বদলাচ্ছে গোটা বিশ্বের পরিবেশ। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই আমূল বদলাবে সবটা। গরমের চোটে হাঁসফাঁস করতে হবে সবাইকে। এমনকি মনোরম পরিবেশের লোভে যেসব দেশে পর্যটকরা ছুটে যান, সেখানকার চেহারাও বদলাবে। আর কী পরিবর্তনের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছে ইতিমধ্যেই। তবে তা আরও মারাত্মক হতে পারে আগামী কয়েক বছরে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা ২১০০ সালের মধ্যে গোটা বিশ্বের একাধিক পর্যটন কেন্দ্রের পরিবেশ একেবারে বদলে যাবে। সামগ্রিক ভাবে গোটা বিশ্বেই যার প্রভাব পড়বে।
উত্তরোত্তর বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। যেসব দেশে একসময় নামমাত্র গরম পড়ত, সেখানেও এখন সূর্যের তেজ উপেক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যা আগামীদিনে কমবে তো নাই, বরং আরও বাড়বে। এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এই শতাব্দীর শেষদিকে উত্তরের দেশগুলোকে আরও বেশি করে সূর্যের তাপ সহ্য করতে হবে। সেক্ষেত্রে শীতকালের আগে যে মনোরম পরিবেশ দেখা যেত, তা কার্যত উধাও হবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এই নিয়েই এক বিশেষ গবেষণার আয়োজন করেছিল মাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির (Massachusetts Institute of Technology) বিজ্ঞানীরা। মোট ৫০ টি বিশেষ জায়গার জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়েই পরীক্ষা নিরীক্ষা চলেছে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে ২১০০ সালের মধ্যে পুরপুরি বদলাবে এইসব দেশের জলবায়ু। এক্ষেত্রে ‘আউটডোর ডে’ নামে বিশেষ এক পরিভাষার উল্লেখ করেন বিজ্ঞানীরা। যার মানে, ২৪ ঘন্টাই মনোরম পরিবেশ থাকবে এমন কোনও দিন। দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ‘আউটডোর ডে’-র সংখ্যা কমছে। একদিকে রাশিয়া, কানাডা সহ উত্তরের বেশ কিছু দেশে এই আউটডোর ডে-র সংখ্যা বাড়ার ইঙ্গিত মিলছে। অন্যদিকে আইভরি কোস্ট সহ কিছু দেশে এই দিনের সংখ্যা রেকর্ড হারে কমছে। বিশেষত গ্লোবাল সাউথ বা দক্ষিণের দেশগুলোই এই সমস্যা সবথেকে বেশি ভোগ করবে। স্বাভাবিক ভাবেই বদলাবে পর্যটকদের পছন্দও।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা মেক্সিকো, থাইল্যান্ড কিংবা ইজিপ্টের মতো দেশে আউটডোর ডে থেকবে নামমাত্র। তালিকায় ভারতও রয়েছে। আবার আরবের মতো দেশেও কমবে পর্যটকদের সংখ্যা একই কারণে। তবে পর্যটনের কথা বাদ দিলেও, এর ফলে সমস্যায় পড়বেন সেইসব দেশের সাধারণ মানুষ। এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন অনেকে। আগামীদিনে তা বাড়লে সমস্যাও বাড়বে বই কী! বিজ্ঞানীরা এর জন্য বিশেষ এক ব্যবস্থাও করেছেন। তাঁদের ওয়েবসাইটে গেলেই কোন দেশের কী অবস্থা হতে চলেছে সেই তথ্য মিলবে বিস্তারিত ভাবে। কাজেই কেউ চাইলে আগেভাগে জেনে নিতে পারেন, তাঁর এলাকা কতটা সুরক্ষিত। যদিও ভারতের মতো দেশে যে এই সমস্যা রীতিমতো আকার ধারণ করবে তা আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কাজেই, পরিবেশ ভাবনায় এখনও যদি খামতি থাকে তাহলে বিপদ আটকানোর কোনও রাস্তাই খোলা থাকবে না। পর্যটন শিল্প যেমন জৌলুস হারাবে তার থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থা বলে সাধারণ মানুষের। এমনটাই মনে করছে বিজ্ঞান মহল।