হালকা জ্বর আর গলা ব্যথায় ভুগছে শিশু। আর তারই ওষুধ কিনা আইসক্রিম আর ভিডিও গেমস। আর এহেন ওষুধ প্রেসক্রাইব করে সাধের চাকরিটাই খোয়ালেন এক চিকিৎসক। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
ভিডিও গেমস খেলতে কোন বাচ্চা না ভালোবাসে? সঙ্গে যদি যোগ হয় চকোলেট আইসক্রিম, তাহলে তো পোয়াবারো। কিন্তু এর কোনোটিই যে অতিরিক্ত ভাল নয়, সে কথা বলে থাকেন যে কোনও শিশুচিকিৎসকই। তবে এই ডাক্তার হেঁটেছিলেন উলটো পথে। একটি শিশুকে তিনি নিজেই বলেছিলেন আইসক্রিম খেতে, সঙ্গে ভিডিও গেম খেলতেও। আর এহেন প্রেসক্রিপশনের জেরেই নিজের চাকরিটি খুইয়েছেন তিনি। কৌতূহল হচ্ছে তো? নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে, আসল ঘটনাটা কী? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: স্কুল তো নয় যেন জেলখানা! ৩৪ লাখের বিনিময়ে স্কুলবাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন পড়ুয়াদের
ঘটনাটি ব্রাজিলের। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন সে দেশের ওসাকো শহরের বাসিন্দা বছর ৩৭-এর প্রিসিলা দা সিলভা রামোস। সম্প্রতি তাঁর ৯ বছরের ছেলেটি সামান্য জ্বর ও গলাব্যথায় ভুগছিল। চিকিৎসার জন্য প্রিসিলা তাকে নিয়ে যান রাজ্য সরকার পরিচালিত একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে। কিন্তু তাঁর দাবি যে সেখানকার একজন চিকিৎসক অত্যন্ত অপেশাদারিত্বের নজির দেখিয়েছেন। তাঁর ছেলের যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা তো দূরের কথা, ওই ডাক্তার তাঁর ছেলেকে রীতিমতো অবহেলা করেছেন বলেই অভিযোগ মহিলার। যার ফলস্বরূপ প্রেসক্রিপশনে কয়েকটি ওষুধ লেখার পাশাপাশি শিশুটিকে চকোলেট আইসক্রিম খাওয়া ও ভিডিও গেমস খেলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মহিলার দাবি, তাঁর ছেলে চকলেট আইসক্রিম খেতে ভালোবাসে এ কথা আগেই জেনে নিয়েছিলেন চিকিৎসক। ভিডিও গেমের ক্ষেত্রেও একই কথা। ওই শিশুর সবথেকে পছন্দের গেম ফ্রি ফায়ার রোজ খেলার নিদান দিয়েছেন তিনি। আর এতেই বেজায় চটেছেন মহিলা। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি এই ভিডিও গেম আর আইসক্রিমের ব্যাপারে কিছুই জানতে পারতেন না, যদি না তার বোন প্রেসক্রিপশনের নিচে এই অদ্ভুত নিদান না দেখতেন। তা দেখা মাত্রই দুই বোন সিদ্ধান্ত নেন এই ঘটনার কথা সবাইকে জানাবেন। সেই উদ্দেশেই তাঁরা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা নেটদুনিয়া জুড়েই। যদিও নেটনাগরিকদের থেকে এ বিষয়ে বেশ মিশ্র প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গেছে। কেউ কেউ চিকিৎসকের এহেন পরামর্শ দেখে অবাক, বিরক্তও; আবার অনেকের মতে ওই শিশুটিকে খুশি করতেই ডাক্তারবাবু আইসক্রিম আর ভিডিও গেমসের কথা লিখেছেন। এ বিষয়ে হেন্ডারসন ফার্স্ট নামের এক উকিলের বক্তব্য, অনেক সময়ই অনেক ডাক্তার তাঁর রোগীর সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে এরকমটা করে থাকেন। কিন্তু এহেন কাজের নেপথ্যে ওই চিকিৎসকের যে ভাবনাই থাকুক না কেন, এই ঘটনার জেরে Brazilian public health network-এর তরফ থেকে তাঁকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে। আর সরকারের সেই সিদ্ধান্ত শুনে খুশি হয়েছেন অভিযোগকারিণী মহিলাও।