২৫ কোটি টাকায় ঠিক কী কী হতে পারে? বাড়ি, গাড়ি, গয়না, বিদেশ ভ্রমণ, সবকিছুই মিলতে পারে এই এতগুলো টাকার বিনিময়ে। কিন্তু এত টাকার বিনিময়ে মিলবে স্রেফ একটা চায়ের কেটলি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এমনই এক চায়ের কেটলির ছবি, যার দাম ২৫ কোটি টাকা। কী এমন বিশেষত্ব ওই কেটলির? আসুন শুনে নিই।
খুব বেশি হলে ৫০০ টাকা। সাধারণ চায়ের কেটলির দাম এর থেকে বেশি হয় না। কী দিয়ে সেই জিনিস তৈরি হচ্ছে, তার ভিত্তিতে দামের ফারাক হতেই পারে। তবে তা কখনই কোটি টাকা নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটাই শোনা গিয়েছে। একটা চায়ের কেটলি যার দাম রাখা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা।
আরও শুনুন: অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন ৩১ বছরে, প্রসব ৯২ বছরে! বিরল ঘটনায় তাজ্জব চিকিৎসকরাও
চায়ের কেটলির ব্যবহার সর্বপ্রথম চালু হয়েছিল চিনে। মূলত পোর্সেলিন দিয়ে সে সময় চায়ের কেটলি তৈরি করত চিনারা। শীঘ্রই তা ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন দেশে। চা খাওয়ার চল শুরু হওয়ার পাশাপাশি বাড়তে শুরু করে চা পানের বিভিন্ন সামগ্রীর কদর। ধীরে ধীরে তা হয়ে ওঠে শৌখিনতার মাপকাঠি। স্রেফ পোর্সেলিন নয়, চায়ের কাপ বা কেটলি তৈরিতে আরও অনেক কিছুর ব্যবহার শুরু হল। এমনকি সোনা রুপো দিয়েও সেসব বানাতে শুরু করলেন কারিগররা। অভিজাত রাজবংশ তো বটেই, বড় বড় ব্যবসায়ীরাও নিজেদের শৌখিনতার প্রমাণ হিসেবে এইসব সংগ্রহে রাখতে শুরু করলেন। এখনও সেই ধারা অটুট। যে কোনও সরকারের উচ্চপদে থাকা কর্তাব্যক্তিদের ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের চায়ের কাপ বা কেটলি দেখা যায়। তবু তার কোনওটারই দাম হয়তো ২৫ কোটি হবে না। ব্যতিক্রম নির্মল শেঠিয়ার উদ্যোগে তৈরি এই আশ্চর্য চায়ের কেটলি। ২০১৬ সালে এই কেটলি তৈরি করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী নির্মলের সংস্থা। সাধ করে তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘দ্য ইগোয়িস্ট’।
কিন্তু এত দাম কেন?
আরও শুনুন: দাম মাত্র ৮৩ টাকা, কোথায় রয়েছে বিশ্বের সবথেকে সস্তা বাড়ি?
অবশ্যই এর মধ্যে থাকা মূল্যবান সব রত্ন। ১৬৫৮ খানা আসল হিরে, ৩৮৬ খানা রুবি সহ বেশ কিছু মূল্যবান রত্ন খোদাই করা হয়েছে এই কেটলির গায়ে। আর ভিতরের অংশ তৈরি হয়েছে সোনা দিয়ে। শুধু তাই নয়। কেটলির হাতলও হাতির দাঁতের তৈরি। তবে এই কেটলিকে সবথেকে বেশি আকর্ষনীয় করে তোলা এর মধ্যে থাকা প্রায় ৬ ক্যারাটের একটা রুবি। যা এতটাই উজ্জ্বল যে দূর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। ইতালির বিখ্যাত স্বর্ণকারের হাতে তৈরি এই চায়ের কেটলি বিশ্ব রেকর্ডের খাতাতেও নাম তুলেছে। জানা যায়, এই কেটলি তৈরি করতে সময় লেগেছে ১৭৩০ ঘণ্টা। তবে এই চায়ের কেটলি মোটেও রোজকার ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়নি। স্রেফ সংগ্রহে রাখার খাতিরেই তৈরি করা হয়েছে এই কেটলি। সেইসঙ্গে এই কেটলি তৈরি করে রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছেন এর নির্মাতা নির্মল শেঠিয়াও। ব্যবসায়ী মহলে এই মূল্যবান কেটলির জেরে বেজায় নামডাক হয়েছে তাঁর। সেইসঙ্গে বিশ্বরেকর্ডের তকমা পেয়ে এই কেটলির মান যেন আরও বেড়েছে।