সুখের জন্য টাকা থাকা জরুরি, এমনটা বলে থাকেন অনেকেই। কিন্তু টাকা দিয়েই কি সুখ কিনে ফেলা সম্ভব? কী বলছে গবেষণা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘সুখী কে?’ মহাভারতে বকের এই প্রশ্নের উত্তরে যুধিষ্ঠিরের উত্তর ছিল, যার ঋণ নেই, আর দিনের শেষে যার ঘরে শাক ভাতের জোগান রয়েছে, সে-ই সুখী। কিন্তু যুধিষ্ঠিরের এই কথায় সকলে একমত হবেন কি না, সে প্রশ্ন তো থেকেই যায়। বিশেষ করে সেই প্রাচীন কাল থেকেই তো প্রবাদে রয়েছে ঋণ করে ঘি খাওয়ার কথা। অর্থাৎ সাময়িক সুখের জন্যই ঋণ পর্যন্ত নিতে পিছপা হচ্ছে না কেউ কেউ। এক্ষেত্রে যে সুখের জন্য টাকাকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, তাও কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! কিন্তু তবুও মানুষ বারেবারেই এই প্রশ্ন করে গিয়েছে যে, টাকা দিয়ে কি আদৌ সুখ কেনা সম্ভব? আর সম্প্রতি সে কথারই উত্তর দিল এ বিষয়ের দীর্ঘতম গবেষণা।
আরও শুনুন: ব্রেন ডেথ হলেও কাজে লাগুক নারীর গর্ভ, গবেষকের প্রস্তাবে মিলল কী প্রতিক্রিয়া?
হ্যাঁ, সুখ বিষয়ে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে যে গবেষণাটি চালানো হয়েছে, তার কৃতিত্বের দাবিদার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি। আর এই গবেষণাই সম্প্রতি সব জল্পনা কল্পনা উড়িয়ে সাফ ঘোষণা করেছে যে, না, টাকা দিয়ে আর যাই কেনা যাক না কেন, সুখ কিনে ফেলা সম্ভব নয় কোনও মতেই। অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন রবার্ট ওয়াল্ডিঙ্গার এবং মার্ক স্কালজ। হার্ভার্ড স্টাডি অফ অ্যাডাল্ট ডেভেলপমেন্টের গবেষণা অনুযায়ী প্রকাশিত ‘দ্য গুড লাইফ’ বইটির এই দুই লেখকের মতে, সুখ যদি গন্তব্য হয়, তবে টাকা সেখানে পৌঁছনোর একটা উপায় হতে পারে, কিন্তু টাকা সেই চূড়ান্ত গন্তব্য নয়। টাকা কী দিতে পারে তাহলে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, তা আমাদের সুরক্ষা দিতে পারে, দিতে পারে নিরাপত্তা, এমনকি একটা পর্যায় পর্যন্ত সন্তুষ্টিও এনে দিতে পারে টাকা। পাশাপাশি জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণের বোধও তৈরি করতে পারে। কিন্তু দিনের শেষে দাঁড়িয়ে একের সঙ্গে অপরের সংযোগই হল জীবনের সেই গোপন চাবিকাঠি, যা আমাদের সুখের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। আমাদের সম্পর্কগুলোই আসলে আমাদের সুখী করতে পারে বলে মনে করেন সাইকোলজির অধ্যাপক স্কালজ।
আরও শুনুন: হানিমুন ডেস্টিনেশনেই নাকি ডিভোর্সের হার সবচেয়ে বেশি! কী জানাচ্ছে সমীক্ষা?
আসলে সাফল্য আর সুখ, এই দুইকে এক আসনে বসানো চলে না বলেই মনে করছেন গবেষকেরা। সাফল্যের একরকম সুখ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু সাফল্যই যে সুখের শেষ কথা নয়, একবাক্যে সে কথা মেনে নিয়েছেন গবেষকেরা।