কথায় আছে, পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়! তবে এক্ষেত্রে ছাগল নয়, খিদের চোটে আস্ত সোনার হার খেয়ে ফেলেছে একটা ষাঁড়। কিন্তু এমনটা হল কীভাবে? আদৌ কী সেই মূল্যবান হার উদ্ধার হল? আসুন শুনে নিই।
সকাল থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বাড়ির গিন্নীর সাধের সোনার হারখানা। গোটা বাড়িতে হুলুস্থুল কান্ড। অবশেষে জানা গেল, সেই হার রয়েছে বাড়ির পোষা ষাঁড়ের পেটে। এমনটা কখনও শুনেছেন? কিন্তু বাস্তবে এমনই কাণ্ড ঘটেছে মহারাষ্ট্রের এক গ্রামে।
আরও শুনুন: অন্য কেরালা স্টোরি! স্নেহের চুম্বনই হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির হাতিয়ার
সিনেমা কেন, এমন ঘটনা গল্পে খুঁজে পাওয়াও কঠিন। গ্রামের দিকে বেশিরভাগ বাড়িতেই গোরু বা ষাঁড় পোষার চল রয়েছে। মহারাষ্ট্রের এই গ্রামও তার ব্যতিক্রম নয়। সেখানকার এক চাষির বাড়িতেই ঘটেছে অদ্ভুত কান্ড। রামহরি নামে ওই চাষির আর্থিক অবস্থা এমনিতে বেশ স্বচ্ছল। তাঁর বাড়িতেই ছিল এক ষাঁড়। বড় যত্ন নিয়ে সেই ষাঁড়কে খাওয়াতেন রামহরির স্ত্রী। এমনই একদিন সাধের ষাঁড়ের জন্য টাটকা শাকপাতা তুলে এনেছিলেন রামহরি। স্ত্রীর দায়িত্ব ছিল সেই শাকপাতা বেছে পরিষ্কার করে রাখা। সেইমতো রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটা থালায় সেসব বেছে রাখছিলেন তিনি। কাজ শেষ করে থালাটি পাশে রেখেই ঘুমিয়ে পড়েন। মাঝরাতে কোনও কারণে ঘুম ভাঙায় খেয়াল করেন, গলায় থাকা সোনার হারটা খুলে রাখতেই ভুলে গিয়েছেন। এমনিতে সারাদিন সেই হার পরে থাকলেও, ঘুমানোর সময় ওমন মোটা হার গলায় থাকলে অস্বস্তি হওয়াই স্বাভাবিক। তাই ঘুমের ঘোরেই সেই হার খুলে পাশে রেখে দেন। আর তখনই খেয়াল না করে সেই শাক বেছে রাখা থালার উপরেই হারটা রাখেন তিনি। কোনওভাবে হারটা পাতার ভাঁজে ঢুকে যায়। ফলে ওপর থেকে ভালো করে না দেখলে বোঝার উপায় ছিল না, ওই থালায় একটা মোটা সোনার হার রয়েছে। ব্যাস, এরপর যা হওয়ার ছিল তাই হল।
আরও শুনুন: দেশের নামবদল বিতর্কের ছাপ রাষ্ট্রসংঘেও! ‘ইন্ডিয়া’ নয়, ‘ভারতের’ নাম নিলেন জয়শঙ্কর
পরদিন খেয়াল না করে সেই থালায় হাজির করা হয় ষাঁড়ের সামনে। সে কী আর এত বোঝে! খিদের চোটে সামনে যা পেয়েছে তাই গলাদ্ধকরণ করেছে ওই ষাঁড়। তাই শাকপাতার ভিতরে থাকা সোনার চেনও অবলীলায় খেয়ে ফেলে ওই অবলা জীব। এদিকে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি গিন্নী তাঁর সাধের হার খুঁজে অস্থির। প্রায় সাড়ে তিন ভরী ওই হারের বাজার মূল্য কমপক্ষে কয়েক লক্ষ টাকা। তা হারিয়ে গেলে তো অস্থির লাগবেই। প্রথমে ভাবা হয়েছিল চুরি হয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর রামহরির স্ত্রী নিজেরই মনে পড়ে রাতের ঘটনা। তিনি যে ঘুমের ঘোরে সেই হার খুলেছিলেন সে কথা মনে ছিল। দুয়ে দুয়ে চার করতে সময় লাগেনি। সকলেই বুঝতে পারেন ওই হার তাঁদের সাধের ষাঁড়ের পেটেই রয়েছে। তক্ষনি ডাক পড়ে পশু চিকিৎসকের। তিনি এসে পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন, ষাঁড়ের পেটে কোনও ধাতব কিছু রয়েছে। কিন্তু তা বার হবে কী করে? অগত্যা ষাঁড়কে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে রীতিমতো অপারেশন করে সেই সোনার হার বের করা হয়। যদিও এতে ষাঁড়টির কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে এই ঘটনায় রীতিমতো অবাক এলাকাবাসী। একইসঙ্গে হার ফিরে পাওয়া সত্ত্বেও ঘটনা ভুলতে পারছেন না রমহরি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।