ক্রেতারা। অবশেষে একটি সামান্য ফোনই ইতি টেনে দিল এই পৈশাচিক চক্রে।